২৮ জুলাই ২০২৫, সোমবার, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পার্থ যা করেছে আমরা তাতে লজ্জিত, তবে তৃণমূল করা মানেই সবাই চোর নন: ফিরহাদ হাকিম  

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১০ অগাস্ট ২০২২, বুধবার
  • / 38

পুবের কলম প্রতিবেদক: পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতারি নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বুধবার তিনি বলেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায় অপরাধ করেছে মানে আমরা সবাই চোর এমনটা নয়’।

স্বাভাবিকভাবেই কলকাতার মেয়রের এই মন্তব্য শোরগোল ফেলে দিয়েছে বঙ্গ রাজনীতিতে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, যে তাহলে কি তৃণমূল কংগ্রেস মেনে নিচ্ছে, যে শিক্ষক নিয়োগ মামলায় জড়িত পার্থ চট্টোপাধ্যায়? অনৈতিকভাবে চাকরি দিয়ে তিনি অপরাধ করেছেন? শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এখনও তদন্ত করছে দুটি কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই ও ইডি। সেই মামলার তদন্তে গ্রেফতার হয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। অর্পিতার দুটি ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। মিলেছে কয়েক কোটি টাকার সোনার গয়না, সম্পত্তি-সহ আরও অনেক নথি। সেই নথিতে কোথাও মালিক হিসেবে রয়েছে অর্পিতার নাম। আবার কোথাও পার্থ-অর্পিতার যৌথ মালিকানা বলে উল্লেখ রয়েছে ।

আরও পড়ুন: ঐক্যবদ্ধ মানুষই রুখে দেবে শত্রুর চক্রান্ত, সেনার প্রতি সংহতি মিছিলে বললেন ফিরহাদ

এই পরিস্থিতি পার্থকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তাঁকে দলের সব থেকে সরানোর ঘোষণা করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করে ফের সক্রিয়ভাবে তৃণমূলে ফিরতে পারবেন পার্থ। ফলে বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক আদৌ দোষী নাকি নির্দোষ, তা আদালতে বিচার সাপেক্ষ বিষয়। তাই তার আগে কী করে ফিরহাদ এমন মন্তব্য করলেন, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।

আরও পড়ুন: চাকরিহারাদের আন্দোলনকে ‘নাটক’ কটাক্ষ ফিরহাদ হাকিমের

এদিন বিধানসভায় তৃণমূলের তরফে ফিরহাদ হাকিম, ব্রাত্য বসু-সহ বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট নেতা সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে তৃণমূল নেতাদের সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে মামলা নিয়ে তাঁরা কথা বলেন। এই নিয়ে একতরফাভাবে তৃণমূলকে জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও তাঁরা অভিযোগ করেন। আর এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই পার্থর প্রসঙ্গ টানেন পৌর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায় অপরাধ করেছে মানে আমরা সবাই চোর এমনটা নয়। পার্থ চট্টোপাধ্যায় যা করেছেন, তাঁকে আমরা সমর্থন করি না। কিন্তু এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে যেভাবে আমাদের বদনাম করার চেষ্টা হচ্ছে, তা মেনে নেওয়া যায় না।’

আরও পড়ুন: আন্দোলন না করে স্কুলে ফিরুন চাকরি হারা শিক্ষকরা, আর্জি ফিরহাদের

এখানেই না থেমে তিনি আরও বলেন, উপার্জন করা বা উপার্জন বৃদ্ধি করা কোনও অপরাধ নয়। পার্থ চট্টোপাধ্যায় কিছু করেছে মানে বাকি সকলেই চোর, সকলকে একতালিকায় ফেলে দেওয়া হচ্ছে,এটা মেনে নিতে পারছি না ।’

এর পর তাঁর সংযোজন, আমি লজ্জিত পার্থ চট্টোপাধ্যায় যা করেছেন, তা নিয়ে। আমি এই পার্থ চ্যাটার্জিকে চিনতাম না। এই আচরণ তৃণমূল কংগ্রেস কখনোই সমর্থন করে না, সেই কথা আমরা বারবার বলেছি। অর্থাৎ এর অর্থ এই নয় তৃণমূল কংগ্রেস করা মানে সবাই চোর হয়ে গেলাম।’

এই নিয়ে সিপিএম নেতা সূর্যকান্ত মিশ্রর বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন তিনি। বলেন, ‘আমি সূর্যকান্তবাবুকে বলি, আপনি অনেকগুলো কথা বললেন আমাদের সম্বন্ধে। সুযোগ পেয়েছেন সবাই অপমান করছেন। রোজগার করাটা কোনও অন্যায় নয়। রোজগার বাড়ানো বা সম্পত্তি কেনাটা অন্যায় নয়। অমিত শাহ ছেলে জয় শাহ এবং নিতিন গডকরির মতো অনেকেই আছেন, যাঁরা কারবার করছেন, সম্পত্তি কিনেছেন। তা নিয়ে আমাদের কোনও বক্তব্য নেই। প্রধানমন্ত্রীর নিজের আয় বেড়েছে। আজ আমরা কাগজে দেখেছি। কিন্তু এটাকে নিয়ে নোংরামি করা মেনে নেওয়া যায় না।’

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

পার্থ যা করেছে আমরা তাতে লজ্জিত, তবে তৃণমূল করা মানেই সবাই চোর নন: ফিরহাদ হাকিম  

আপডেট : ১০ অগাস্ট ২০২২, বুধবার

পুবের কলম প্রতিবেদক: পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতারি নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বুধবার তিনি বলেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায় অপরাধ করেছে মানে আমরা সবাই চোর এমনটা নয়’।

স্বাভাবিকভাবেই কলকাতার মেয়রের এই মন্তব্য শোরগোল ফেলে দিয়েছে বঙ্গ রাজনীতিতে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, যে তাহলে কি তৃণমূল কংগ্রেস মেনে নিচ্ছে, যে শিক্ষক নিয়োগ মামলায় জড়িত পার্থ চট্টোপাধ্যায়? অনৈতিকভাবে চাকরি দিয়ে তিনি অপরাধ করেছেন? শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এখনও তদন্ত করছে দুটি কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই ও ইডি। সেই মামলার তদন্তে গ্রেফতার হয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। অর্পিতার দুটি ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। মিলেছে কয়েক কোটি টাকার সোনার গয়না, সম্পত্তি-সহ আরও অনেক নথি। সেই নথিতে কোথাও মালিক হিসেবে রয়েছে অর্পিতার নাম। আবার কোথাও পার্থ-অর্পিতার যৌথ মালিকানা বলে উল্লেখ রয়েছে ।

আরও পড়ুন: ঐক্যবদ্ধ মানুষই রুখে দেবে শত্রুর চক্রান্ত, সেনার প্রতি সংহতি মিছিলে বললেন ফিরহাদ

এই পরিস্থিতি পার্থকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তাঁকে দলের সব থেকে সরানোর ঘোষণা করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করে ফের সক্রিয়ভাবে তৃণমূলে ফিরতে পারবেন পার্থ। ফলে বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক আদৌ দোষী নাকি নির্দোষ, তা আদালতে বিচার সাপেক্ষ বিষয়। তাই তার আগে কী করে ফিরহাদ এমন মন্তব্য করলেন, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।

আরও পড়ুন: চাকরিহারাদের আন্দোলনকে ‘নাটক’ কটাক্ষ ফিরহাদ হাকিমের

এদিন বিধানসভায় তৃণমূলের তরফে ফিরহাদ হাকিম, ব্রাত্য বসু-সহ বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট নেতা সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে তৃণমূল নেতাদের সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে মামলা নিয়ে তাঁরা কথা বলেন। এই নিয়ে একতরফাভাবে তৃণমূলকে জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও তাঁরা অভিযোগ করেন। আর এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই পার্থর প্রসঙ্গ টানেন পৌর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায় অপরাধ করেছে মানে আমরা সবাই চোর এমনটা নয়। পার্থ চট্টোপাধ্যায় যা করেছেন, তাঁকে আমরা সমর্থন করি না। কিন্তু এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে যেভাবে আমাদের বদনাম করার চেষ্টা হচ্ছে, তা মেনে নেওয়া যায় না।’

আরও পড়ুন: আন্দোলন না করে স্কুলে ফিরুন চাকরি হারা শিক্ষকরা, আর্জি ফিরহাদের

এখানেই না থেমে তিনি আরও বলেন, উপার্জন করা বা উপার্জন বৃদ্ধি করা কোনও অপরাধ নয়। পার্থ চট্টোপাধ্যায় কিছু করেছে মানে বাকি সকলেই চোর, সকলকে একতালিকায় ফেলে দেওয়া হচ্ছে,এটা মেনে নিতে পারছি না ।’

এর পর তাঁর সংযোজন, আমি লজ্জিত পার্থ চট্টোপাধ্যায় যা করেছেন, তা নিয়ে। আমি এই পার্থ চ্যাটার্জিকে চিনতাম না। এই আচরণ তৃণমূল কংগ্রেস কখনোই সমর্থন করে না, সেই কথা আমরা বারবার বলেছি। অর্থাৎ এর অর্থ এই নয় তৃণমূল কংগ্রেস করা মানে সবাই চোর হয়ে গেলাম।’

এই নিয়ে সিপিএম নেতা সূর্যকান্ত মিশ্রর বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন তিনি। বলেন, ‘আমি সূর্যকান্তবাবুকে বলি, আপনি অনেকগুলো কথা বললেন আমাদের সম্বন্ধে। সুযোগ পেয়েছেন সবাই অপমান করছেন। রোজগার করাটা কোনও অন্যায় নয়। রোজগার বাড়ানো বা সম্পত্তি কেনাটা অন্যায় নয়। অমিত শাহ ছেলে জয় শাহ এবং নিতিন গডকরির মতো অনেকেই আছেন, যাঁরা কারবার করছেন, সম্পত্তি কিনেছেন। তা নিয়ে আমাদের কোনও বক্তব্য নেই। প্রধানমন্ত্রীর নিজের আয় বেড়েছে। আজ আমরা কাগজে দেখেছি। কিন্তু এটাকে নিয়ে নোংরামি করা মেনে নেওয়া যায় না।’