২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, বুধবার, ৮ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাফিলতি দেখলে যত বড় পদেই থাকুন রেহাই নেই : সুপ্রিম কোর্ট

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: রাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যপালেরা তাঁদের সংবিধানস্বীকৃত অধিকার বলে সংসদ বা বিধানসভায় পাশ হওয়া বিলে সম্মতি দিতে কতকাল দেরি করতে পারে, এই প্রশ্নে ১০ দিনের শুনানির শেষ দিনে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি গাভাই রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, কোনও সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তি তাঁর কর্তব্যে গাফিলতি করলে, তিনি যত বড় পদেই থাকুন না কেন শীর্ষ আদালত হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না। আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিতে দ্বিধা করব না। কারণ আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নন। আমি ক্ষমতার বিভাজনে বিশ্বাস করি।

 

আরও পড়ুন: আরজি কর: চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের মামলা কলকাতা হাইকোর্টে স্থানান্তর করল সুপ্রিম কোর্ট

আমি এটাও মানি যে বিচারবিভাগীয় অতিসক্রিয়তা বিচারবিভাগীয় সন্ত্রাস হতে পারে না। কিন্তু গণতন্ত্রের কোনও শাখা তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে বিচারবিভাগ, যারা সংবিধানের অভিভাবক স্বরূপ, কি হাত গুটিয়ে বসে থাকবে? সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে এই প্রশ্ন করেন প্রধান বিচারপতি।

আরও পড়ুন: উমর খালিদদের জামিন মামলার রায় স্থগিত রাখলো সুপ্রিম কোর্ট

 

আরও পড়ুন: বিহারে SIR ব্যর্থ! ভোটার তালিকায় রয়ে গেছে ৫ লক্ষ ভুয়ো নাম, সুপ্রিমকোর্টে অভিযোগ

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মহাদেবন তামিলনাড়ু সরকারের মামলায় রাজ্যপালদের যে ৩ মাসের সীমা বেঁধে দিয়েছেন বিলে সম্মতি দেওয়ার ক্ষেত্রে তাতেই কেন্দ্র বিপাকে পড়েছে। এরপরই রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সুপ্রিম কোর্টে জানতে চান যে কতদিন তিনি এবং রাজ্যপালেরা বিল আটকে রাখতে পারেন।

 

কারণ সংবিধানে এই নিয়ে কিছু বলা নেই। সংবিধান প্রণেতারা ভাবতে পারেননি যে, বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল রাজ্যপালরা আটকে রেখে কখনও রাজনীতি করতে পারেন। সলিসিটর জেনারেল এই প্রসঙ্গে বলেছিলেন, প্রত্যেক বিলের পৃথক প্রেক্ষাপট থাকে। কিছু বিল নিয়ে রাজ্যপালদের আইনজ্ঞদের মত নিতে হয়। অনেকসময় জনতার চাপে রাজ্য সরকার অনেক বিল পাশ করতে বাধ্য হয়।

 

সেক্ষেত্রে কী হবে? তাই রাজ্যপালদের বিল পাশের নির্দ্দিষ্ট সময় বেঁধে দিলে তখন সমস্যা হবে। আদালত রাজ্যপালদের কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। তখন বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, হ্যাঁ আমরা কোনও রাজ্যপালকে বলতে পারি না যে এইভাবে সিদ্ধান্ত নিন।

 

কিন্তু আমরা রাজ্যপালকে বলতে পারি যে, সিদ্ধান্ত নিন, সিদ্ধান্ত না নিয়ে কোনও বিষয় ঝুলিয়ে রাখবেন না। মেহতা বলেন, গত ৫০ বছরের ইতিহাস বলছে, রাজ্যপালরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মোটামুটি এক মাসের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

 

প্রধান বিচারপতি বলেন, সংবিধান প্রণেতারা ভেবেছিলেন, রাজ্যপালরা সরকারের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করবেন। রাজ্যপাল নিয়োগের সময় সংশ্লিষ্ট সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করা হবে। মেহতা বলেন, দিল্লিতে আপ সরকার আসার আগে পর্যন্ত নাকি তেমনই সম্পর্ক ছিল।

 

অ্যাটর্নি জেনারেল বেঙ্কটরামানি বলেন, রাজ্যপাল কবে সম্মতি দেবেন তা তাঁদের হাতেই ছেড়ে দেওয়া উচিত। তখন প্রধান বিচারপতি গাভাই বলেন, রাজ্যপাল কোনও বিল বিধানসভায় ফেরত পাঠাতেই পারেন, সরকারকে জানিয়ে সময় নিতেই পারেন। কিন্তু সরকারকে পুরো অন্ধকারে রেখে মাসের পর মাস যখন বিল ফেলে রাখে তখনই প্রশ্ন ওঠে, এটা করার অধিকার রয়েছে তাঁদের?

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.
সর্বধিক পাঠিত

গ্যাংস্টার দুবের জীবনী নিয়ে ওয়েব সিরিজ, ‘সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন’ হওয়ার আশঙ্কায় হাইকোর্টে স্ত্রী

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

গাফিলতি দেখলে যত বড় পদেই থাকুন রেহাই নেই : সুপ্রিম কোর্ট

আপডেট : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: রাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যপালেরা তাঁদের সংবিধানস্বীকৃত অধিকার বলে সংসদ বা বিধানসভায় পাশ হওয়া বিলে সম্মতি দিতে কতকাল দেরি করতে পারে, এই প্রশ্নে ১০ দিনের শুনানির শেষ দিনে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি গাভাই রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, কোনও সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তি তাঁর কর্তব্যে গাফিলতি করলে, তিনি যত বড় পদেই থাকুন না কেন শীর্ষ আদালত হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না। আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিতে দ্বিধা করব না। কারণ আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নন। আমি ক্ষমতার বিভাজনে বিশ্বাস করি।

 

আরও পড়ুন: আরজি কর: চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের মামলা কলকাতা হাইকোর্টে স্থানান্তর করল সুপ্রিম কোর্ট

আমি এটাও মানি যে বিচারবিভাগীয় অতিসক্রিয়তা বিচারবিভাগীয় সন্ত্রাস হতে পারে না। কিন্তু গণতন্ত্রের কোনও শাখা তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে বিচারবিভাগ, যারা সংবিধানের অভিভাবক স্বরূপ, কি হাত গুটিয়ে বসে থাকবে? সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে এই প্রশ্ন করেন প্রধান বিচারপতি।

আরও পড়ুন: উমর খালিদদের জামিন মামলার রায় স্থগিত রাখলো সুপ্রিম কোর্ট

 

আরও পড়ুন: বিহারে SIR ব্যর্থ! ভোটার তালিকায় রয়ে গেছে ৫ লক্ষ ভুয়ো নাম, সুপ্রিমকোর্টে অভিযোগ

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মহাদেবন তামিলনাড়ু সরকারের মামলায় রাজ্যপালদের যে ৩ মাসের সীমা বেঁধে দিয়েছেন বিলে সম্মতি দেওয়ার ক্ষেত্রে তাতেই কেন্দ্র বিপাকে পড়েছে। এরপরই রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সুপ্রিম কোর্টে জানতে চান যে কতদিন তিনি এবং রাজ্যপালেরা বিল আটকে রাখতে পারেন।

 

কারণ সংবিধানে এই নিয়ে কিছু বলা নেই। সংবিধান প্রণেতারা ভাবতে পারেননি যে, বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল রাজ্যপালরা আটকে রেখে কখনও রাজনীতি করতে পারেন। সলিসিটর জেনারেল এই প্রসঙ্গে বলেছিলেন, প্রত্যেক বিলের পৃথক প্রেক্ষাপট থাকে। কিছু বিল নিয়ে রাজ্যপালদের আইনজ্ঞদের মত নিতে হয়। অনেকসময় জনতার চাপে রাজ্য সরকার অনেক বিল পাশ করতে বাধ্য হয়।

 

সেক্ষেত্রে কী হবে? তাই রাজ্যপালদের বিল পাশের নির্দ্দিষ্ট সময় বেঁধে দিলে তখন সমস্যা হবে। আদালত রাজ্যপালদের কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। তখন বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, হ্যাঁ আমরা কোনও রাজ্যপালকে বলতে পারি না যে এইভাবে সিদ্ধান্ত নিন।

 

কিন্তু আমরা রাজ্যপালকে বলতে পারি যে, সিদ্ধান্ত নিন, সিদ্ধান্ত না নিয়ে কোনও বিষয় ঝুলিয়ে রাখবেন না। মেহতা বলেন, গত ৫০ বছরের ইতিহাস বলছে, রাজ্যপালরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মোটামুটি এক মাসের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

 

প্রধান বিচারপতি বলেন, সংবিধান প্রণেতারা ভেবেছিলেন, রাজ্যপালরা সরকারের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করবেন। রাজ্যপাল নিয়োগের সময় সংশ্লিষ্ট সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করা হবে। মেহতা বলেন, দিল্লিতে আপ সরকার আসার আগে পর্যন্ত নাকি তেমনই সম্পর্ক ছিল।

 

অ্যাটর্নি জেনারেল বেঙ্কটরামানি বলেন, রাজ্যপাল কবে সম্মতি দেবেন তা তাঁদের হাতেই ছেড়ে দেওয়া উচিত। তখন প্রধান বিচারপতি গাভাই বলেন, রাজ্যপাল কোনও বিল বিধানসভায় ফেরত পাঠাতেই পারেন, সরকারকে জানিয়ে সময় নিতেই পারেন। কিন্তু সরকারকে পুরো অন্ধকারে রেখে মাসের পর মাস যখন বিল ফেলে রাখে তখনই প্রশ্ন ওঠে, এটা করার অধিকার রয়েছে তাঁদের?