সুদানের গৃহযুদ্ধে দেশ ছেড়েছেন ৪০ লাখের বেশি মানুষ
- আপডেট : ৪ জুন ২০২৫, বুধবার
- / 47
পুবের কলম, ওয়েব ডেস্ক: সুদানে চলমান গৃহযুদ্ধের ফলে দেশটি থেকে পালিয়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা ৪০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা। মঙ্গলবার জেনেভায় এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে সংস্থাটি এই তথ্য জানায়।
জাতিসংঘের মুখপাত্র ইউজিন বিয়ুন বলেন, ‘এটি এখন বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ বাস্তুচ্যুতির সংকট। তৃতীয় বছরে পা দেওয়া এই সংঘাত ৪০ লাখ মানুষের দেশত্যাগের মাধ্যমে এক ভয়াবহ মাইলফলকে পৌঁছেছে।’ তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, সংঘাত অব্যাহত থাকলে আরও হাজার হাজার মানুষ দেশ ছাড়তে বাধ্য হবে, যা শুধু আঞ্চলিক নয়, বরং বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার ওপরও প্রভাব ফেলবে।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া সংঘাতের জেরে বহু পরিবার সুদানের সীমান্ত পেরিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে পার্শ্ববর্তী চাদ, দক্ষিণ সুদান, মিশর, ইরিত্রিয়া, ইথিওপিয়া, লিবিয়া ও মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে। এদের মধ্যে ৮ লাখের বেশি মানুষ চাদে আশ্রয় নিয়েছে, যেখানে আশ্রয় শিবিরগুলো তীব্র অর্থসংকটে ভুগছে। বর্তমানে সহায়তা চাহিদার মাত্র ১৪ শতাংশ অর্থ মেটানো সম্ভব হয়েছে বলে জানান জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার কর্মকর্তা ডসু প্যাট্রিস আহুয়ানসু। তিনি বলেন, ‘এই সংকট শুধুই সংখ্যা নয়, এটি এক মানবিক বিপর্যয়। শরণার্থীদের কাছ থেকে আমরা যে সহিংসতার বিবরণ পাচ্ছি, তা অত্যন্ত ভয়াবহ।’
তিনি জানান, চাদের এক শিবিরে সাত বছর বয়সি এক মেয়ে শিশুর সঙ্গে দেখা হয়েছিল তাঁর, যে সুদানের জামজাম শরণার্থী ক্যাম্পে এক হামলায় পা হারিয়েছে। ওই হামলায় তার বাবা ও দুই ভাই নিহত হন। মায়ের মৃত্যু হয় আরও আগেই, আর সেই ছোট্ট মেয়েটি বাধ্য হয় নিজের প্রাণ বাঁচিয়ে পালাতে।
অন্যান্য শরণার্থীরা জানিয়েছেন, সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো তাদের ঘোড়া ও গাধা ছিনিয়ে নেয়। পরে তারা পরিবারের মৃতদেহ কিংবা আহত সদস্যদের টেনে নেওয়ার জন্য সেইসব যান নিজেরাই টানতে বাধ্য হন।
জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন, এই মানবিক সংকট মোকাবিলায় জরুরি আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রয়োজন। সাহায্যের ঘাটতি যত বাড়ছে, শরণার্থীদের দুর্দশা ততই ভয়াবহ হয়ে উঠছে।