১৯ অক্টোবর ২০২৫, রবিবার, ১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৪০ লক্ষ কর্মসংস্থান

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২২, শুক্রবার
  • / 188

পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে গেল চলতি বছরের বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। করোনার কারণে যেখানে বিশ্বজুড়ে অর্থনীতিতে ধস নেমেছে, তাতে কত টাকার বিনিয়োগ আসবে তা নিয়ে কিছুটা হলেও চিন্তায় ছিল রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ মহল। কিন্তু তৃণমূল জমানায় বদলে যাওয়া বাংলায় বিনিয়োগের ঢালি নিয়ে হাজির হয়েছেন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। দু’দিনের বাণিজ্য সম্মেলনে ৩ লক্ষ ৪২ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে। ১৩৭ টি মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে। বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন শুরু হওয়ার পরে এই প্রথম রেকর্ড পরিমাণ বিনিয়োগের প্রস্তাব এল। আর দেশি-বিদেশি শিল্পপতিদের বিনিয়োগ আগ্রহে এতটাই উদ্বেলিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে আত্মপ্রত্যয়ী কণ্ঠে ঘোষণা করলেন, ‘আগামী ১০ বছর বাংলা শিল্পের ক্ষেত্রে অন্যান্য রাজ্যগুলির ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাবে।’ সেই সঙ্গে বৃহস্পতিবার সম্মেলনের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘আগামী বছর ১ থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি বসবে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন।’

বুধবার সম্মেলনের সূচনা লগ্নে যেভাবে গৌতম আদানি, নিরঞ্জন হীরানন্দানির মতো দেশের প্রথম সারির শিল্পপতিরা বাংলায় বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশের ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন, তাতেই ইঙ্গিত মিলেছিল বিনিয়োগের জোয়ার আসতে চলেছে। এদিন সম্মেলনের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এবারের বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন সবচেয়ে সফল সম্মেলন। গত দুদিনে ৩ লক্ষ ৪২ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে। বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে ১৩৭টি মউ স্বাক্ষর করেছে রাজ্য সরকার। বিশাল অঙ্কের বিনিয়োগ প্রস্তাব কার্যকরী হলে ৪০ লক্ষ বেকারের কর্মসংস্থান হবে। এখনও পর্যন্ত বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে ১২ লক্ষ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ এসেছে। বেশ কিছু প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। কিছু কিছু প্রকল্পের কাজ এখনও চলছে। শুধু বানতলায় চর্মশিল্প ক্ষেত্রেই ১০ লক্ষের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।’

আরও পড়ুন: হাইকোর্টের বড় নির্দেশ: চাকরিহারা গ্রুপ C ও D কর্মীদের আর মিলবে না ভাতা

৪০ লক্ষ কর্মসংস্থান
করোনার কালবেলায় যখন বিশ্ব অর্থনীতি ধস্ত হয়ে পড়েছে, সেখানে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে কতটা সাড়া মিলবে তা নিয়ে যে অনেকের সংশয় ছিল, তা উল্লেখ করে মমতা বলেন, ‘অনেকেই বলেছিলেন, এখন শিল্প সম্মেলন করবেন না। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের শিল্পদ্যোগীরা বিনিয়োগ করতে চাইবেন না। কিন্তু আমি বলেছিলাম চলুন না করে দেখি। মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়াতে হবে। অনেক প্রতিকুলতার মধ্যেও সফলভাবে সম্মেলন করতে পেরেছি। করোনা যোদ্ধাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।’ বাংলাকে ফের শিল্পে দেশের মধ্যে শীর্ষে নিয়ে যাওয়াই যে তাঁর লক্ষ্য তা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শিল্পের জন্য রাজ্য সরকার সবরকমের সাহায্য করতে প্রস্তুত। বাংলার লক্ষ্য শিল্প। আগামী ১০ বছরে আমরা যেন এমন জায়গায় পৌঁছতে পারি, যেখানে অন্য রাজ্যগুলি আর আমাদের ছুঁতেও না পারে।’ রাজ্যকে আরও শিল্পবান্ধব করতে উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গে একাধিক রফতানি হাব তৈরি করারও ঘোষণা করেছেন তিনি। অন্ডাল ও বাগডোগরায় দুটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর গড়ে তোলারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: আল্লাহ চাইলে শীঘ্রই পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা পাবে কাশ্মীর, আশাবাদী ফারুক আবদুল্লাহ 

বিরোধী শিবির ও বিজেপি পন্থী সংবাদমাধ্যম লাগাতার রাজ্যের ভাবমূর্তি কলুষিত করার চেষ্টা চালালেও বাংলায় যে আইনের শাসন ও স্থিতিশীলতা রয়েছে তার উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলায় বর্তমানে স্থিতিশীলতা রয়েছে। চিন্তার কোনও কারণ নেই। বিপর্যয় আসে-যায়। উন্নয়নের কাজ চালিয়ে যেতে হবে। এমন মহামারী আসতেই পারে। বাংলা রাস্তা দেখিয়েছে। এবার বাকিরাও করবে। এটা শিল্পের উৎসব। আমরা ধর্মীয় উৎসব করি। এবার শিল্পের উৎসব পালন করছি।’

আরও পড়ুন: Jadavpur University: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীর রহস্যমৃত্যু!

৪০ লক্ষ কর্মসংস্থান
প্রতীকী ছবি

বিজেপি শাসিত বিভিন্ন রাজ্যে একটি বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায়কে ‘সবক’ শেখাতে বুলডোজার চালিয়ে সব কিছু গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ঘৃণা আর বিদ্বেষের রাজনীতি ছড়াচ্ছে। ধর্মের বিষ ছড়ানো হচ্ছে। বাংলা যে বিভাজন আর ধ্বংসের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না, সেই বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বুলডোজ চাই না। মানুষে মানুষে বিভেদ চাই না। আমি চাই সবাই একসঙ্গে থাকুক। একতাই আমাদের আসল শক্তি। ঐক্যবদ্ধ থাকলে সংস্কৃতির শক্তিশালী হয়। কিন্তু বিভেদ থাকলে সেটা হয় না।’

এদিনের সম্মেলন মঞ্চ থেকে ই-কমার্স সংস্থা ফ্লিপকার্টের সবচেয়ে বড় প্যাকিং কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সংশ্লিষ্ট সংস্থার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, হরিণঘাটায় গড়ে ওঠা ওয়্যারহাউসে ১১ হাজারের বেশি কর্মসংস্থান তৈরি হবে।

৪০ লক্ষ কর্মসংস্থান
প্রতীকী ছবি

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

৪০ লক্ষ কর্মসংস্থান

আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২২, শুক্রবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে গেল চলতি বছরের বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। করোনার কারণে যেখানে বিশ্বজুড়ে অর্থনীতিতে ধস নেমেছে, তাতে কত টাকার বিনিয়োগ আসবে তা নিয়ে কিছুটা হলেও চিন্তায় ছিল রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ মহল। কিন্তু তৃণমূল জমানায় বদলে যাওয়া বাংলায় বিনিয়োগের ঢালি নিয়ে হাজির হয়েছেন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। দু’দিনের বাণিজ্য সম্মেলনে ৩ লক্ষ ৪২ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে। ১৩৭ টি মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে। বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন শুরু হওয়ার পরে এই প্রথম রেকর্ড পরিমাণ বিনিয়োগের প্রস্তাব এল। আর দেশি-বিদেশি শিল্পপতিদের বিনিয়োগ আগ্রহে এতটাই উদ্বেলিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে আত্মপ্রত্যয়ী কণ্ঠে ঘোষণা করলেন, ‘আগামী ১০ বছর বাংলা শিল্পের ক্ষেত্রে অন্যান্য রাজ্যগুলির ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাবে।’ সেই সঙ্গে বৃহস্পতিবার সম্মেলনের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘আগামী বছর ১ থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি বসবে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন।’

বুধবার সম্মেলনের সূচনা লগ্নে যেভাবে গৌতম আদানি, নিরঞ্জন হীরানন্দানির মতো দেশের প্রথম সারির শিল্পপতিরা বাংলায় বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশের ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন, তাতেই ইঙ্গিত মিলেছিল বিনিয়োগের জোয়ার আসতে চলেছে। এদিন সম্মেলনের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এবারের বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন সবচেয়ে সফল সম্মেলন। গত দুদিনে ৩ লক্ষ ৪২ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে। বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে ১৩৭টি মউ স্বাক্ষর করেছে রাজ্য সরকার। বিশাল অঙ্কের বিনিয়োগ প্রস্তাব কার্যকরী হলে ৪০ লক্ষ বেকারের কর্মসংস্থান হবে। এখনও পর্যন্ত বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে ১২ লক্ষ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ এসেছে। বেশ কিছু প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। কিছু কিছু প্রকল্পের কাজ এখনও চলছে। শুধু বানতলায় চর্মশিল্প ক্ষেত্রেই ১০ লক্ষের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।’

আরও পড়ুন: হাইকোর্টের বড় নির্দেশ: চাকরিহারা গ্রুপ C ও D কর্মীদের আর মিলবে না ভাতা

৪০ লক্ষ কর্মসংস্থান
করোনার কালবেলায় যখন বিশ্ব অর্থনীতি ধস্ত হয়ে পড়েছে, সেখানে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে কতটা সাড়া মিলবে তা নিয়ে যে অনেকের সংশয় ছিল, তা উল্লেখ করে মমতা বলেন, ‘অনেকেই বলেছিলেন, এখন শিল্প সম্মেলন করবেন না। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের শিল্পদ্যোগীরা বিনিয়োগ করতে চাইবেন না। কিন্তু আমি বলেছিলাম চলুন না করে দেখি। মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়াতে হবে। অনেক প্রতিকুলতার মধ্যেও সফলভাবে সম্মেলন করতে পেরেছি। করোনা যোদ্ধাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।’ বাংলাকে ফের শিল্পে দেশের মধ্যে শীর্ষে নিয়ে যাওয়াই যে তাঁর লক্ষ্য তা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শিল্পের জন্য রাজ্য সরকার সবরকমের সাহায্য করতে প্রস্তুত। বাংলার লক্ষ্য শিল্প। আগামী ১০ বছরে আমরা যেন এমন জায়গায় পৌঁছতে পারি, যেখানে অন্য রাজ্যগুলি আর আমাদের ছুঁতেও না পারে।’ রাজ্যকে আরও শিল্পবান্ধব করতে উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গে একাধিক রফতানি হাব তৈরি করারও ঘোষণা করেছেন তিনি। অন্ডাল ও বাগডোগরায় দুটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর গড়ে তোলারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: আল্লাহ চাইলে শীঘ্রই পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা পাবে কাশ্মীর, আশাবাদী ফারুক আবদুল্লাহ 

বিরোধী শিবির ও বিজেপি পন্থী সংবাদমাধ্যম লাগাতার রাজ্যের ভাবমূর্তি কলুষিত করার চেষ্টা চালালেও বাংলায় যে আইনের শাসন ও স্থিতিশীলতা রয়েছে তার উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলায় বর্তমানে স্থিতিশীলতা রয়েছে। চিন্তার কোনও কারণ নেই। বিপর্যয় আসে-যায়। উন্নয়নের কাজ চালিয়ে যেতে হবে। এমন মহামারী আসতেই পারে। বাংলা রাস্তা দেখিয়েছে। এবার বাকিরাও করবে। এটা শিল্পের উৎসব। আমরা ধর্মীয় উৎসব করি। এবার শিল্পের উৎসব পালন করছি।’

আরও পড়ুন: Jadavpur University: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীর রহস্যমৃত্যু!

৪০ লক্ষ কর্মসংস্থান
প্রতীকী ছবি

বিজেপি শাসিত বিভিন্ন রাজ্যে একটি বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায়কে ‘সবক’ শেখাতে বুলডোজার চালিয়ে সব কিছু গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ঘৃণা আর বিদ্বেষের রাজনীতি ছড়াচ্ছে। ধর্মের বিষ ছড়ানো হচ্ছে। বাংলা যে বিভাজন আর ধ্বংসের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না, সেই বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বুলডোজ চাই না। মানুষে মানুষে বিভেদ চাই না। আমি চাই সবাই একসঙ্গে থাকুক। একতাই আমাদের আসল শক্তি। ঐক্যবদ্ধ থাকলে সংস্কৃতির শক্তিশালী হয়। কিন্তু বিভেদ থাকলে সেটা হয় না।’

এদিনের সম্মেলন মঞ্চ থেকে ই-কমার্স সংস্থা ফ্লিপকার্টের সবচেয়ে বড় প্যাকিং কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সংশ্লিষ্ট সংস্থার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, হরিণঘাটায় গড়ে ওঠা ওয়্যারহাউসে ১১ হাজারের বেশি কর্মসংস্থান তৈরি হবে।

৪০ লক্ষ কর্মসংস্থান
প্রতীকী ছবি