২৩ জুন ২০২৫, সোমবার, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৯০০ পুতুল দিয়ে ‘পুতুলঘর’ তৈরি হাওড়ার অমলেন্দুর

সুস্মিতা
  • আপডেট : ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, শনিবার
  • / 54

আক্তারুল খাঁন, শ্যামপুর: ছোট বয়স থেকেই সঙ্গী হয়ে উঠছে স্মার্টফোন। শিশুরাও মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট, সোশ্যাল মিডিয়া এবং রিলে আসক্ত হয়ে পড়ছে। মোবাইল থেকে সন্তানকে দূরে রাখাই বাবা-মায়েদের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই যুগে। এই ফোনের আসক্ত থেকে বাচ্চাদের দূরে সরাতে পুতুলঘর তৈরি করল প্রত্যন্ত গ্রামের এক শিক্ষক।
হাওড়া জেলার শ্যামপুরের কালীদহ গ্রাম একটি প্রাচীন জনপদ। ঐতিহাসিকদের মতে, রূপনারায়ণ নদের তীরে এই এলাকায় সুদূর অতীতে ছিল একটি বিশালাকার জলাশয়। যাকে স্থানীয় ভাষায় ‘দহ’ বলে। নদীর গতি পরিবর্তনের ফলে পরিত্যক্ত নীচু এলাকায় জল জমে বড় জলাশয় বা ‘দহ’ তৈরি হয়। সেখানে থেকেই গ্রামের নাম হয় কালীদহ। এই কালীদহের বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক অমলেন্দু বেরার একক প্রচেষ্টায় তৈরি হয়েছে গ্রামীণ কৃষ্টি সংগ্রহশালা। যা বাচ্চাদের কাছে ‘পুতুল ঘর’ নামে পরিচিত। এই সংগ্রহশালায় রয়েছে বিভিন্ন দেশের শিল্পদ্রব্য যেমন চীনের পুতুল, তুর্কির পুতুল, মিশরের মমি পুতুল, বাংলাদেশের দেওয়ানী পুতুল, দক্ষিণ আফ্রিকার ঘানার মেঘ পালকের মুখোশ প্রমুখ। এছাড়াও বিভিন্ন রাজ্যের পুতুলের মধ্যে রয়েছে তেলেঙ্গানা, কর্ণাটক, রাজস্থান, অসম, ওড়িশা এবং পশ্চিùমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুরের বিখ্যাত দেওয়ালী পুতুল, হাওড়া জেলার বিখ্যাত রানী পুতুল রয়েছে। পাশাপাশি, কাঠ বাঁশ এবং কাগজের মুখোশও রয়েছে। প্রতিদিন বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা এই সংগ্রহশালায় ভিড় জমাচ্ছেন। এছাড়াও, গ্রামের ছোট ছোট শিশুরাও এখানে এসে ভিড় জমাতে থাকে।
অমলেন্দু বাবু জানান, ‘প্লাস্টিকের যুগে লোকশিল্পগুলো হারিয়ে যেতে বসেছে। ১৭ বছর আগে লোকশিল্পের বিভিন্ন জিনিস সংগ্রহ করেছিলাম। কিন্তু বর্তমান সময়ে এসে দেখা যাচ্ছে ইন্টারনেটের যুগে মোবাইল আসক্ত হয়ে পড়েছে ছোট ছোট শিশুরা। ইন্টারনেটের যুগে পুতুল খেলার চল নেই বললেই চলে। এখনকার বাচ্চারা পুতুল কি জিনিস, সেটাই জানে না। তারপর থেকেই বিভিন্ন পুতুল সংগ্রহ করতে থাকি। অসম, রাজস্থান সহ বিদেশ থেকেও বিভিন্ন পুতুল সংগ্রহ করে আনা হয় এই সংগ্রহশালায়। পুতুল খেলার ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্যই এই ধরনের সংগ্রহশালা গড়ে তোলা হয়েছে।’ অমলেন্দু বাবু আরও জানান, ‘প্রায় ১৩০০ উপকরণের মধ্যে ৯০০-এর বেশি বিভিন্ন ধরনের পুতুল রয়েছে। পাশাপাশি, রয়েছে বিভিন্ন মুখোশও।’

 

আরও পড়ুন: সোদপুর নির্যাতিতা কাণ্ডে গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত আরিয়ান খান

 

আরও পড়ুন: হাওড়ায় একাধিক ট্রেন বাতিল, যাত্রী ভোগান্তি অব্যাহত

আরও পড়ুন: মেয়ের মৃত্যুশোকে গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা হাওড়ার দম্পতির, লঞ্চ কর্মীদের চেষ্টায় উদ্ধার

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

৯০০ পুতুল দিয়ে ‘পুতুলঘর’ তৈরি হাওড়ার অমলেন্দুর

আপডেট : ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, শনিবার

আক্তারুল খাঁন, শ্যামপুর: ছোট বয়স থেকেই সঙ্গী হয়ে উঠছে স্মার্টফোন। শিশুরাও মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট, সোশ্যাল মিডিয়া এবং রিলে আসক্ত হয়ে পড়ছে। মোবাইল থেকে সন্তানকে দূরে রাখাই বাবা-মায়েদের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই যুগে। এই ফোনের আসক্ত থেকে বাচ্চাদের দূরে সরাতে পুতুলঘর তৈরি করল প্রত্যন্ত গ্রামের এক শিক্ষক।
হাওড়া জেলার শ্যামপুরের কালীদহ গ্রাম একটি প্রাচীন জনপদ। ঐতিহাসিকদের মতে, রূপনারায়ণ নদের তীরে এই এলাকায় সুদূর অতীতে ছিল একটি বিশালাকার জলাশয়। যাকে স্থানীয় ভাষায় ‘দহ’ বলে। নদীর গতি পরিবর্তনের ফলে পরিত্যক্ত নীচু এলাকায় জল জমে বড় জলাশয় বা ‘দহ’ তৈরি হয়। সেখানে থেকেই গ্রামের নাম হয় কালীদহ। এই কালীদহের বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক অমলেন্দু বেরার একক প্রচেষ্টায় তৈরি হয়েছে গ্রামীণ কৃষ্টি সংগ্রহশালা। যা বাচ্চাদের কাছে ‘পুতুল ঘর’ নামে পরিচিত। এই সংগ্রহশালায় রয়েছে বিভিন্ন দেশের শিল্পদ্রব্য যেমন চীনের পুতুল, তুর্কির পুতুল, মিশরের মমি পুতুল, বাংলাদেশের দেওয়ানী পুতুল, দক্ষিণ আফ্রিকার ঘানার মেঘ পালকের মুখোশ প্রমুখ। এছাড়াও বিভিন্ন রাজ্যের পুতুলের মধ্যে রয়েছে তেলেঙ্গানা, কর্ণাটক, রাজস্থান, অসম, ওড়িশা এবং পশ্চিùমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুরের বিখ্যাত দেওয়ালী পুতুল, হাওড়া জেলার বিখ্যাত রানী পুতুল রয়েছে। পাশাপাশি, কাঠ বাঁশ এবং কাগজের মুখোশও রয়েছে। প্রতিদিন বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা এই সংগ্রহশালায় ভিড় জমাচ্ছেন। এছাড়াও, গ্রামের ছোট ছোট শিশুরাও এখানে এসে ভিড় জমাতে থাকে।
অমলেন্দু বাবু জানান, ‘প্লাস্টিকের যুগে লোকশিল্পগুলো হারিয়ে যেতে বসেছে। ১৭ বছর আগে লোকশিল্পের বিভিন্ন জিনিস সংগ্রহ করেছিলাম। কিন্তু বর্তমান সময়ে এসে দেখা যাচ্ছে ইন্টারনেটের যুগে মোবাইল আসক্ত হয়ে পড়েছে ছোট ছোট শিশুরা। ইন্টারনেটের যুগে পুতুল খেলার চল নেই বললেই চলে। এখনকার বাচ্চারা পুতুল কি জিনিস, সেটাই জানে না। তারপর থেকেই বিভিন্ন পুতুল সংগ্রহ করতে থাকি। অসম, রাজস্থান সহ বিদেশ থেকেও বিভিন্ন পুতুল সংগ্রহ করে আনা হয় এই সংগ্রহশালায়। পুতুল খেলার ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্যই এই ধরনের সংগ্রহশালা গড়ে তোলা হয়েছে।’ অমলেন্দু বাবু আরও জানান, ‘প্রায় ১৩০০ উপকরণের মধ্যে ৯০০-এর বেশি বিভিন্ন ধরনের পুতুল রয়েছে। পাশাপাশি, রয়েছে বিভিন্ন মুখোশও।’

 

আরও পড়ুন: সোদপুর নির্যাতিতা কাণ্ডে গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত আরিয়ান খান

 

আরও পড়ুন: হাওড়ায় একাধিক ট্রেন বাতিল, যাত্রী ভোগান্তি অব্যাহত

আরও পড়ুন: মেয়ের মৃত্যুশোকে গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা হাওড়ার দম্পতির, লঞ্চ কর্মীদের চেষ্টায় উদ্ধার