০১ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাওড়ায় রামনবমী পালনে আয়োজকদের ‘কড়া শর্তাবলি’ দিল কলকাতা হাইকোর্ট

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ৪ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার
  • / 88

মোল্লা জসিমউদ্দিন: শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাস হাওড়ায় রামনবমী উপলক্ষে অঞ্জনী পুত্র সেনা এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মিছিলে (রাম নবমী শোভাযাত্রা) অনুমতি দিল। তবে মেনে চলতে হবে একাধিক শর্ত।মিছিলে যারা অংশগ্রহণ করবে তাদের পরিচয় পত্র জমা দিতে হবে। আবেদনকারীর আইনজীবীকে মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের পরিচয়পত্র জমা করার নির্দেশ দেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। ৫০০’র বেশি মানুষ মিছিলে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।সেখানেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মিছিলের অনুমতি দিলেও দুই মিছিল আলাদা সময়ে হবে। এছাড়াও মিছিলের সদস্যসংখ্যাও বেঁধে দিলেন বিচারপতি।রামনবমী নিয়ে ক্রমে উত্তাপ বাড়ছে রাজ্য রাজনীতিতে। বিজেপি নেতারা রামনবমী পালনের জন্য জোর প্রচার চালাচ্ছেন। বিভিন্ন জায়গায় মিছিল করার প্রস্তুতিও চলছে। রামনবমী ঘিরে রাজ্যে অশান্তি ছড়াতে পারে বলে নবান্নের থেকে সেই বিষয়ে আগাম সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ রাস্তায় নেমে কড়া নজরদারিও শুরু করেছে। বিভিন্ন জায়গায় মিছিলের অনুমতিও দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে। হাওড়ায় রামনবমীর দিন মিছিল করতে চেয়েছে অঞ্জনী পুত্র সেনা এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। সেজন্য কলকাতা হাইকোর্টে দ্বারস্থ হয় দুই সংগঠন।শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে সেই মামলার শুনানি হয়। একাধিক শর্তসাপেক্ষে দুই মিছিলের অনুমতি দেওয়া হল। অঞ্জনী পুত্র সেনা ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ পৃথকভাবে ওই মিছিল করবে। সেক্ষেত্রে ওইদিন আলাদা সময়ে দুটি মিছিল করা হবে। সকাল সাড়ে আটটা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত মিছিল করবে অঞ্জনী পুত্র সেনা।

অন্যদিকে, বিকাল তিনটে থেকে ছটা পর্যন্ত মিছিল করার অনুমতি পেয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। তবে দুটি মিছিলেই পাঁচশো জনের বেশি লোক থাকতে পারবে না। দুই মিছিল মিলিয়ে মোট হাজার জন থাকতে পারবেন বলে নির্দেশ রাজ্যের উচ্চ আদালতের। পৃথক রাস্তায় দুই মিছিল হবে। সব থেকে বড় বিষয়, কোনও মিছিলেই অস্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। এই কড়া নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। পিভিসি দিয়ে তৈরি যে কোনও ধর্মীয় প্রতীক নিয়ে মিছিল করা যাবে। ধাতুর তৈরি কোনও হাতিয়ার নিয়ে মিছিল করা যাবে না।শুনানি চলাকালীন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের প্রশ্ন, “দুর্গাপুজোয় কোথাও গন্ডগোল হলে কি দুর্গাপুজো কি বন্ধ করে দেব?” তিনি জানান, “ক্ষমতা থাকা এবং ক্ষমতার প্রয়োগ করা দুটো সম্পূর্ণ আলাদা জিনিস। কোনও এলাকা নিয়ে পুলিশ যদি আশঙ্কা প্রকাশ করে, তাহলে সেটা রাজ্যের পক্ষে ভালো দেখায় না।” এরপরেই বিচারপতির প্রশ্ন, “ওই এলাকায় কি প্রতিদিন গন্ডগোল হয়?” বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ আরও বলেন, “অশান্তি প্রতি বছর কমছে বলেই দেখা যাচ্ছে। ২০২২ সালে বেশি গন্ডগোল হয়েছিল। ২০২৩ সালে কমেছে, ২০২৪ সালে আরও কম হয়েছে। এবছর মানুষ আরও সচেতন হয়েছে বলে আশা করা যায়।” বিচারপতির আরও জানান, “যদি বন্ধ করতেই হয়, তাহলে সব কর্মসূচিই বন্ধ করে দেব। রাজনৈতিক হোক বা অরাজনৈতিক।”

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

হাওড়ায় রামনবমী পালনে আয়োজকদের ‘কড়া শর্তাবলি’ দিল কলকাতা হাইকোর্ট

আপডেট : ৪ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার

মোল্লা জসিমউদ্দিন: শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাস হাওড়ায় রামনবমী উপলক্ষে অঞ্জনী পুত্র সেনা এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মিছিলে (রাম নবমী শোভাযাত্রা) অনুমতি দিল। তবে মেনে চলতে হবে একাধিক শর্ত।মিছিলে যারা অংশগ্রহণ করবে তাদের পরিচয় পত্র জমা দিতে হবে। আবেদনকারীর আইনজীবীকে মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের পরিচয়পত্র জমা করার নির্দেশ দেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। ৫০০’র বেশি মানুষ মিছিলে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।সেখানেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মিছিলের অনুমতি দিলেও দুই মিছিল আলাদা সময়ে হবে। এছাড়াও মিছিলের সদস্যসংখ্যাও বেঁধে দিলেন বিচারপতি।রামনবমী নিয়ে ক্রমে উত্তাপ বাড়ছে রাজ্য রাজনীতিতে। বিজেপি নেতারা রামনবমী পালনের জন্য জোর প্রচার চালাচ্ছেন। বিভিন্ন জায়গায় মিছিল করার প্রস্তুতিও চলছে। রামনবমী ঘিরে রাজ্যে অশান্তি ছড়াতে পারে বলে নবান্নের থেকে সেই বিষয়ে আগাম সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ রাস্তায় নেমে কড়া নজরদারিও শুরু করেছে। বিভিন্ন জায়গায় মিছিলের অনুমতিও দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে। হাওড়ায় রামনবমীর দিন মিছিল করতে চেয়েছে অঞ্জনী পুত্র সেনা এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। সেজন্য কলকাতা হাইকোর্টে দ্বারস্থ হয় দুই সংগঠন।শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে সেই মামলার শুনানি হয়। একাধিক শর্তসাপেক্ষে দুই মিছিলের অনুমতি দেওয়া হল। অঞ্জনী পুত্র সেনা ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ পৃথকভাবে ওই মিছিল করবে। সেক্ষেত্রে ওইদিন আলাদা সময়ে দুটি মিছিল করা হবে। সকাল সাড়ে আটটা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত মিছিল করবে অঞ্জনী পুত্র সেনা।

অন্যদিকে, বিকাল তিনটে থেকে ছটা পর্যন্ত মিছিল করার অনুমতি পেয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। তবে দুটি মিছিলেই পাঁচশো জনের বেশি লোক থাকতে পারবে না। দুই মিছিল মিলিয়ে মোট হাজার জন থাকতে পারবেন বলে নির্দেশ রাজ্যের উচ্চ আদালতের। পৃথক রাস্তায় দুই মিছিল হবে। সব থেকে বড় বিষয়, কোনও মিছিলেই অস্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। এই কড়া নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। পিভিসি দিয়ে তৈরি যে কোনও ধর্মীয় প্রতীক নিয়ে মিছিল করা যাবে। ধাতুর তৈরি কোনও হাতিয়ার নিয়ে মিছিল করা যাবে না।শুনানি চলাকালীন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের প্রশ্ন, “দুর্গাপুজোয় কোথাও গন্ডগোল হলে কি দুর্গাপুজো কি বন্ধ করে দেব?” তিনি জানান, “ক্ষমতা থাকা এবং ক্ষমতার প্রয়োগ করা দুটো সম্পূর্ণ আলাদা জিনিস। কোনও এলাকা নিয়ে পুলিশ যদি আশঙ্কা প্রকাশ করে, তাহলে সেটা রাজ্যের পক্ষে ভালো দেখায় না।” এরপরেই বিচারপতির প্রশ্ন, “ওই এলাকায় কি প্রতিদিন গন্ডগোল হয়?” বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ আরও বলেন, “অশান্তি প্রতি বছর কমছে বলেই দেখা যাচ্ছে। ২০২২ সালে বেশি গন্ডগোল হয়েছিল। ২০২৩ সালে কমেছে, ২০২৪ সালে আরও কম হয়েছে। এবছর মানুষ আরও সচেতন হয়েছে বলে আশা করা যায়।” বিচারপতির আরও জানান, “যদি বন্ধ করতেই হয়, তাহলে সব কর্মসূচিই বন্ধ করে দেব। রাজনৈতিক হোক বা অরাজনৈতিক।”