বছরে ২৩০ কোটি জালিয়াতির সম্ভাবনা
মধ্যপ্রদেশে ৫০ হাজার ভূতুড়ে কর্মীর খোঁজ, সরকারের মধ্যে তোলপাড়

- আপডেট : ৬ জুন ২০২৫, শুক্রবার
- / 59
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ব্যাপম কেলেঙ্কারির পর মধ্যপ্রদেশে ফের বড় ধরনের সরকারি দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এল। এনডিটিভি জানিয়েছে, মধ্যপ্রদেশের এমন ৫০ হাজার সরকারি কর্মীর তথ্য তাদের হাতে এসেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, সরকারি কর্মী হিসেবে নাম এবং পদ থাকা সত্বেও এই ৫০ হাজার কর্মী ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে বেতন পাননি।
অথচ তাদের যে চাকরি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এমন কোনও কথাও সরকারি নথিতে লেখা নেই। ৫০ হাজার কর্মীর মধ্যে ৪০ হাজার স্থায়ী এবং ১০ হাজার অস্থায়ী কর্মী। সব মিলিয়ে তাদের বেতন হওয়ার কথা ২৩০ কোটি টাকা।
মধ্যপ্রদেশের মোট সরকারি কর্মীর প্রায় ৯ শতাংশ এই কর্মীদের সংখ্যা। তবে কি এই ভূতূড়ে কর্মীদের খাতায় কলমে নাম রেখে দিয়ে কোনও চক্র কোটি কোটি টাকা তুলে হজম করে দিয়েছে। তা ধরা পড়ার পর গত ৬ মাস ওদের বেতন দেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছে।
রাজ্যের অর্থমন্ত্রী জগদীশ দেওদার কাছে এই ভূতুরে কর্মীদের কথা তুলতেই তিনি ভাজা মাছ উলটে খেতে না জানার ঢঙে বললেন, ৫০ হাজার কর্মী? তাঁরা বেতন নেননি কেন? এখানে যা হয় আইন মেনে হয়’। বলেই তিনি ধাঁ।
এদিকে গত ২৩ মে রাজ্য সরকারের কমিশনার অফ ট্রেজারি অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস সমস্ত ড্রয়িং অ্যান্ড ডিসবার্সিং অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছেন, যে স্থায়ী এবং অস্থায়ী কর্মীরা গত ডিসেম্বর মাস থেকে বেতন তোলেননি, অথচ তাদের এমপ্লয়ি কোড নম্বর ইত্যাদি সব আছে তাদের অবিলম্বে তালিকা তৈরি করুন। রাজ্যে সরকারি অফিসে মোট ৬০০০ ড্রয়িং অ্যান্ড ডিসবার্সিং অফিসার রয়েছেন। তাঁদেরই সন্দেহ করা হচ্ছে বছরে ২৩০ কোটি টাকা করে জালিয়াতি করা হয়েছে মনে করে।
৬ জুনের মধ্যে তালিকা দিতে বলা হয়েছিল। কমিশনার অফ ট্রেজারি অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস ভাস্কর লক্ষকার বলেছেন, আমরা নিয়মিত তথ্য যাচাই করি। সেই যাচাই করতে গিয়েই এই বৈসাদৃশ্য ধরা পড়েছে। যদি কোনও টাকা তছরুপ হয়ে থাকে তা ধরা পড়বে।
সব মিলিয়ে এই মারাত্মক বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারের অফিসারদের মধ্যে তোলপাড় হচ্ছে। অথচ ডাবল ইঞ্জিন সরকারের অর্থমন্ত্রী পুরো বিষয়টি এড়িয়ে গেলেন। প্রশ্ন অনেক। এমনও হতে পারে এই কর্মীদের বেতন অনেক আগের তারিখ দেখিয়ে তোলা হয়েছে। আর তা চেকের অভাব দেখিয়ে নগদেও তোলা হতে পারে। ৫০ হাজার পদে ভূয়ো নাম দিয়ে যদি জালিয়াতি হয় তাহলে এই ৯ শতাংশ কর্মী ছাড়া সরকারি দফতর চলছে কীভাবে, এটাও বড় প্রশ্ন।
সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, ৫০ হাজার ভূতুরে কর্মী রয়েছে কিনা? থাকলে কী করে রয়েছে? তার উত্তর দিতেই হবে মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সরকারকে। গত ৬ মাস বেতন তোলা হয়নি বলেই বড় ধরনের জালিয়াতি অথবা ভূতুড়ে পদের সন্দেহ ঘোরতর হয়ে উঠছে। এই তদন্ত শুরুর পর কটা গুম খুন হয় দেখা যাক। ব্যাপম কেলেঙ্কারির সময়ে তদন্ত করতে গিয়ে পরপর গুম খুনের ঘটনা ঘটত।