রেশনের মাধ্যমে জগন্নাথের প্রসাদ পৌঁছবে ঘরে ঘরে

- আপডেট : ৮ জুন ২০২৫, রবিবার
- / 57
পয়সা না নিয়েই বিলি করবেন রেশন ডিলাররা
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: এই মুহূর্তে জগন্নাথের প্রসাদ বিতরণ নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে বিতর্ক চলছে। বিতর্ক উসকে দিয়েছেন স্বয়ং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
সরকারের তরফ থেকে পাল্টা জবাব দেওয়া হলেও। এই নিয়ে আলোচনা থামছে না। আর এসবের মধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ আপডেট আসছে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে। রেশন ডিলাররা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং বলছেন বিনা পারিশ্রমিকে তারা জগন্নাথের প্রসাদ বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেবেন। প্রসঙ্গত সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জগন্নাথ মন্দিরের প্রসাদ এবার পৌঁছে যাবে রাজ্যের প্রতিটি বাড়িতে। দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে নিবেদন করা খোয়া ক্ষীর মিলবে প্যাঁড়া ও গজার সঙ্গে। এই প্রসাদ বিলি করতে কোনও ভর্তুকি বা পারিশ্রমিক নেবেন না রাজ্যের রেশন ডিলাররা। রেশন দোকানদারদের সর্বভারতীয় সংগঠনের পশ্চিমবঙ্গ শাখা জানাচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবনা মেনেই তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সরকারের তরফে বরাদ্দ করা ১ টাকা প্রতি প্যাকেটের ভর্তুকিও তাঁরা নেবেন না।
সরকার ইতিমধ্যেই স্থির করেছে, ১৭ জুন থেকে দিঘার মন্দিরে নিবেদন করা খোয়া ক্ষীর সহযোগে প্রসাদ রাজ্যের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাজ্য সরকার ঠিক করেছে উলটোরথের মধ্যেই এই প্রসাদ বিলির কাজ শেষ করতে। সেই লক্ষ্যে শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। এক্ষেত্রে রাজ্য সরকার সরাসরি ফেয়ার প্রাইস সব ডিলার্স দের সংযুক্ত করেছে। এবার রেশনের মাধ্যমেই এই মহা প্রসাদ বাড়ি বাড়ি পৌঁছাবে। ভুলে গেলে চলবে না এভাবে জগন্নাথের প্রসাদ পৌঁছানোর জন্য সরাসরি সরকারের কাছে এমন কোন সংস্থা নেই। এক্ষেত্রে সরকার ঠিক করেছিল রেশনের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি পৌঁছানোর জন্য রেশন ডিলারদের এক টাকা বাড়তি ভর্তুকি দেওয়ার। কিন্তু প্রসাদ বিলির জন্য বাড়তি টাকা নিতে চাইছেন না রেশন ডিলাররা।
ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু জানান, “এই মহান কর্মযজ্ঞে আমাদের যুক্ত করার জন্য আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা ঠিক করেছি, সোম থেকে শুক্র ‘দুয়ারে রেশন’-এর সুবিধা কাজে লাগিয়ে গ্রাহকদের বাড়িতেই প্রসাদ পৌঁছে দেব। আর শনিবার ও রবিবার দোকান থেকেই রেশন ও প্রসাদ বিলি হবে।”
প্রসাদের সঙ্গে প্যাঁড়া ও গজা থাকবে। সেই মিষ্টি কোথা থেকে আসবে তা ঠিক করবেন স্থানীয় পুরসভা বা পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। তবে খোয়া ক্ষীর আসবে একমাত্র দিঘার মন্দির থেকেই। এই প্যাকেটগুলি পরিবহণ, সংরক্ষণ ও বিলির দায়িত্বে থাকবেন রেশন ডিলাররাই।
সরকার ডিলারদের প্রতি প্যাকেট ১ টাকা ভর্তুকি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও, ১১ কোটি রেশন গ্রাহকের জন্য সেই টাকার হিসেব প্রায় ১১ কোটি টাকা দাঁড়ালেও, সেই অর্থ নিচ্ছেন না ডিলাররা।
ইতিমধ্যেই জেলা শাসকদের নেতৃত্বে বিভিন্ন জেলায় বৈঠকও হয়ে গিয়েছে। পরবর্তী পর্যায়ে রাজ্যস্তরে রেশন ডিলারদের সঙ্গে সরকার পক্ষের বৈঠক হবে, যেখানে এই বিষয়েই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব দেওয়া হবে।
ফুড ইন্সপেক্টরকে নজরদারির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে প্রতিটি প্যাকেটে মিষ্টির মেয়াদ উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক করা হোক—এমন দাবিও তুলবে ডিলার সংগঠন।
রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে এবার ধর্মীয় আবেগ ও প্রশাসনিক দক্ষতায় মিলেমিশে তৈরি হচ্ছে এক অভিনব উদ্যোগ। আর তার কেন্দ্রে মুখ্যমন্ত্রীর ভাবনা, মন্দিরের প্রসাদ এবং রেশন ডিলারদের উদারতা।