সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসসি, এসটি ও ওবিসি কোটায় স্থগিতাদেশ বোম্বে হাইকোর্টের

- আপডেট : ১৪ জুন ২০২৫, শনিবার
- / 63
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকারের মতো মহারাষ্ট্রের ফড়নবিশ সরকার সংরক্ষণ নিয়ে ধাক্কা খেল কোর্টে। মহারাষ্ট্র সরকার নির্দেশ জারি করে রাজ্যের সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে পড়ে থাকা খালি আসনে এসসি, এসটি, ওবিসিদের ভর্তি করা যাবে।
এই নির্দেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আসে এই রাজ্যের সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির অ্যাসোসিয়েশন। তারা হাইকোর্টে জানায়, সংবিধান সংখ্যালঘুদের নিজস্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়া ও সেগুলির পরিচালনার স্বাধীনতা দিয়েছে। এমনকি রিজার্ভেশন নীতির বাইরে রাখতে বলা হয়েছে সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে।
এখন মহারাষ্ট্র সরকার যেটা করতে চলেছে সেটা সংবিধানের ১৫(৫) এবং ৩০ ধারার উল্লঙ্ঘন। আবেদনকারীরা কোর্টে জানায়, রাজ্য সরকার আরও নির্দেশ দিয়েছে ছাত্রছাত্রীর ভর্তির সময় যদি সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসন ফাঁকা পড়ে থাকে তাহলে সেগুলি জেনারেল কোটায় পরিবর্তিত হয়ে যাবে। এই নিয়ম সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচলনায় হস্তক্ষেপ। তাদের হাত থেকে রিজার্ভেশন কোটা কেড়ে নেওয়া হবে এরফলে।
বোম্বে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ আবেদনকারীর যুক্তি ও সরকার পক্ষের বক্তব্য শোনার পর সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে স্থগিতাদেশ দিয়েছে। সরকারকে তাদের অভিমত জানাতে হবে। তারপরই শুনানির ব্যবস্থা হবে আগস্ট মাসে প্রথম সপ্তাহে। ততদিন এই এসসি, এসটি ও ওবিসি ভর্তি বন্ধ থাকবে সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
সরকার পক্ষের যুক্তি ছিল এই নিয়মে সংখ্যালঘু কোটায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে না কেবলমাত্র ফাঁকা আসনে পিছিয়ে পড়াদের ভর্তির ব্যবস্থা করা হচ্ছিল। কিন্তু আবেদনকারীর যুক্তি সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে কেন দখল দেবে সরকার। আবেদনকারীদের মধ্যে জৈন সম্প্রদায় ও খ্রিস্টান পরিচালিত বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেখানে ১২ জুন থেকে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আর এই সময় রাজ্য সরকার ৬ মে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল সংখ্যালঘু পরিচালিত স্কুলগুলিতে সরকারি স্কুলের নিয়ম মতো ছাত্র ভর্তি করিয়ে দিতে হবে।
মহারাষ্ট্রের সংখ্যালঘু পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলিতে সাধারণত ৫০-৪৫-৫ ফর্মুলা মেনে চলা হয়। অর্থাৎ ৫০ শতাংশ সংরক্ষিত থাকবে সংশ্লিষ্ট সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছাত্রছাত্রীদের জন্য। আর ৫ শতাংশ থাকবে ম্যানেজমেন্ট কোটা। বাকি ৪৫ শতাংশ অসংরক্ষিত আসন বা জেনারেল ক্যাটাগরি হিসেবে গণ্য হবে। কিন্তু ২০২৫-২৬ সালের জন্য সরকার কেন্দ্রীয় অনলাইন ভর্তি প্রক্রিয়ায় এই ৪৫ শতাংশও জুড়ে দিয়েছে। আর এটাকেও সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানে হস্তক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
হাইকোর্ট তাদের রায়ে বলেছে, আপাত দৃষ্টিতে আমাদের মনে হচ্ছে আবেদনকারীদের সুরাহা পাওয়া উচিত। বিশেষ করে একাদশ শ্রেণিতে ছাত্র ভর্তির ক্ষেত্রে। সংখ্যালঘু পরিচালিত প্রতিষ্ঠানে সামাজিকভাবে পিছিয়েপড়া শ্রেণির জন্য সংরক্ষণ করা যায় না। আবেদনকারী জানান, এমনিতেই ভর্তির ক্ষেত্রে এসসি, এসটি ও ওবিসিদের জন্য আলাদা কোটা রয়েছে সেই কোটার ক্ষেত্র বাড়িয়ে সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানে নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে।
এটা সংখ্যালঘুদের অধিকারের উপর হস্তক্ষেপ। এই মামলায় প্রধান আবেদনকারী সোলাপুর এপিডি জৈন পাঠশালা যাদের অধীনে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু রয়েছে। উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশে সরকারি চাকরিতে এসসি, এসটি ও ওবিসি সংরক্ষিত আসনে উপযুক্ত প্রার্থী পাওয়া যাচ্ছে না, এই যুক্তিতে জেনারেল ক্যাটাগরি করে দেওয়া হলে প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি।