১৫ জুন ২০২৫, রবিবার, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সন্দেশখালিতে প্রায় তিন হাজার পরিবারের যোগদান তৃণমূলে

সুস্মিতা
  • আপডেট : ১৫ জুন ২০২৫, রবিবার
  • / 34

ইনামুল হক, বসিরহাট: এবার সন্দেশখালিতে শুভেন্দুর শ্রদ্ধাঞ্জলি সভার পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেসের বিশাল কর্মী সমাবেশ হল। রবিবার বিকেলে সন্দেশখালির কানমারি বাজারের ভারত সেবাশ্রম সংঘের মাঠে এই কর্মীসভায় রেখা পাত্রের ছায়া সঙ্গীসহ ৩ হাজার পরিবারের তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করে।

রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু, বীরবাহা হাঁসদা, বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার নতুন সভাপতি বুরহানুল মুকাদ্দিম লিটন, চেয়ারম্যান সরোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক সুকুমার মাহাতো, নবাগত পীরজাদা কাসেম সিদ্দিকীসহ জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের উপস্থিতিতে তারা পতাকা গ্রহণ করে।

বলাবাহুল্য, সন্দেশখালির কানমারি ভারত সেবাশ্রম সংঘের মাঠে চলতি মাসের ৮ তারিখে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর শ্রদ্ধাঞ্জলি সভায় নিহতদের ছবিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করার পর রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। ২০১৯ সালের ৮ই জুন জামাইষষ্ঠীর দিন বিজেপি কর্মী, প্রদীপ মন্ডল, সুকান্ত মন্ডলের পাশাপাশি তৃণমূল কর্মী কাইয়ুম মোল্লা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছিল। এই নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয় বিজেপি নেতৃত্ব। দেবদাস মন্ডল নামে এক বিজেপি কর্মীকে শ্রদ্ধাঞ্জলি সভায় শহীদের আখ্যা দিয়ে মালা পরিয়ে দিয়ে শহীদ সভা পালন করা হয়। আর সেখানেই বিতর্কের দানা বাঁধে।

নিখোঁজ ব্যাক্তিকে কিভাবে শুভেন্দু অধিকারী শহীদের আখ্যা দিলেন। এই প্রশ্ন তুলেছেন খোদ নিখোঁজ দেবদাস মন্ডলের স্ত্রী সুপ্রিয়া মন্ডল। এছাড়াও সন্দেশখালির প্রতিবাদী মুখ যাকে প্রধানমন্ত্রী দূর্গা শক্তি আখ্যা দিয়েছিলেন সেই রেখা পাত্র শ্রদ্ধাঞ্জলি সভায় হাজির ছিলেন না। সেদিন শুভেন্দু সহ রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের মুখে একবারও রেখা পাত্রের নাম শোনা যায়নি। তাই নিয়ে রীতিমতো প্রশ্নের মুখে বিজেপি নেতৃত্ব।

আরো বড় প্রশ্নের মুখে ফেলে দিল এদিন তৃণমূলে যোগ দেওয়া সন্দেশখালির বিজেপি নেত্রী তথা বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের প্রাক্তন প্রার্থী রেখা পাত্রের ছায়া সঙ্গী বিজেপি নেত্রী লতিকা মিস্ত্রি, সন্দেশখালির প্রতিবাদী মুখ প্রথম আন্দোলনকারী সুদেষ্ণা দাস, সুজিত নস্কররা।

 

সন্দেশখালিতে প্রায় তিন হাজার পরিবারের যোগদান তৃণমূলে

 

যারা ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে সন্দেশখালি বিজেপির আন্দোলনকারী হয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে ভোট প্রচার করেছেন। তৃণমূলের যোগ দিয়ে লতিকা মিস্ত্রি, সুদেষ্ণা দাসরা বলেন, আমরা দেখলাম উন্নয়ন দিদিই করছেন। বিজেপি মিথ্যা প্রলোভন দিচ্ছে।

সেদিন আমাদের ভয় দেখানো হয়েছিল। সন্দেশখালিতে মেয়েদের উপর আরো অত্যাচার হবে তাই বিজেপির হয়ে আন্দোলনে গিয়েছিলাম। ২০২৬-এর নির্বাচনের আগে শুভেন্দুর পাল্টা সন্দেশখালি এই কর্মী সভা রাজনৈতিকভাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।

রাজ্যের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা বিজেপিকে নিশানা করে বলেন, শুভেন্দু আবোল তাবোল বলছে , পাগল হয়ে গেছে। এলাকায় আসলে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেবেন। উনি উস্কানি দিচ্ছেন আদিবাসী সম্প্রদায়, এসটি ওবিসি মানুষকে।

বিজেপি আসামে ত্রিপুরায় তাদের পরিচয় পত্র গুলো কেড়ে নিয়েছে বলে তিনি সন্দেশখালির আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষকে সতর্ক করে দেন। সাংবাদিক মন্ত্রী সুজিত বসু বলেন, সন্দেশখালি নিয়ে বার্তা দেবেন ওরাই। যারা ভুল বুঝে আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন।

আজ তারা ফিরে এসেছেন। তবে ২০২৬-এ তৃণমূলে সরকার হবে। বসিরহাটে সাতটি বিধানসভাই তৃণমূল কংগ্রেস পাবে। আগামী ২১ শে জুলাই দিদি নির্বাচনের বার্তা দেবেন। একুশে জুলাই প্রস্তুতির আগে সন্দেশখালিতে বিজেপির এই বড়সড়ো ভাঙ্গন। এদিনের বিশাল সমাবেশে বিপুল সংখ্যক মানুষের তৃণমূলে যোগদান ঘটায় আগামী নির্বাচনে সন্দেশখালি যে সন্দেশখালিতেই ফিরছে তারই বার্তা দিল সন্দেশখালিবাসী, এমনটাই দাবি করেন জেলা সভাপতি বুরহানুল মুকাদ্দিম লিটন।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

সন্দেশখালিতে প্রায় তিন হাজার পরিবারের যোগদান তৃণমূলে

আপডেট : ১৫ জুন ২০২৫, রবিবার

ইনামুল হক, বসিরহাট: এবার সন্দেশখালিতে শুভেন্দুর শ্রদ্ধাঞ্জলি সভার পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেসের বিশাল কর্মী সমাবেশ হল। রবিবার বিকেলে সন্দেশখালির কানমারি বাজারের ভারত সেবাশ্রম সংঘের মাঠে এই কর্মীসভায় রেখা পাত্রের ছায়া সঙ্গীসহ ৩ হাজার পরিবারের তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করে।

রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু, বীরবাহা হাঁসদা, বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার নতুন সভাপতি বুরহানুল মুকাদ্দিম লিটন, চেয়ারম্যান সরোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক সুকুমার মাহাতো, নবাগত পীরজাদা কাসেম সিদ্দিকীসহ জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের উপস্থিতিতে তারা পতাকা গ্রহণ করে।

বলাবাহুল্য, সন্দেশখালির কানমারি ভারত সেবাশ্রম সংঘের মাঠে চলতি মাসের ৮ তারিখে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর শ্রদ্ধাঞ্জলি সভায় নিহতদের ছবিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করার পর রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। ২০১৯ সালের ৮ই জুন জামাইষষ্ঠীর দিন বিজেপি কর্মী, প্রদীপ মন্ডল, সুকান্ত মন্ডলের পাশাপাশি তৃণমূল কর্মী কাইয়ুম মোল্লা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছিল। এই নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয় বিজেপি নেতৃত্ব। দেবদাস মন্ডল নামে এক বিজেপি কর্মীকে শ্রদ্ধাঞ্জলি সভায় শহীদের আখ্যা দিয়ে মালা পরিয়ে দিয়ে শহীদ সভা পালন করা হয়। আর সেখানেই বিতর্কের দানা বাঁধে।

নিখোঁজ ব্যাক্তিকে কিভাবে শুভেন্দু অধিকারী শহীদের আখ্যা দিলেন। এই প্রশ্ন তুলেছেন খোদ নিখোঁজ দেবদাস মন্ডলের স্ত্রী সুপ্রিয়া মন্ডল। এছাড়াও সন্দেশখালির প্রতিবাদী মুখ যাকে প্রধানমন্ত্রী দূর্গা শক্তি আখ্যা দিয়েছিলেন সেই রেখা পাত্র শ্রদ্ধাঞ্জলি সভায় হাজির ছিলেন না। সেদিন শুভেন্দু সহ রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের মুখে একবারও রেখা পাত্রের নাম শোনা যায়নি। তাই নিয়ে রীতিমতো প্রশ্নের মুখে বিজেপি নেতৃত্ব।

আরো বড় প্রশ্নের মুখে ফেলে দিল এদিন তৃণমূলে যোগ দেওয়া সন্দেশখালির বিজেপি নেত্রী তথা বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের প্রাক্তন প্রার্থী রেখা পাত্রের ছায়া সঙ্গী বিজেপি নেত্রী লতিকা মিস্ত্রি, সন্দেশখালির প্রতিবাদী মুখ প্রথম আন্দোলনকারী সুদেষ্ণা দাস, সুজিত নস্কররা।

 

সন্দেশখালিতে প্রায় তিন হাজার পরিবারের যোগদান তৃণমূলে

 

যারা ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে সন্দেশখালি বিজেপির আন্দোলনকারী হয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে ভোট প্রচার করেছেন। তৃণমূলের যোগ দিয়ে লতিকা মিস্ত্রি, সুদেষ্ণা দাসরা বলেন, আমরা দেখলাম উন্নয়ন দিদিই করছেন। বিজেপি মিথ্যা প্রলোভন দিচ্ছে।

সেদিন আমাদের ভয় দেখানো হয়েছিল। সন্দেশখালিতে মেয়েদের উপর আরো অত্যাচার হবে তাই বিজেপির হয়ে আন্দোলনে গিয়েছিলাম। ২০২৬-এর নির্বাচনের আগে শুভেন্দুর পাল্টা সন্দেশখালি এই কর্মী সভা রাজনৈতিকভাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।

রাজ্যের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা বিজেপিকে নিশানা করে বলেন, শুভেন্দু আবোল তাবোল বলছে , পাগল হয়ে গেছে। এলাকায় আসলে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেবেন। উনি উস্কানি দিচ্ছেন আদিবাসী সম্প্রদায়, এসটি ওবিসি মানুষকে।

বিজেপি আসামে ত্রিপুরায় তাদের পরিচয় পত্র গুলো কেড়ে নিয়েছে বলে তিনি সন্দেশখালির আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষকে সতর্ক করে দেন। সাংবাদিক মন্ত্রী সুজিত বসু বলেন, সন্দেশখালি নিয়ে বার্তা দেবেন ওরাই। যারা ভুল বুঝে আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন।

আজ তারা ফিরে এসেছেন। তবে ২০২৬-এ তৃণমূলে সরকার হবে। বসিরহাটে সাতটি বিধানসভাই তৃণমূল কংগ্রেস পাবে। আগামী ২১ শে জুলাই দিদি নির্বাচনের বার্তা দেবেন। একুশে জুলাই প্রস্তুতির আগে সন্দেশখালিতে বিজেপির এই বড়সড়ো ভাঙ্গন। এদিনের বিশাল সমাবেশে বিপুল সংখ্যক মানুষের তৃণমূলে যোগদান ঘটায় আগামী নির্বাচনে সন্দেশখালি যে সন্দেশখালিতেই ফিরছে তারই বার্তা দিল সন্দেশখালিবাসী, এমনটাই দাবি করেন জেলা সভাপতি বুরহানুল মুকাদ্দিম লিটন।