১৯ অগাস্ট ২০২৫, মঙ্গলবার, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানে চরবৃত্তি, গ্রেফতার নৌ-বাহিনীর বিশাল যাদব

চামেলি দাস
  • আপডেট : ২৭ জুন ২০২৫, শুক্রবার
  • / 83

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: পাকিস্তানের চরবৃত্তির মতো গুরুতর অভিযোগ উঠল ভারতীয় নৌ-বাহিনীর এক কর্মীর বিরুদ্ধে। বিশাল যাদব নামে নৌ-বাহিনীর ওই কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। বিশাল দিল্লির নৌ-বাহিনীর সদর দফতরে কর্মরত ছিল। জয়পুর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, দেশের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত গোপন তথ্য সে পাকিস্তানের হাতে তুলে দিত।

এমনকী ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও সে পাকিস্তানে পাচার করেছে। আর এই চরবৃত্তির জন্য সে প্রচুর টাকা পেত। শুধু ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর তথ্য পাচার করেই সে ৫০ হাজার টাকা পেয়েছে। বিশাল দিল্লির নৌ-বাহিনী সদর দফতরে ডিরেক্টরেট অব ডকইয়ার্ড-এর আপার ডিভিশন ক্লার্ক (ইউডিসি) হিসেবে কাজ করত।

নৌ-বাহিনীর মতো একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে কর্মরত এক সরকারি কর্মীর এই ধরনের গদ্দারি দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে পুলিশ-প্রশাসনের। তার সঙ্গে নৌ-বাহিনীর আর কেউ যুক্ত রয়েছে কি না তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ নিতে পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী যে ধারাবাহিক সামরিক অভিযান চালিয়েছিল সেই ‘অপারেশন সিঁদুর’ সম্পর্কিত গোপন তথ্য পাকিস্তানের কাছে ফাঁস করে দিয়েছিল বিশাল।

পুলিশের দাবি, হরিয়ানার রেওয়ারির বাসিন্দা বিশাল যাদব একজন ভারতীয় মহিলার ছদ্মবেশে একজন পাকিস্তানি মহিলা হ্যান্ডলারের কাছে দেশের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সংবেদনশীল তথ্য সরবরাহ করেছিল। পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার জয়পুরে বিশালকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এখন তাকে একাধিক তদন্ত-সংস্থার যৌথ তদন্তের মুখোমুখি হতে হবে।

পুলিশের দাবি, যাদব তাদের কাছে স্বীকার করেছে যে সে পাকিস্তানের কাছে এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদানের জন্য সবমিলিয়ে প্রায় ২ লক্ষ টাকা পেয়েছে। এর মধ্যে শুধু অপারেশন সিঁদুর সম্পর্কিত তথ্য ফাঁস করার জন্য ৫০ হাজার টাকা পেয়েছে। কিছু অর্থপ্রদান ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে করা হয়েছিল।

পুলিশের দাবি, বিশালের এই গুপ্তচরবৃত্তি ফেসবুক থেকে শুরু হয়েছিল। সেখানে ‘প্রিয়া শর্মা’ নামে ভুয়ো পরিচয়ে এক পাকিস্তানি হ্যান্ডলার যাদবকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায়। বিশাল সেটা গ্রহণ করে। তারপর তাদের যোগাযোগ নিয়মিত চলতে থাকে। পরে তারা হোয়াটসঅ্যাপেও চ্যাট করতে থাকে।

এমনকী টেলিগ্রামেও তারা চ্যাট করত। পুলিশ জানিয়েছে, যাদব প্রথমে ছোটখাটো তথ্য পাচার করার জন্য ৫,০০০ থেকে ৬,০০০ টাকা পেত। পরে ওই হ্যান্ডলার তাকে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের জন্য চাপ দিচ্ছিল। অর্থের প্রলোভনে বিশাল শেষপর্যন্ত নৌবাহিনীর সদর দফতর থেকে সংবেদনশীল তথ্য ফাঁস করতে শুরু করে।

বেশ কয়েকদিন ধরে তার তার সোশ্যাল মিডিয়া কার্যকলাপের উপর নজরদারি চালাচ্ছিল গোয়েন্দারা। পাকিস্তানি হ্যান্ডলারের সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগ নজরে আসার পরই গোয়েন্দারা বিশালের উপর বিশেষভাবে নজরদারি চালাতে শুরু করে। সেইমতো তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জয়পুরে আটক করা হয়। হরিয়ানার রেওয়ারি জেলার পুনসিকা গ্রামের বাসিন্দা বিশাল অনলাইন গেমিংয়েও আসক্ত বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

পুলিশের দাবি, বিশালের মোবাইল ফোনের ফরেনসিক তথ্য ঘেঁটে পাকিস্তানি হ্যান্ডলারের সঙ্গে তার প্রতিরক্ষা বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শেয়ার করা ও আর্থিক লেনদেনের যথেষ্ট প্রমাণ সামনে এসেছে। তার ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেনও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

পাকিস্তানে চরবৃত্তি, গ্রেফতার নৌ-বাহিনীর বিশাল যাদব

আপডেট : ২৭ জুন ২০২৫, শুক্রবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: পাকিস্তানের চরবৃত্তির মতো গুরুতর অভিযোগ উঠল ভারতীয় নৌ-বাহিনীর এক কর্মীর বিরুদ্ধে। বিশাল যাদব নামে নৌ-বাহিনীর ওই কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। বিশাল দিল্লির নৌ-বাহিনীর সদর দফতরে কর্মরত ছিল। জয়পুর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, দেশের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত গোপন তথ্য সে পাকিস্তানের হাতে তুলে দিত।

এমনকী ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও সে পাকিস্তানে পাচার করেছে। আর এই চরবৃত্তির জন্য সে প্রচুর টাকা পেত। শুধু ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর তথ্য পাচার করেই সে ৫০ হাজার টাকা পেয়েছে। বিশাল দিল্লির নৌ-বাহিনী সদর দফতরে ডিরেক্টরেট অব ডকইয়ার্ড-এর আপার ডিভিশন ক্লার্ক (ইউডিসি) হিসেবে কাজ করত।

নৌ-বাহিনীর মতো একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে কর্মরত এক সরকারি কর্মীর এই ধরনের গদ্দারি দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে পুলিশ-প্রশাসনের। তার সঙ্গে নৌ-বাহিনীর আর কেউ যুক্ত রয়েছে কি না তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ নিতে পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী যে ধারাবাহিক সামরিক অভিযান চালিয়েছিল সেই ‘অপারেশন সিঁদুর’ সম্পর্কিত গোপন তথ্য পাকিস্তানের কাছে ফাঁস করে দিয়েছিল বিশাল।

পুলিশের দাবি, হরিয়ানার রেওয়ারির বাসিন্দা বিশাল যাদব একজন ভারতীয় মহিলার ছদ্মবেশে একজন পাকিস্তানি মহিলা হ্যান্ডলারের কাছে দেশের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সংবেদনশীল তথ্য সরবরাহ করেছিল। পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার জয়পুরে বিশালকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এখন তাকে একাধিক তদন্ত-সংস্থার যৌথ তদন্তের মুখোমুখি হতে হবে।

পুলিশের দাবি, যাদব তাদের কাছে স্বীকার করেছে যে সে পাকিস্তানের কাছে এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদানের জন্য সবমিলিয়ে প্রায় ২ লক্ষ টাকা পেয়েছে। এর মধ্যে শুধু অপারেশন সিঁদুর সম্পর্কিত তথ্য ফাঁস করার জন্য ৫০ হাজার টাকা পেয়েছে। কিছু অর্থপ্রদান ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে করা হয়েছিল।

পুলিশের দাবি, বিশালের এই গুপ্তচরবৃত্তি ফেসবুক থেকে শুরু হয়েছিল। সেখানে ‘প্রিয়া শর্মা’ নামে ভুয়ো পরিচয়ে এক পাকিস্তানি হ্যান্ডলার যাদবকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায়। বিশাল সেটা গ্রহণ করে। তারপর তাদের যোগাযোগ নিয়মিত চলতে থাকে। পরে তারা হোয়াটসঅ্যাপেও চ্যাট করতে থাকে।

এমনকী টেলিগ্রামেও তারা চ্যাট করত। পুলিশ জানিয়েছে, যাদব প্রথমে ছোটখাটো তথ্য পাচার করার জন্য ৫,০০০ থেকে ৬,০০০ টাকা পেত। পরে ওই হ্যান্ডলার তাকে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের জন্য চাপ দিচ্ছিল। অর্থের প্রলোভনে বিশাল শেষপর্যন্ত নৌবাহিনীর সদর দফতর থেকে সংবেদনশীল তথ্য ফাঁস করতে শুরু করে।

বেশ কয়েকদিন ধরে তার তার সোশ্যাল মিডিয়া কার্যকলাপের উপর নজরদারি চালাচ্ছিল গোয়েন্দারা। পাকিস্তানি হ্যান্ডলারের সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগ নজরে আসার পরই গোয়েন্দারা বিশালের উপর বিশেষভাবে নজরদারি চালাতে শুরু করে। সেইমতো তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জয়পুরে আটক করা হয়। হরিয়ানার রেওয়ারি জেলার পুনসিকা গ্রামের বাসিন্দা বিশাল অনলাইন গেমিংয়েও আসক্ত বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

পুলিশের দাবি, বিশালের মোবাইল ফোনের ফরেনসিক তথ্য ঘেঁটে পাকিস্তানি হ্যান্ডলারের সঙ্গে তার প্রতিরক্ষা বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শেয়ার করা ও আর্থিক লেনদেনের যথেষ্ট প্রমাণ সামনে এসেছে। তার ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেনও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।