কালীগঞ্জে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী তমন্না খুনে মূল অভিযুক্ত গাওয়াল শেখ ও ছেলেকে গ্রেফতার, তদন্তে গতি পুলিশ প্রশাসনের
- আপডেট : ২৮ জুন ২০২৫, শনিবার
- / 334
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: কালীগঞ্জে দশ বছরের নাবালিকা তমন্না খাতুন খুনের ঘটনায় নতুন মোড়। গ্রেফতার করা হয়েছে দুই গুরুত্বপূর্ণ অভিযুক্তকে—তৃণমূলের বুথ সভাপতি গাওয়াল শেখ এবং তার ছেলে বিমল শেখকে। শুক্রবার রাতে বর্ধমানের কাটোয়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। এই নিয়ে মামলায় মোট গ্রেফতারের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯।

তমন্নার মা সাবিনা বিবি প্রথম থেকেই গাওয়ালের নাম তুলে ধরে বলেছিলেন, তিনিই বোমা ছোড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। পুলিশ সুপার অমরনাথ কে জানিয়েছেন, “গাওয়াল শেখ কালীগঞ্জ বোমা বিস্ফোরণের মূল অভিযুক্ত। তাঁকে ও তাঁর ছেলেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তল্লাশি অভিযান জারি রয়েছে, শীঘ্রই সব অভিযুক্ত গ্রেফতার হবে।”
গত ১৯ জুন ছিল কালীগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচন, আর ২৩ তারিখ ভোটগণনা। ফলপ্রকাশের আগেই তৃণমূলের বিজয় নিশ্চিত হওয়ায় এলাকায় বিজয় মিছিল বেরোয়। অভিযোগ, সেই মিছিল থেকেই সিপিএম সমর্থকদের বাড়ির দিকে বোমা ছোড়া হয়। ওই বোমার আঘাতে মৃত্যু হয় চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী তমন্নার। তমন্নার পরিবার দীর্ঘদিন ধরেই সিপিএমের সমর্থক হিসাবে পরিচিত।
গ্রেফতার হওয়া গাওয়াল শেখ তৃণমূলের কালীগঞ্জ বুথ সভাপতি। তমন্নার পরিবারের দায়ের করা FIR-এ গাওয়াল ও তার ছেলের নাম স্পষ্টভাবে ছিল। গাওয়ালের গ্রেফতারির পর তমন্নার মা বলেন, “ওই লোকটাই মূল মাথা। সব ওর পরিকল্পনায় হয়েছে। তবে ওর উপরে আরও কেউ আছে, পুলিশ তদন্ত করলেই সব বেরোবে।”
তৃণমূল নেতৃত্ব ঘটনাটি নিয়ে দলীয়ভাবে কড়া অবস্থান নিয়েছে। তৃণমূলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান রুকবানুর রহমান বলেন, “দুষ্কৃতীদের কোনও দল হয় না। যারা এই জঘন্য অপরাধ করেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। পুলিশ যেন নিরপেক্ষ তদন্ত করে।”
ঘটনায় বিজেপি কড়া সমালোচনায় মুখর। কৃষ্ণনগর নদিয়া উত্তর বিজেপির সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস বলেন, “চুনোপুঁটি ধরা হলেও বড় মাথারা এখনও ধরা ছোঁয়ার বাইরে। যারা এলাকা দখল করে ত্রাস সৃষ্টি করেছিল, তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নিতে পারবে না।”
সিপিএম নেতা এসএম সাদি বলেন, “পুলিশ সব জানত। দুষ্কৃতীদের পালাতে সাহায্য করেছে। এখন নাটক করে কিছুজনকে ধরছে। শনিবার আমাদের প্রতিবাদ সভা আছে, মানুষের ক্ষোভ সেখানে প্রকাশ পাবে। আমরা চাই, সমস্ত তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করা হোক।”
তমন্নার মৃত্যুতে এলাকায় চরম শোক ও উত্তেজনা ছড়িয়েছে। প্রতিবাদ ও জনআন্দোলন ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। পুলিশি হেফাজতে গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্তদের জেরা করে পুরো চক্রান্তের পেছনের ‘বড় মাথা’-দের নাম প্রকাশ্যে আনার দাবি তুলেছে সমস্ত বিরোধী দল।














































