কসবাকাণ্ডে বিতর্কিত মন্তব্য নিযে মদন মিত্রকে শোকজ করা হল, তিরস্কৃত কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও

- আপডেট : ২৯ জুন ২০২৫, রবিবার
- / 38
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: কসবা কাণ্ড শক্ত হাতে মোকাবিলা করছে প্রশাসন। অভিযোগ দায়ের হওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে । এই পরিস্থিতিতে সাউথ ক্যালকাটা ল’ কলেজের ছাত্রীর গণধর্ষণ কাণ্ড নিয়ে কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রের বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য দলের পক্ষ থেকে রবিবার শোকজ করা হল মদন মিত্রকে। আগামী তিনদিনের মধ্যে দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির কাছে এই শোকজ-এর জবাব দিতে বলা হয়েছে মদন মিত্রকে। একই সঙ্গে সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কেও সমালোচনা করা হয়েছে তাঁর মন্তব্যের জন্য।
সাউথ ক্যালকাটা ল’ কলেজের ছাত্রীর সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে তাকে অত্যন্ত জঘন্য এ ঘৃণ্য এবং নিদারুণ দুঃখজনক বলা হয়েছে তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে। অত্যন্ত সংবেদলশীল এই দুঃখজনক পাশবিক অত্যাচারের ঘটনায় পার্টির সর্বোচ্চ নেতৃত্ব গভীরভাবে দুঃখপ্রকাশ করেছে। দ্যর্থহীন ভাষায় নিন্দা করা হয়েছে ঘটনার। আশ্বস্ত করা হয়েছে, প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে। দুষ্কৃতীদের দ্রুততার সঙ্গে চিহ্নিত করে গ্রেফতারও করা হয়েছে।
এই অবস্থায় কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রের বক্তব্য অযাচিত, অপ্রয়োজনীয় এবং অসংবেদনশীল বলে মনে করছে দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। যা দলের ভাবমূর্তিকে আঘাত করেছে। একই সঙ্গে মদন মিত্রের মন্তব্য দলের অবস্থানের বিরুদ্ধাচরণ করেছে । এই কারণে তিনদিনের মধ্যে জবাব তলব করা হয়েছে বিধায়কের কাছ থেকে। তারপরই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
শুক্রবার কসবা কাণ্ডের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে কামারহাটির বিধায়ক একটি বেফাঁস মন্তব্য করে ফেলেন। তিনি বিনীতভাবেই প্রশ্ন তোলেন, নির্যাতিতা ছাত্রী কেন একা ক্যাম্পাসে গিয়েছিল, কেন সন্ধের পর ক্যাম্পাসে ছিল ইত্যাদি। স্পর্শকাতর বিষয়ে এই ধরনের প্রশ্ন তোলায় অস্বস্তির মুখে পড়তে হয় দলকে।
অন্যদিকে বরিষ্ঠ অইনজীবী ও সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় কসবা কাণ্ডে মন্তব্য করেছিলেন, একজন বন্ধু যদি বান্ধবীকে রেপ করে, তাহলে কীভাবে নিরাপত্তা দেওয়া যাবে? কীভাবে কলেজের ভেতর পুলিশ ঢুকবে? নিরাপত্তা তো সহপাঠীদেরই দিতে হবে।
শাসকদলের দুই নেতার এহেন মন্তব্য নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে দলের অ¨রেই। তাঁদের এই ধরনের মন্তব্যকে যে দলের সমর্থন নেই, সেকথা শনিবারই অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেসের এক্স হ্যান্ডেলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল দল , তাঁদের মন্তব্যগুলিকে কড়াভাবে নিন্দা করে। আমাদের অবস্থান স্পষ্ট, মহিলাদের ওপর অপরাধের ক্ষেত্রে বরাবরই জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়ে থাকে। যারা এই নৃশংস ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে যেন কঠোরতম শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। দলের এই অফিসিয়াল পোস্টকে রিপোস্ট করেন সাংসদ মহুয়া মৈত্র।
উল্লেখ্য, যখন দলের তরফে এই বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, তখন দলেরই বিধায়ক, সাংসদদের বিতর্কিত মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করল দলের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি। কমিটির তরফ থেকে কল্যাণ ব¨্যােপাধ্যায়কে সমালোচনা করা হযেছে। মহুয়া মৈত্রও কল্যাণ ব¨্যােপাধ্যায়কে নারী বিদ্বেষী বলেও সোস্যাল নিডিয়ায় পোস্ট করেছেন। অন্যদিকে দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির তরফ থেকে মদন মিত্রকে শোকজ -এর চিঠি পাঠিয়ে তিন দিনের মধ্যে জবাব তলব করেছেন সুব্রত বক্সি।