৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ধারাবির বস্তি ভেঙে বাণিজ্য কেন্দ্র গড়ছে আদানি গোষ্ঠী

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ধারাবির বস্তি ভেঙে উন্নয়ন চলছে আদানির নেতৃত্বে। তাও আবার যে সে বস্তি নয়। বিশ্বের সবচেয়ে বড় বস্তি হিসেবে পরিচিত মুম্বাইয়ের ধারাবিকে পুনর্গঠন করছে কেন্দ্রীয় শাসকদল বিজেপি ঘনিষ্ঠ আদানির সংস্থা। ধারাবির পুনর্গঠন প্রকল্পে একটি বড়সড় বাণিজ্যিক ব্যবসায়িক জেলা তৈরি করা হবে। এতে বস্তিবাসীর নাকি আদানির লাভ হবে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

সাম্প্রতিক খবর অনুযায়ী, ধারাবিকে শুধুমাত্র বাসস্থান নয়, বরং একটি অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রায় ৬০০ একর জমির একটি বড় অংশ বাণিজ্যিক উন্নয়নের জন্য ব্যবহার করা হবে। এখানে আধুনিক অফিস, দোকান, কো-ওয়ার্কিং সেন্টার, হোটেল এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি হবে।

এই বাণিজ্যিক অঞ্চলটি মূলত সেই জমি থেকে তৈরি করা হবে যা বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের জন্য বরাদ্দ নয়। এর প্রধান উদ্দেশ্য হল ধারাবিতে বর্তমানে যে ব্যবসাগুলি অসংগঠিতভাবে চলছে, সেগুলিকে সংগঠিত অর্থনীতির আওতায় আনা এবং সেখানকার অর্থনীতিকে অন্তত তিনগুণ বৃদ্ধি করা। এটি ধারাবি পুনর্গঠন প্রকল্পের ৯৬,০০০ কোটি টাকার খরচ সামলাতে সাহায্য করবে। আদানি গ্রুপ রাজ্য সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই প্রকল্পের দায়িত্ব পেয়েছে। তাদের লক্ষ্য হল ১০ লক্ষেরও বেশি বাসিন্দাকে পুনর্বাসন দেওয়া এবং ১২,০০০ এরও বেশি অসংগঠিত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া।

আরও পড়ুন: Adani Group-এর বিরুদ্ধে হিন্ডেনবার্গের যাবতীয় অভিযোগ খারিজ করল Sebi

পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই নতুন বাণিজ্যিক জেলা ধারাবির ছোট ব্যবসাগুলিকে জায়গা দেবে এবং নতুন ব্যবসাও গড়ে তুলবে। বড় কর্পোরেশনগুলিকে কিছু বাণিজ্যিক জায়গা লিজ দেওয়া হতে পারে, আবার ছোট শিল্প ও খুচরো ব্যবসায়ীদের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা বরাদ্দ করা হবে। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা এই বাণিজ্যিক জেলার সাফল্যর জন্য জরুরি। মুম্বই মেট্রোপলিটন রিজিওন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি ধারাবিকে রেলওয়ে, মেট্রো এবং প্রধান সড়কপথের সঙ্গে যুক্ত করার কাজ করছে, যা এই বাণিজ্যিক কেন্দ্রকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে।

আরও পড়ুন: ধারাভি পুনর্নির্মাণ আমাদের সবচেয়ে রূপান্তরকারী প্রকল্প: আদানি

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, একটি সুচিন্তিত বাণিজ্যিক পরিকল্পনা ধারাবির পরিচয়কে বদলে দিতে পারে। এখন প্রশ্ন হল, এতে বস্তিবাসীর উপর হবে নাকি আদানির? সরাসরি দাবি করা হচ্ছে যে এই প্রকল্পের মাধ্যমে বস্তিবাসীদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে। তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করা হবে। এতে ধারাবির সামগ্রিক অর্থনীতির উন্নতি হবে বলেও দাবি করা হয়েছে। তবে, যেহেতু আদানি গ্রুপ এই প্রকল্পের প্রধান দায়িত্বপ্রাপ্ত, তাই স্বাভাবিকভাবেই তাদেরও একটি বড় বাণিজ্যিক লাভ হবে। তারা বাণিজ্যিক জায়গা লিজ দিয়ে বা বিক্রি করে মুনাফা অর্জন করবে। এই ধরনের বৃহৎ প্রকল্পে সাধারণত সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে উভয় পক্ষেরই কিছু না কিছু সুবিধা থাকে।

 

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.
সর্বধিক পাঠিত

বাংলাদেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ইন্তেকাল করেছেন

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ধারাবির বস্তি ভেঙে বাণিজ্য কেন্দ্র গড়ছে আদানি গোষ্ঠী

আপডেট : ১ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ধারাবির বস্তি ভেঙে উন্নয়ন চলছে আদানির নেতৃত্বে। তাও আবার যে সে বস্তি নয়। বিশ্বের সবচেয়ে বড় বস্তি হিসেবে পরিচিত মুম্বাইয়ের ধারাবিকে পুনর্গঠন করছে কেন্দ্রীয় শাসকদল বিজেপি ঘনিষ্ঠ আদানির সংস্থা। ধারাবির পুনর্গঠন প্রকল্পে একটি বড়সড় বাণিজ্যিক ব্যবসায়িক জেলা তৈরি করা হবে। এতে বস্তিবাসীর নাকি আদানির লাভ হবে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

সাম্প্রতিক খবর অনুযায়ী, ধারাবিকে শুধুমাত্র বাসস্থান নয়, বরং একটি অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রায় ৬০০ একর জমির একটি বড় অংশ বাণিজ্যিক উন্নয়নের জন্য ব্যবহার করা হবে। এখানে আধুনিক অফিস, দোকান, কো-ওয়ার্কিং সেন্টার, হোটেল এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি হবে।

এই বাণিজ্যিক অঞ্চলটি মূলত সেই জমি থেকে তৈরি করা হবে যা বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের জন্য বরাদ্দ নয়। এর প্রধান উদ্দেশ্য হল ধারাবিতে বর্তমানে যে ব্যবসাগুলি অসংগঠিতভাবে চলছে, সেগুলিকে সংগঠিত অর্থনীতির আওতায় আনা এবং সেখানকার অর্থনীতিকে অন্তত তিনগুণ বৃদ্ধি করা। এটি ধারাবি পুনর্গঠন প্রকল্পের ৯৬,০০০ কোটি টাকার খরচ সামলাতে সাহায্য করবে। আদানি গ্রুপ রাজ্য সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই প্রকল্পের দায়িত্ব পেয়েছে। তাদের লক্ষ্য হল ১০ লক্ষেরও বেশি বাসিন্দাকে পুনর্বাসন দেওয়া এবং ১২,০০০ এরও বেশি অসংগঠিত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া।

আরও পড়ুন: Adani Group-এর বিরুদ্ধে হিন্ডেনবার্গের যাবতীয় অভিযোগ খারিজ করল Sebi

পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই নতুন বাণিজ্যিক জেলা ধারাবির ছোট ব্যবসাগুলিকে জায়গা দেবে এবং নতুন ব্যবসাও গড়ে তুলবে। বড় কর্পোরেশনগুলিকে কিছু বাণিজ্যিক জায়গা লিজ দেওয়া হতে পারে, আবার ছোট শিল্প ও খুচরো ব্যবসায়ীদের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা বরাদ্দ করা হবে। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা এই বাণিজ্যিক জেলার সাফল্যর জন্য জরুরি। মুম্বই মেট্রোপলিটন রিজিওন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি ধারাবিকে রেলওয়ে, মেট্রো এবং প্রধান সড়কপথের সঙ্গে যুক্ত করার কাজ করছে, যা এই বাণিজ্যিক কেন্দ্রকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে।

আরও পড়ুন: ধারাভি পুনর্নির্মাণ আমাদের সবচেয়ে রূপান্তরকারী প্রকল্প: আদানি

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, একটি সুচিন্তিত বাণিজ্যিক পরিকল্পনা ধারাবির পরিচয়কে বদলে দিতে পারে। এখন প্রশ্ন হল, এতে বস্তিবাসীর উপর হবে নাকি আদানির? সরাসরি দাবি করা হচ্ছে যে এই প্রকল্পের মাধ্যমে বস্তিবাসীদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে। তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করা হবে। এতে ধারাবির সামগ্রিক অর্থনীতির উন্নতি হবে বলেও দাবি করা হয়েছে। তবে, যেহেতু আদানি গ্রুপ এই প্রকল্পের প্রধান দায়িত্বপ্রাপ্ত, তাই স্বাভাবিকভাবেই তাদেরও একটি বড় বাণিজ্যিক লাভ হবে। তারা বাণিজ্যিক জায়গা লিজ দিয়ে বা বিক্রি করে মুনাফা অর্জন করবে। এই ধরনের বৃহৎ প্রকল্পে সাধারণত সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে উভয় পক্ষেরই কিছু না কিছু সুবিধা থাকে।