ধর্মঘটের বিরোধিতায় রাজ্য সরকারের কড়া নির্দেশ, ৯ জুলাই অফিস খোলা রাখার বিজ্ঞপ্তি জারি

- আপডেট : ৭ জুলাই ২০২৫, সোমবার
- / 183
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: আগামী ৯ জুলাই দেশব্যাপী শ্রমিক ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ১০টি কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠন। তার আগেই ধর্মঘটের বিরোধিতা করে কড়া পদক্ষেপের পথে হাঁটল রাজ্য সরকার। সোমবার রাজ্য অর্থ দফতর বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দিয়েছে, ধর্মঘটের দিন সব সরকারি এবং সরকার পোষিত দফতর খোলা থাকবে। ব্যতিক্রমী কারণ ছাড়া প্রত্যেক কর্মীকে অফিসে উপস্থিত থাকতে হবে, না হলে এক দিনের বেতন কাটা হবে এবং ওই দিনটি কর্মজীবন থেকেও বাদ পড়তে পারে।
অর্থ দফতরের বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, ধর্মঘটের দিন ‘ক্যাজ়্যুয়াল লিভ’ বা অর্ধদিবস ছুটিও গ্রহণযোগ্য নয়। কোনও কর্মী যদি অফিসে উপস্থিত না থাকেন, তবে তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হবে। নোটিসের সন্তোষজনক জবাব না দিলে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে বিভাগীয় পদক্ষেপও করা হতে পারে।
তবে কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে ছাড় থাকবে:
-
কেউ হাসপাতালে ভর্তি থাকলে
-
পরিবারে কারও মৃত্যু হলে
-
৮ জুলাইয়ের আগে থেকে কেউ গুরুতর অসুস্থ হয়ে ছুটিতে থাকলে
-
পূর্বনির্ধারিত মাতৃত্বকালীন ছুটি, চাইল্ড কেয়ার লিভ, চিকিৎসাজনিত ছুটি বা আর্নড লিভ থাকলে
এই সমস্ত ক্ষেত্রেই শর্তসাপেক্ষে ছুটি মঞ্জুর করা হবে। ৩১ জুলাইয়ের মধ্যেই এই বিষয়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শেষ হবে বলে জানানো হয়েছে।
২০০৮ সালের পর থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কখনও বন্ধ ডাকেননি। বিরোধী নেত্রী থাকাকালীনও তিনি ধর্মঘট এবং বন্ধের রাজনীতির বিরোধিতা করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর বারবার তিনি কর্মসংস্কৃতি ও অফিস সচল রাখার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তারই প্রতিফলন এবারকার বিজ্ঞপ্তিতে।
কেন্দ্রের নতুন শ্রম কোডের বিরোধিতায় ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ১০টি শ্রমিক সংগঠন। পুরনো ২৯টি শ্রম আইন বাতিল বা সংশোধন করে চারটি নতুন শ্রম কোড চালু করেছে কেন্দ্র। শ্রমিক সংগঠনগুলির আশঙ্কা, এতে শ্রমিকদের একাধিক অধিকার লঙ্ঘিত হবে। ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি, চুক্তিভিত্তিক কাজ বন্ধ করে স্থায়ী নিয়োগ, বেসরকারিকরণের বিরোধিতা-সহ একাধিক দাবি জানিয়ে এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।
সিপিএম-ঘনিষ্ঠ কো-অর্ডিনেশন কমিটির নেতা বিশ্বজিৎ গুপ্ত চৌধুরী বলেন, “এই নির্দেশিকা সরকারি কর্মীদের অধিকার হরণ করছে। তাই কর্মীরা এই আদেশ উপেক্ষা করেই বন্ধে শামিল হবেন।”
অন্যদিকে তৃণমূল সমর্থিত সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের আহ্বায়ক প্রকাশ নায়েক বলেন, “আমরা রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তকে পূর্ণ সমর্থন করি। যাঁরা উন্নয়ন ও কর্মসংস্কৃতির বিরোধী, তাঁরাই বিরোধিতা করছেন। আগামী ৯ জুলাই সব কর্মী অফিসে উপস্থিত থেকে ধর্মঘট ব্যর্থ করবেন।”