১৩ অক্টোবর ২০২৫, সোমবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

QR কোড বাধ্যতামূলক করে মুসলিম দোকানদারদের টার্গেট করা হচ্ছে কি?

আফিয়া‌‌ নৌশিন
  • আপডেট : ১৩ জুলাই ২০২৫, রবিবার
  • / 95

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: উত্তরপ্রদেশে কাঁওয়ার যাত্রা শুরু হতেই সরকার নির্দেশ দিয়েছে, যাত্রাপথে থাকা সব খাবারের দোকানে QR কোড স্টিকার লাগাতে হবে। QR কোড স্ক্যান করলে দোকানের মালিকের নাম, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, ঠিকানা ও মেনুর তথ্য দেখা যাবে। সরকার বলছে, এই ব্যবস্থা তীর্থযাত্রীদের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য। কিন্তু অনেকেই বলছেন, এর আসল উদ্দেশ্য মুসলিম দোকানদারদের চিহ্নিত করা এবং টার্গেট করা।

গত বছরও একই ধরনের একটি নির্দেশিকা নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল, যেখানে দোকানের মালিকের নামফলক বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। সেই নির্দেশ সুপ্রিম কোর্ট স্থগিত করেছিল। এবার QR কোড নিয়ে আবারও সেই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

AIMIM নেতা আসাদুদ্দিন ওয়াইসি প্রশ্ন তুলেছেন, সরকার কেন সুপ্রিম কোর্টের আগের আদেশ মানছে না? কংগ্রেস সাংসদ ইমরান মাসুদ বলেছেন, “উৎসবের নাম করে মানুষকে বিভক্ত করা হচ্ছে।”
অন্যদিকে সমাজবাদী পার্টির নেতা বলছেন, এটা এক ধরনের ‘সন্ত্রাস’, যা সমাজে বিভাজন সৃষ্টি করছে।

আরও পড়ুন: অমরনাথ যাত্রায় বন্ধ কপ্টার পরিষেবা, পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তায় ‘নো ফ্লাই জোন’

বিভিন্ন জায়গায় দেখা গেছে, কিছু গোষ্ঠী দোকানে গিয়ে QR কোড স্ক্যান করছে, দোকানদারদের ধর্ম জিজ্ঞাসা করছে, এমনকি একজন দোকানিকে পোশাক খুলে ধর্ম প্রমাণ করতেও বলা হয়েছে।
এমনকি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সদস্যরা “হিন্দু-বান্ধব” দোকান চিহ্নিত করে গেরুয়া পতাকা ও হিন্দু দেবতার ছবি লাগাচ্ছেন। এর ফলে মুসলিম দোকানদাররা আতঙ্কে দোকান বন্ধ রাখছেন।

এই পরিস্থিতিতেও সরকার বলছে, এটি কোনো ধর্মকে টার্গেট করার জন্য নয়, বরং এটা তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য। বিজেপি মুখপাত্র বলেছেন, “তীর্থযাত্রীরা জানার অধিকার রাখে কে তাদের খাবার তৈরি করছে।”

অন্যদিকে দিল্লিতেও কাঁওয়ার যাত্রার সময় মাংসের দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যদিও দিল্লি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন বলেছে, তাদের আইনে এমন বাধ্যতামূলক করার ক্ষমতা নেই। তবুও কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে, মুসলিম দোকানদাররা নিজেরাই ভয়ে দোকান বন্ধ রাখছেন। সরকার বলছে এটি স্বচ্ছতা আর নিরাপত্তার জন্য, কিন্তু বিরোধীরা মনে করছে এর পেছনে ধর্মীয় উদ্দেশ্য আছে। QR কোড নিয়ে এই বিতর্ক কাঁওয়ার যাত্রার সময় মুসলিম ব্যবসায়ীদের প্রতি বৈষম্যের অভিযোগ আরও বাড়িয়ে তুলছে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

QR কোড বাধ্যতামূলক করে মুসলিম দোকানদারদের টার্গেট করা হচ্ছে কি?

আপডেট : ১৩ জুলাই ২০২৫, রবিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: উত্তরপ্রদেশে কাঁওয়ার যাত্রা শুরু হতেই সরকার নির্দেশ দিয়েছে, যাত্রাপথে থাকা সব খাবারের দোকানে QR কোড স্টিকার লাগাতে হবে। QR কোড স্ক্যান করলে দোকানের মালিকের নাম, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, ঠিকানা ও মেনুর তথ্য দেখা যাবে। সরকার বলছে, এই ব্যবস্থা তীর্থযাত্রীদের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য। কিন্তু অনেকেই বলছেন, এর আসল উদ্দেশ্য মুসলিম দোকানদারদের চিহ্নিত করা এবং টার্গেট করা।

গত বছরও একই ধরনের একটি নির্দেশিকা নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল, যেখানে দোকানের মালিকের নামফলক বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। সেই নির্দেশ সুপ্রিম কোর্ট স্থগিত করেছিল। এবার QR কোড নিয়ে আবারও সেই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

AIMIM নেতা আসাদুদ্দিন ওয়াইসি প্রশ্ন তুলেছেন, সরকার কেন সুপ্রিম কোর্টের আগের আদেশ মানছে না? কংগ্রেস সাংসদ ইমরান মাসুদ বলেছেন, “উৎসবের নাম করে মানুষকে বিভক্ত করা হচ্ছে।”
অন্যদিকে সমাজবাদী পার্টির নেতা বলছেন, এটা এক ধরনের ‘সন্ত্রাস’, যা সমাজে বিভাজন সৃষ্টি করছে।

আরও পড়ুন: অমরনাথ যাত্রায় বন্ধ কপ্টার পরিষেবা, পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তায় ‘নো ফ্লাই জোন’

বিভিন্ন জায়গায় দেখা গেছে, কিছু গোষ্ঠী দোকানে গিয়ে QR কোড স্ক্যান করছে, দোকানদারদের ধর্ম জিজ্ঞাসা করছে, এমনকি একজন দোকানিকে পোশাক খুলে ধর্ম প্রমাণ করতেও বলা হয়েছে।
এমনকি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সদস্যরা “হিন্দু-বান্ধব” দোকান চিহ্নিত করে গেরুয়া পতাকা ও হিন্দু দেবতার ছবি লাগাচ্ছেন। এর ফলে মুসলিম দোকানদাররা আতঙ্কে দোকান বন্ধ রাখছেন।

এই পরিস্থিতিতেও সরকার বলছে, এটি কোনো ধর্মকে টার্গেট করার জন্য নয়, বরং এটা তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য। বিজেপি মুখপাত্র বলেছেন, “তীর্থযাত্রীরা জানার অধিকার রাখে কে তাদের খাবার তৈরি করছে।”

অন্যদিকে দিল্লিতেও কাঁওয়ার যাত্রার সময় মাংসের দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যদিও দিল্লি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন বলেছে, তাদের আইনে এমন বাধ্যতামূলক করার ক্ষমতা নেই। তবুও কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে, মুসলিম দোকানদাররা নিজেরাই ভয়ে দোকান বন্ধ রাখছেন। সরকার বলছে এটি স্বচ্ছতা আর নিরাপত্তার জন্য, কিন্তু বিরোধীরা মনে করছে এর পেছনে ধর্মীয় উদ্দেশ্য আছে। QR কোড নিয়ে এই বিতর্ক কাঁওয়ার যাত্রার সময় মুসলিম ব্যবসায়ীদের প্রতি বৈষম্যের অভিযোগ আরও বাড়িয়ে তুলছে।