১৮ অক্টোবর ২০২৫, শনিবার, ৩১ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেশের স্বার্থের চেয়ে বড় মোদি-নেতানিয়াহু বন্ধুত্ব? জয়রাম রমেশ

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার
  • / 243

নয়াদিল্লি, ১৫ জুলাই : দেশের স্বার্থের চেয়ে বড় মোদি-নেতানিয়াহু বন্ধুত্ব? প্রশ্ন জয়রাম রমেশের। গাজা ভূখণ্ডে ইসরাইলের লাগাতার হামলা এবং গণহত্যা চালানো সত্বেও ভারত সরকার নীরব, ইসরাইলের বিরুদ্ধে একটি কথাও বলতে নারাজ কেন? প্রশ্ন তুললেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ।

মঙ্গলবার তাঁর এক্স হ্যাণ্ডেলে রমেশ লেখেন, কেন্দ্রীয় সরকারের এই নীরবতা সর্বোচ্চ স্তরের উদাসীনতা ছাড়া অন্য কিছু নয়। আর ভারতের বহু পুরনো যে অবস্থান ছিল তার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সুসম্পর্কের নিন্দা করে এদিন জয়রাম রমেশ লিখেছেন, দেশের স্বার্থের থেকে ব্যক্তিগত সম্পর্কে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ৫৮ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে ইহুদি সেনারা। বেশিরভাগই মহিলা এবং শিশু। ১ লক্ষ ৩৯ হাজারের বেশি মানুষ জখম। এছাড়া ক্ষেপণাস্ত্র হানায় ভেঙে পড়া ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আরও কত যে মানুষের মৃত্যু হয়েছে তার হিসেব নেই। লাগাতার বোমাবর্ষণ করে গাজার সমস্ত পরিকাঠামো নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে এর বিরুদ্ধে মানুষ সরব। এমন কি ইসরাইলের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত এই ঘটনার নিন্দা করেছেন। শুধু মোদি নীরব। এই নীরবতা লজ্জার, মর্যাদাহানিকর এবং ঐতিহাসিকভাবে ভারত পশ্চিম এশিয়ায় যে ভূমিকা গ্রহণ করেছে তার পুরোপুরি বিরোধী।

তিনি লিখেছেন, গত ২ মার্চ ইসরাইল গাজার মূল সীমানা বন্ধ করে দেয়। এর ফলে গাজার ২৩ লক্ষ লোকের  খাবারদাবার, ওষুধ, ত্রাণ কিছুই নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। ইসরাইল এভাবে ওদের অনাহারে রেখে হত্যা করতে চাইছে। ইতিমধ্যেই খবর এসেছে, না খেয়ে ৮০০ জনের মৃত্যু হয়েছে গাজায়। গত জুন মাসে যখন ইসরাইল বোমা মেরে রাষ্ট্রসংঘের তৈরি নুসইরাত বাস্তুহারা শিবির ধ্বংস করে দেয় তখনই আমি মোদির নীরবতার নিন্দা করি। পরে ওখান থেকে যে ছবি এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, ক্ষেপণাস্ত্রে ‘ মেড ইন ইণ্ডিয়া ‘ লেখা। তার মানে কি ভারত এই হামলার অংশীদার হয়ে উঠেছে।

আরও পড়ুন: Interim PM Sushila Karki-কে ফোন প্রধানমন্ত্রী মোদির

তারপর রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের ইসরাইল বিরোধী ভোটাভুটিতে ভারত অংশ নিল না। ওদিকে ইসরাইল যখন এক মানচিত্র বের করে দেখাল যে জম্মু-কাশ্মীর পাকিস্তানে অবস্থিত এবং উত্তরপূর্ব ভারত নেপালের অংশ তখন মোদি সরকার ইসরাইলের বিরুদ্ধে নিন্দাসূচক কোনও বিবৃতি পর্যন্ত দিল না। এই বিষয়টিই কংগ্রেসের সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধি বলেছিলেন, ‘ এ শুধু নীরবতা নয়, মূল্যবোধের আত্মসমর্পণ’। আসলে যায়নবাদ এবং হিন্দুত্ববাদের সমধর্মিতার কারণেই মোদির সঙ্গে নেতানিয়াহুর এত দহরমমহরম।

আরও পড়ুন: কোনও ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র হবে না: নেতানিয়াহু

আরও পড়ুন: মোদির বারাণসী সফরের আগে ২০০ বিরোধী নেতাকর্মী গৃহবন্দি

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

দেশের স্বার্থের চেয়ে বড় মোদি-নেতানিয়াহু বন্ধুত্ব? জয়রাম রমেশ

আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার

নয়াদিল্লি, ১৫ জুলাই : দেশের স্বার্থের চেয়ে বড় মোদি-নেতানিয়াহু বন্ধুত্ব? প্রশ্ন জয়রাম রমেশের। গাজা ভূখণ্ডে ইসরাইলের লাগাতার হামলা এবং গণহত্যা চালানো সত্বেও ভারত সরকার নীরব, ইসরাইলের বিরুদ্ধে একটি কথাও বলতে নারাজ কেন? প্রশ্ন তুললেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ।

মঙ্গলবার তাঁর এক্স হ্যাণ্ডেলে রমেশ লেখেন, কেন্দ্রীয় সরকারের এই নীরবতা সর্বোচ্চ স্তরের উদাসীনতা ছাড়া অন্য কিছু নয়। আর ভারতের বহু পুরনো যে অবস্থান ছিল তার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সুসম্পর্কের নিন্দা করে এদিন জয়রাম রমেশ লিখেছেন, দেশের স্বার্থের থেকে ব্যক্তিগত সম্পর্কে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ৫৮ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে ইহুদি সেনারা। বেশিরভাগই মহিলা এবং শিশু। ১ লক্ষ ৩৯ হাজারের বেশি মানুষ জখম। এছাড়া ক্ষেপণাস্ত্র হানায় ভেঙে পড়া ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আরও কত যে মানুষের মৃত্যু হয়েছে তার হিসেব নেই। লাগাতার বোমাবর্ষণ করে গাজার সমস্ত পরিকাঠামো নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে এর বিরুদ্ধে মানুষ সরব। এমন কি ইসরাইলের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত এই ঘটনার নিন্দা করেছেন। শুধু মোদি নীরব। এই নীরবতা লজ্জার, মর্যাদাহানিকর এবং ঐতিহাসিকভাবে ভারত পশ্চিম এশিয়ায় যে ভূমিকা গ্রহণ করেছে তার পুরোপুরি বিরোধী।

তিনি লিখেছেন, গত ২ মার্চ ইসরাইল গাজার মূল সীমানা বন্ধ করে দেয়। এর ফলে গাজার ২৩ লক্ষ লোকের  খাবারদাবার, ওষুধ, ত্রাণ কিছুই নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। ইসরাইল এভাবে ওদের অনাহারে রেখে হত্যা করতে চাইছে। ইতিমধ্যেই খবর এসেছে, না খেয়ে ৮০০ জনের মৃত্যু হয়েছে গাজায়। গত জুন মাসে যখন ইসরাইল বোমা মেরে রাষ্ট্রসংঘের তৈরি নুসইরাত বাস্তুহারা শিবির ধ্বংস করে দেয় তখনই আমি মোদির নীরবতার নিন্দা করি। পরে ওখান থেকে যে ছবি এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, ক্ষেপণাস্ত্রে ‘ মেড ইন ইণ্ডিয়া ‘ লেখা। তার মানে কি ভারত এই হামলার অংশীদার হয়ে উঠেছে।

আরও পড়ুন: Interim PM Sushila Karki-কে ফোন প্রধানমন্ত্রী মোদির

তারপর রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের ইসরাইল বিরোধী ভোটাভুটিতে ভারত অংশ নিল না। ওদিকে ইসরাইল যখন এক মানচিত্র বের করে দেখাল যে জম্মু-কাশ্মীর পাকিস্তানে অবস্থিত এবং উত্তরপূর্ব ভারত নেপালের অংশ তখন মোদি সরকার ইসরাইলের বিরুদ্ধে নিন্দাসূচক কোনও বিবৃতি পর্যন্ত দিল না। এই বিষয়টিই কংগ্রেসের সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধি বলেছিলেন, ‘ এ শুধু নীরবতা নয়, মূল্যবোধের আত্মসমর্পণ’। আসলে যায়নবাদ এবং হিন্দুত্ববাদের সমধর্মিতার কারণেই মোদির সঙ্গে নেতানিয়াহুর এত দহরমমহরম।

আরও পড়ুন: কোনও ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র হবে না: নেতানিয়াহু

আরও পড়ুন: মোদির বারাণসী সফরের আগে ২০০ বিরোধী নেতাকর্মী গৃহবন্দি