ব্রহ্মপুত্র নদীতে বিশ্বের বৃহত্তম বাঁধ নির্মাণ শুরু করল চিন

- আপডেট : ২০ জুলাই ২০২৫, রবিবার
- / 41
নয়াদিল্লি, ২০ জুলাই: চিন তিব্বতের নিংচি শহরে ব্রহ্মপুত্র নদীর উপর বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ বাঁধ নির্মাণ শুরু করেছে। চিনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। এএফপির রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বেইজিং সরকার প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়।
এর মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৬৭.৮ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ১২ লক্ষ কোটি টাকা)। এই বাঁধটি ভারতের অরুণাচল প্রদেশ সীমান্তের অদূরে অবস্থিত, যা ভারত ও বাংলাদেশ—উভয় দেশেই গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু এই বাঁধটিকে ভারতের জন্য “জলবোমা” বলে আখ্যায়িত করেছেন। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ব্রহ্মপুত্র নদের উপর চিনের একতরফা বাঁধ নির্মাণ ভাটির দেশগুলির স্বার্থকে বিপন্ন করতে পারে।
জলপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ: এই বাঁধ চিনকে ব্রহ্মপুত্রের জলপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দেবে, যার ফলে অরুণাচল ও আসামে খরা বা বন্যার ঝুঁকি বাড়বে।
পরিবেশগত বিপর্যয়: প্রকল্পটি ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে গড়ে তোলা হচ্ছে। এতে নদীর জীববৈচিত্র্য, পলি প্রবাহ ও কৃষি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
জীবিকা হুমকির মুখে: উত্তর-পূর্ব ভারতের বহু কৃষক ও জেলে ব্রহ্মপুত্রের উপর নির্ভরশীল। জলপ্রবাহ কমে গেলে তাদের জীবিকাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
রাজনৈতিক উত্তেজনা: এই প্রকল্প ভারত-চিন সম্পর্ককে আরও উত্তপ্ত করতে পারে। ব্রহ্মপুত্রের জলবন্টন সংক্রান্ত চুক্তির মেয়াদও ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে।
আঞ্চলিক প্রভাব: বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের মতো ভাটির দেশগুলোতেও এই প্রকল্পের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
চিনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, প্রকল্পে পাঁচটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র থাকবে এবং এটি বছরে ৩০০ বিলিয়ন ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম, যা প্রায় ৩০ কোটি মানুষের চাহিদা পূরণে সক্ষম। তবে বিশ্লেষকদের মতে, চিনের এই উদ্যোগ দক্ষিণ এশিয়ার ভৌগলিক রাজনীতির জন্যও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।