২৮ জুলাই ২০২৫, সোমবার, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজায় অনাহারে মৃত্যুর মুখে এক লাখেরও বেশি শিশু

মোক্তার হোসেন মন্ডল
  • আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২৫, সোমবার
  • / 43

ইসরায়েলের টানা অবরোধে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। দুই বছরের কম বয়সী এক লাখেরও বেশি শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে এবং মৃত্যুর চরম ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে মিডল ইস্ট আই।

মে মাসের শেষদিকে সামান্য পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দিলেও টানা ১১ সপ্তাহ ধরে গাজা কার্যত অবরুদ্ধ। এ সময়কালে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রিত বিতর্কিত ত্রাণকেন্দ্রগুলোতে খাবার নিতে গিয়ে বহু ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ দিনের পর দিন না খেয়ে আছে। শিশুদের ওপরই এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে। গাজার জনসংযোগ দপ্তরের মতে, ফর্মুলা দুধের অভাবে দুই বছরের নিচে ১০ লাখেরও বেশি শিশু চরম মৃত্যুঝুঁকিতে।

রবিবার অনাহারে আরও পাঁচজন ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের অবরোধ শুরুর পর থেকে গাজায় অনাহারে ও অপুষ্টিতে মারা গেছেন অন্তত ১২৭ জন, যার মধ্যে ৮৫ জনের বেশি শিশু।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ৬০ হাজার ফিলিস্তিনি।

এদিকে ইসরায়েল জানিয়েছে, গাজায় আকাশপথে ত্রাণ ফেলা হচ্ছে। তবে উত্তর গাজায় এক ত্রাণের বাক্স একটি তাঁবুর ওপর পড়লে অন্তত ১১ জন আহত হন। মিসর থেকেও রাফা ক্রসিং হয়ে কিছু ত্রাণ ট্রাক প্রবেশ করতে শুরু করেছে।

এ অবস্থায়, আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের ত্রাণবাহী জাহাজ ‘হান্দালা’কে আন্তর্জাতিক জলসীমায় আটক করে জাহাজের আরোহীদের ‘অপহরণ’ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। জাহাজটি তখন গাজার উপকূল থেকে প্রায় ৪৭ কিলোমিটার দূরে ছিল।

এই মানবিক বিপর্যয়ের মাঝেই ইসরায়েলি হামলায় ও গুলিতে একদিনে ৫০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের বেসামরিক প্রতিরক্ষা দপ্তর। নিহতদের একাংশ ত্রাণকেন্দ্রের কাছেই ছিলেন বলে জানা গেছে।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

গাজায় অনাহারে মৃত্যুর মুখে এক লাখেরও বেশি শিশু

আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২৫, সোমবার

ইসরায়েলের টানা অবরোধে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। দুই বছরের কম বয়সী এক লাখেরও বেশি শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে এবং মৃত্যুর চরম ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে মিডল ইস্ট আই।

মে মাসের শেষদিকে সামান্য পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দিলেও টানা ১১ সপ্তাহ ধরে গাজা কার্যত অবরুদ্ধ। এ সময়কালে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রিত বিতর্কিত ত্রাণকেন্দ্রগুলোতে খাবার নিতে গিয়ে বহু ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ দিনের পর দিন না খেয়ে আছে। শিশুদের ওপরই এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে। গাজার জনসংযোগ দপ্তরের মতে, ফর্মুলা দুধের অভাবে দুই বছরের নিচে ১০ লাখেরও বেশি শিশু চরম মৃত্যুঝুঁকিতে।

রবিবার অনাহারে আরও পাঁচজন ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের অবরোধ শুরুর পর থেকে গাজায় অনাহারে ও অপুষ্টিতে মারা গেছেন অন্তত ১২৭ জন, যার মধ্যে ৮৫ জনের বেশি শিশু।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ৬০ হাজার ফিলিস্তিনি।

এদিকে ইসরায়েল জানিয়েছে, গাজায় আকাশপথে ত্রাণ ফেলা হচ্ছে। তবে উত্তর গাজায় এক ত্রাণের বাক্স একটি তাঁবুর ওপর পড়লে অন্তত ১১ জন আহত হন। মিসর থেকেও রাফা ক্রসিং হয়ে কিছু ত্রাণ ট্রাক প্রবেশ করতে শুরু করেছে।

এ অবস্থায়, আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের ত্রাণবাহী জাহাজ ‘হান্দালা’কে আন্তর্জাতিক জলসীমায় আটক করে জাহাজের আরোহীদের ‘অপহরণ’ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। জাহাজটি তখন গাজার উপকূল থেকে প্রায় ৪৭ কিলোমিটার দূরে ছিল।

এই মানবিক বিপর্যয়ের মাঝেই ইসরায়েলি হামলায় ও গুলিতে একদিনে ৫০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের বেসামরিক প্রতিরক্ষা দপ্তর। নিহতদের একাংশ ত্রাণকেন্দ্রের কাছেই ছিলেন বলে জানা গেছে।