০২ অগাস্ট ২০২৫, শনিবার, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
কূটনৈতিক দর-কষাকষিতে জিতল ঢাকা

১৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ইউনূস সরকারকে স্বস্তি দিলেন ট্রাম্প

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১ অগাস্ট ২০২৫, শুক্রবার
  • / 22

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : আন্তর্জাতিক বাণিজ্য দরকষাকষিতে এক কৌশলগত সাফল্য অর্জন করল বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের রফতানি পণ্যের উপর আরোপিত অতিরিক্ত ৩৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশে নামিয়ে এনেছেন; যা বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতায় মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের জন্য এক বড় স্বস্তি। বিশ্লেষকদের মতে, এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের ‘অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড’ পোশাক শিল্পকে রক্ষা করল এক গুরুতর সংকট থেকে।

চলতি জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্র অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিলে দেশে উদ্বেগ ছড়ায়। কারণ, এতে বাংলাদেশের রফতানি প্রতিযোগিতা হারাতে পারত, আর ভারত, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশ মার্কিন বাজারে এগিয়ে যেতে পারত।

আরও পড়ুন: জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে চায় ইউনূস সরকার

তবে একমাসের আলোচনায় ঢাকা ১৫ শতাংশ ছাড় আনতে সফল হয়। বর্তমানে গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক রয়েছে, নতুন হার অনুযায়ী অতিরিক্ত ২০ শতাংশ যোগ হবে; সর্বমোট ৩৫ শতাংশ নয়। ফলে পূর্ব ঘোষিত হারের তুলনায় এটি ১৫ শতাংশ কম। সরকার এটিকে কৌশলগত সফলতা হিসেবে দেখছে। এই সিদ্ধান্ত এসেছে এমন সময়ে, যখন ৫ আগস্ট গণ আন্দোলনের বর্ষপূর্তি ও ৮ আগস্ট ইউনূস সরকারের এক বছর পূর্তি। ফলে রাজনৈতিক ভাবেও এটি বড় সাফল্য।

সরকারের পক্ষ থেকে এই অর্জনের কৃতিত্ব দেওয়া হচ্ছে নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানকে, যিনি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা উভয় দিক সামলেছেন। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন জানান, ‘২০ শতাংশ শুল্কে আমরা এখনও প্রতিযোগিতায় থাকতে পারব। তবে আরও কম আশা ছিল।’

প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস একে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘আমাদের আলোচকরা চমৎকার কৌশলগত দক্ষতা দেখিয়েছেন এবং অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষা করেছেন।’ তিনি জানান, ফেব্রুয়ারি থেকেই আলোচনা চলছিল।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই শুল্কহারে বাংলাদেশ এখনও মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় থাকতে পারবে। যদিও ভারত কিছুটা এগিয়ে থাকবে, ৩৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হলে যা হত, তা এড়ানো গেছে। এই ছাড় শুধু অর্থনৈতিক নয়, বরং ইউনূস সরকারের কূটনৈতিক দক্ষতার প্রতিফলন, যা দেশীয় শিল্পকে রক্ষা ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আস্থা জুগিয়েছে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

কূটনৈতিক দর-কষাকষিতে জিতল ঢাকা

১৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ইউনূস সরকারকে স্বস্তি দিলেন ট্রাম্প

আপডেট : ১ অগাস্ট ২০২৫, শুক্রবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : আন্তর্জাতিক বাণিজ্য দরকষাকষিতে এক কৌশলগত সাফল্য অর্জন করল বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের রফতানি পণ্যের উপর আরোপিত অতিরিক্ত ৩৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশে নামিয়ে এনেছেন; যা বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতায় মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের জন্য এক বড় স্বস্তি। বিশ্লেষকদের মতে, এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের ‘অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড’ পোশাক শিল্পকে রক্ষা করল এক গুরুতর সংকট থেকে।

চলতি জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্র অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিলে দেশে উদ্বেগ ছড়ায়। কারণ, এতে বাংলাদেশের রফতানি প্রতিযোগিতা হারাতে পারত, আর ভারত, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশ মার্কিন বাজারে এগিয়ে যেতে পারত।

আরও পড়ুন: জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে চায় ইউনূস সরকার

তবে একমাসের আলোচনায় ঢাকা ১৫ শতাংশ ছাড় আনতে সফল হয়। বর্তমানে গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক রয়েছে, নতুন হার অনুযায়ী অতিরিক্ত ২০ শতাংশ যোগ হবে; সর্বমোট ৩৫ শতাংশ নয়। ফলে পূর্ব ঘোষিত হারের তুলনায় এটি ১৫ শতাংশ কম। সরকার এটিকে কৌশলগত সফলতা হিসেবে দেখছে। এই সিদ্ধান্ত এসেছে এমন সময়ে, যখন ৫ আগস্ট গণ আন্দোলনের বর্ষপূর্তি ও ৮ আগস্ট ইউনূস সরকারের এক বছর পূর্তি। ফলে রাজনৈতিক ভাবেও এটি বড় সাফল্য।

সরকারের পক্ষ থেকে এই অর্জনের কৃতিত্ব দেওয়া হচ্ছে নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানকে, যিনি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা উভয় দিক সামলেছেন। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন জানান, ‘২০ শতাংশ শুল্কে আমরা এখনও প্রতিযোগিতায় থাকতে পারব। তবে আরও কম আশা ছিল।’

প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস একে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘আমাদের আলোচকরা চমৎকার কৌশলগত দক্ষতা দেখিয়েছেন এবং অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষা করেছেন।’ তিনি জানান, ফেব্রুয়ারি থেকেই আলোচনা চলছিল।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই শুল্কহারে বাংলাদেশ এখনও মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় থাকতে পারবে। যদিও ভারত কিছুটা এগিয়ে থাকবে, ৩৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হলে যা হত, তা এড়ানো গেছে। এই ছাড় শুধু অর্থনৈতিক নয়, বরং ইউনূস সরকারের কূটনৈতিক দক্ষতার প্রতিফলন, যা দেশীয় শিল্পকে রক্ষা ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আস্থা জুগিয়েছে।