০৫ নভেম্বর ২০২৫, বুধবার, ১৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এক বছরে কমেছে আমদানি-রফতানি

পেট্রাপোল সীমান্তে বাণিজ্যে টানাপোড়েন অব্যাহত

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২ অগাস্ট ২০২৫, শনিবার
  • / 236

এম এ হাকিম, বনগাঁ: ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বাণিজ্যে টানাপড়েন চলছেই। গতবছর বাংলাদেশে গণআন্দোলনের জেরে শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতা হারায় এবং ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেন। সেই রাজনৈতিক অস্থিরতার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করে, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দর পেট্রাপোল সীমান্ত বাণিজ্যের ক্ষেত্রে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগে যেখানে প্রতিদিন ৫০০-৫৫০ ট্রাক পণ্য বাংলাদেশে রফতানি হতো, বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২৫০-৩০০ ট্রাকে। একইভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতেও আমদানি প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। প্রতিদিন গড়ে এখন ১০০টির কম ট্রাক। ফলে পেট্রাপোল সংলগ্ন এলাকায় পরিবহণ, গুদাম, হ্যান্ডলিং ও আনুষঙ্গিক ব্যবসাগুলিতে ব্যাপক খারাপ প্রভাব পড়েছে।

পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্টস স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্ত্তিক চক্রবর্তীর মতে, দুই দেশের পক্ষ থেকেই একাধিক বিধিনিষেধ এই সংকটের মূলে। ভারত বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে গত ৮ এপ্রিল, আর ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ ভারত থেকে সুতা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। পাশাপাশি ভারতও কিছু পণ্যের আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপ করেছে। এইসব পদক্ষেপের ফলে ব্যবসায়ী, শ্রমিক, পরিবহণ সংস্থা সব পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

পেট্রাপোল এক্সপোর্টার্স অ্যান্ড ইমপোর্টার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মীর আবদুল হাশেম মনে করেন, ‘বাণিজ্য স্বাভাবিক করতে হলে ভিসা নীতি সহজ করতে হবে। আগে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা বাণিজ্যিক ভিসায় ভারতে এসে সরাসরি পণ্য বেছে নিতেন। এখন সেই সুযোগ বন্ধ হওয়ায় পণ্য বাছাইয়ে সমস্যা হচ্ছে, ফলে আমদানি-রফতানি দুইই কমে যাচ্ছে।’ কার্ত্তিক চক্রবর্তীর দাবি, বছরে পেট্রাপোল দিয়ে ২৫ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হতো, বর্তমানে তা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা কাজ করছে, ফলে কেউ ঝুঁকি নিতে চাইছেন না।

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

এক বছরে কমেছে আমদানি-রফতানি

পেট্রাপোল সীমান্তে বাণিজ্যে টানাপোড়েন অব্যাহত

আপডেট : ২ অগাস্ট ২০২৫, শনিবার

এম এ হাকিম, বনগাঁ: ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বাণিজ্যে টানাপড়েন চলছেই। গতবছর বাংলাদেশে গণআন্দোলনের জেরে শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতা হারায় এবং ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেন। সেই রাজনৈতিক অস্থিরতার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করে, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দর পেট্রাপোল সীমান্ত বাণিজ্যের ক্ষেত্রে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগে যেখানে প্রতিদিন ৫০০-৫৫০ ট্রাক পণ্য বাংলাদেশে রফতানি হতো, বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২৫০-৩০০ ট্রাকে। একইভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতেও আমদানি প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। প্রতিদিন গড়ে এখন ১০০টির কম ট্রাক। ফলে পেট্রাপোল সংলগ্ন এলাকায় পরিবহণ, গুদাম, হ্যান্ডলিং ও আনুষঙ্গিক ব্যবসাগুলিতে ব্যাপক খারাপ প্রভাব পড়েছে।

পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্টস স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্ত্তিক চক্রবর্তীর মতে, দুই দেশের পক্ষ থেকেই একাধিক বিধিনিষেধ এই সংকটের মূলে। ভারত বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে গত ৮ এপ্রিল, আর ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ ভারত থেকে সুতা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। পাশাপাশি ভারতও কিছু পণ্যের আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপ করেছে। এইসব পদক্ষেপের ফলে ব্যবসায়ী, শ্রমিক, পরিবহণ সংস্থা সব পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

পেট্রাপোল এক্সপোর্টার্স অ্যান্ড ইমপোর্টার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মীর আবদুল হাশেম মনে করেন, ‘বাণিজ্য স্বাভাবিক করতে হলে ভিসা নীতি সহজ করতে হবে। আগে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা বাণিজ্যিক ভিসায় ভারতে এসে সরাসরি পণ্য বেছে নিতেন। এখন সেই সুযোগ বন্ধ হওয়ায় পণ্য বাছাইয়ে সমস্যা হচ্ছে, ফলে আমদানি-রফতানি দুইই কমে যাচ্ছে।’ কার্ত্তিক চক্রবর্তীর দাবি, বছরে পেট্রাপোল দিয়ে ২৫ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হতো, বর্তমানে তা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা কাজ করছে, ফলে কেউ ঝুঁকি নিতে চাইছেন না।