০৩ নভেম্বর ২০২৫, সোমবার, ১৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নিউইয়র্ক মেয়র নির্বাচন : পাচ্ছেন ইহুদি ভোটও, সমীক্ষায় এগিয়ে মামদানি

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ৪ অগাস্ট ২০২৫, সোমবার
  • / 146

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : নিউইয়র্ক সিটির পরবর্তী মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী জোহরান মামদানি ইয়াহুদি ভোটারদের মধ্যে ১৭ শতাংশ পয়েন্টের ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। সম্প্রতি জেনিথ রিসার্চ ও পাবলিক প্রগ্রেস সলিউশন্স পরিচালিত একটি সমীক্ষায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। জরিপ অনুযায়ী, মামদানি এককভাবে ৫০ শতাংশ ভোট পেয়ে তার চার প্রতিদ্বন্দ্বীর সম্মিলিত ভোটের তুলনায় এগিয়ে আছেন।

নির্বাচনী বিশ্লেষণে দেখা গেছে, নিউইয়র্কের মোট ৪৩ শতাংশ ইহুদি ভোটার জোহরান মামদানিকে সমর্থন করছেন। এর মধ্যে ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সি তরুণদের মধ্যে এই সমর্থনের হার সবচেয়ে বেশি; ৬৭ শতাংশ। অন্যদিকে, সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো পেয়েছেন ২৬ শতাংশ ইহুদি ভোট, আর বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামসের পক্ষে রয়েছেন মাত্র ১৫ শতাংশ ভোটার।

আরও পড়ুন: নেতানিয়াহু নিউইয়র্কে এলে, তাঁকে গ্রেফতার করা হবে : জোহরান মামদানি

এই সমীক্ষাটি বিশেষভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে, কারণ এটি প্রথমবারের মতো ইহুদি ভোটারদের দৃষ্টিভঙ্গি মূল্যায়ন করে ফল প্রকাশ করেছে। প্রাথমিক নির্বাচনের সময় মামদানির অবস্থান ছিল দ্বিতীয়, তবে এখন দেখা যাচ্ছে তিনি শক্ত অবস্থানে চলে এসেছেন।

আরও পড়ুন: পাকিস্তানকে তুলোধনা করল ইসরাইল

তবে মামদানির ইসরাইল-বিরোধী অবস্থান নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। তিনি গাজায় ইসরাইলের কর্মকাণ্ডকে সরাসরি ‘গণহত্যা’ বলে উল্লেখ করেছেন, ইসরাইলের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞার পক্ষে মত দিয়েছেন, এমনকী ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু নিউইয়র্কে এলে তাকে গ্রেফতারের দাবি তুলেছেন। এত কিছু সত্ত্বেও তরুণ এবং তুলনামূলকভাবে কম ধর্মাচরণকারী ইহুদি ভোটাররা মামদানির এই অবস্থানে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখাননি। বরং তারা মানবাধিকার ও সামাজিক ন্যায়বিচারের পক্ষে তার স্পষ্ট অবস্থানকে গুরুত্ব দিয়েছেন।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, মামদানির ফিলিস্তিনপন্থী অবস্থান তার প্রাথমিক ভোটারদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। বিশেষ করে নতুন ভোটারদের মধ্যে ৮৩ শতাংশই বলেছেন, তার এই অবস্থানই তাদের অনুপ্রাণিত করেছে।ধনকুবের ইহুদি ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের একটি শক্তিশালী মহল মামদানির বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে মাঠে নেমেছে। তারা ‘মামদানি নয়, আসুক অন্য যে কেউ’; এই বার্তা নিয়ে ঐক্যবদ্ধ প্রচারণা চালাচ্ছে।

প্রচারণায় বিপুল অর্থ ব্যয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন হেজ ফান্ড ব্যবস্থাপক রিকি স্যান্ডলার ও বিলিয়নেয়ার বিনিয়োগকারী বিল অ্যাকম্যান। রিকি স্যান্ডলার ইতিমধ্যেই পাঁচ লাখ ডলার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। অ্যাকম্যান জানিয়েছেন, প্রয়োজনে মামদানির প্রতিদ্বন্দ্বীকে জেতাতে তিনি শত শত কোটি টাকা খরচ করতেও প্রস্তুত।

এই চাপে থাকা সত্ত্বেও সমীক্ষা বলছে যে যদি প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে শুধুমাত্র কুমো থেকে যান, তবুও মামদানি ৫২ শতাংশ বনাম কুমোর ৪০ শতাংশ ভোটে এগিয়ে থাকবেন, যেখানে ৮ শতাংশ ভোটার এখনও সিদ্ধান্ত নেননি।

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

নিউইয়র্ক মেয়র নির্বাচন : পাচ্ছেন ইহুদি ভোটও, সমীক্ষায় এগিয়ে মামদানি

আপডেট : ৪ অগাস্ট ২০২৫, সোমবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : নিউইয়র্ক সিটির পরবর্তী মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী জোহরান মামদানি ইয়াহুদি ভোটারদের মধ্যে ১৭ শতাংশ পয়েন্টের ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। সম্প্রতি জেনিথ রিসার্চ ও পাবলিক প্রগ্রেস সলিউশন্স পরিচালিত একটি সমীক্ষায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। জরিপ অনুযায়ী, মামদানি এককভাবে ৫০ শতাংশ ভোট পেয়ে তার চার প্রতিদ্বন্দ্বীর সম্মিলিত ভোটের তুলনায় এগিয়ে আছেন।

নির্বাচনী বিশ্লেষণে দেখা গেছে, নিউইয়র্কের মোট ৪৩ শতাংশ ইহুদি ভোটার জোহরান মামদানিকে সমর্থন করছেন। এর মধ্যে ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সি তরুণদের মধ্যে এই সমর্থনের হার সবচেয়ে বেশি; ৬৭ শতাংশ। অন্যদিকে, সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো পেয়েছেন ২৬ শতাংশ ইহুদি ভোট, আর বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামসের পক্ষে রয়েছেন মাত্র ১৫ শতাংশ ভোটার।

আরও পড়ুন: নেতানিয়াহু নিউইয়র্কে এলে, তাঁকে গ্রেফতার করা হবে : জোহরান মামদানি

এই সমীক্ষাটি বিশেষভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে, কারণ এটি প্রথমবারের মতো ইহুদি ভোটারদের দৃষ্টিভঙ্গি মূল্যায়ন করে ফল প্রকাশ করেছে। প্রাথমিক নির্বাচনের সময় মামদানির অবস্থান ছিল দ্বিতীয়, তবে এখন দেখা যাচ্ছে তিনি শক্ত অবস্থানে চলে এসেছেন।

আরও পড়ুন: পাকিস্তানকে তুলোধনা করল ইসরাইল

তবে মামদানির ইসরাইল-বিরোধী অবস্থান নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। তিনি গাজায় ইসরাইলের কর্মকাণ্ডকে সরাসরি ‘গণহত্যা’ বলে উল্লেখ করেছেন, ইসরাইলের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞার পক্ষে মত দিয়েছেন, এমনকী ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু নিউইয়র্কে এলে তাকে গ্রেফতারের দাবি তুলেছেন। এত কিছু সত্ত্বেও তরুণ এবং তুলনামূলকভাবে কম ধর্মাচরণকারী ইহুদি ভোটাররা মামদানির এই অবস্থানে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখাননি। বরং তারা মানবাধিকার ও সামাজিক ন্যায়বিচারের পক্ষে তার স্পষ্ট অবস্থানকে গুরুত্ব দিয়েছেন।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, মামদানির ফিলিস্তিনপন্থী অবস্থান তার প্রাথমিক ভোটারদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। বিশেষ করে নতুন ভোটারদের মধ্যে ৮৩ শতাংশই বলেছেন, তার এই অবস্থানই তাদের অনুপ্রাণিত করেছে।ধনকুবের ইহুদি ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের একটি শক্তিশালী মহল মামদানির বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে মাঠে নেমেছে। তারা ‘মামদানি নয়, আসুক অন্য যে কেউ’; এই বার্তা নিয়ে ঐক্যবদ্ধ প্রচারণা চালাচ্ছে।

প্রচারণায় বিপুল অর্থ ব্যয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন হেজ ফান্ড ব্যবস্থাপক রিকি স্যান্ডলার ও বিলিয়নেয়ার বিনিয়োগকারী বিল অ্যাকম্যান। রিকি স্যান্ডলার ইতিমধ্যেই পাঁচ লাখ ডলার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। অ্যাকম্যান জানিয়েছেন, প্রয়োজনে মামদানির প্রতিদ্বন্দ্বীকে জেতাতে তিনি শত শত কোটি টাকা খরচ করতেও প্রস্তুত।

এই চাপে থাকা সত্ত্বেও সমীক্ষা বলছে যে যদি প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে শুধুমাত্র কুমো থেকে যান, তবুও মামদানি ৫২ শতাংশ বনাম কুমোর ৪০ শতাংশ ভোটে এগিয়ে থাকবেন, যেখানে ৮ শতাংশ ভোটার এখনও সিদ্ধান্ত নেননি।