১১ অগাস্ট ২০২৫, সোমবার, ২৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভেক বদল করেও গ্রেফতারি এড়াতে পারল না পারিজাত

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১১ অগাস্ট ২০২৫, সোমবার
  • / 28

পুবের কলম প্রতিবেদকঃ দূর্গাপুরের কাছে কোক-ওভেন থানার অন্তর্গত একটি স্থানে বিজেপির যুব নেতা  পারিজাত গাঙ্গুলিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। উল্লেখ্য, গরু ব্যবসায়ীরা যখন শনিবার দিন নিকটবর্তী হাট থেকে গরু কিনে পিক-আপ ভ্যানে তুলে নিজেদের গ্রামে ফিরছিলেন, তখন পারিজাত গাঙ্গুলির নেতৃত্বে ওই গরু ব্যবসায়ীদের আটক করে প্রবল নির্যাতন করা হয়।

পারিজাত গাঙ্গুলিরা বুজুর্গ ব্যক্তিদেরও ছাড় দেয়নি। তাদের মোটা দড়ি দিয়ে বেঁধে ব্যাপক নির্যাতন করা হয়। গালিগালাজ, অপমান করা ছাড়াও ‘জয় শ্রীরাম’ বলতেও বাধ্য করা হয়। পারিজাত গাঙ্গুলি এবং তার দলবল শুধু এই বুজুর্গ ব্যক্তিদের নির্যাতন করেই ক্ষান্ত হয়নি, তারা তাদের টাকা-পয়সা এবং গরুগুলিকে লুঠ করে নেয়। গরুগুলিকে ‘গাঙ্গুলি মহাশয়রা’ কোথায় পাচার করেছে, তার হদিশ এখনও পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন: আইআইএম জোকা কাণ্ডে সিট গঠন

কোক ওভেন থানা এই নির্যাতনের জন্য কয়েকজন বিজেপি লুটেরাকে গ্রেফতার করলেও আসল অপরাধীরা পুলিশের নাকের ডগা দিয়ে ফেরার হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত এই কান্ডের মূলহোতা পারিজাত গাঙ্গুলিকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে রবিবার গভীর রাতে গ্রেফতার করে। পারিজাতবাবু ওই দুষ্কর্ম করার পর পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে চলে গিয়েছিলেন পার্শ্ববর্তী রাজ্য ঝাড়খন্ডের ধানবাদে। পুলিশ রবিবার তাকে ধানবাদের গোপন ডেরা থেকে গ্রেফতার করে।

আরও পড়ুন: বেপরোয়া গাড়ি চালকদের আটক করছে পুলিশ সুন্দরবনের মাতলা সেতুতে

পারিজাতবাবু খবর পেয়েছিলেন, তার বিরুদ্ধে বুজুর্গদের নির্যাতন ও অপমান করার অভিযোগে থানায় এফআইআর হয়েছে। আর তিনি ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা বৈধ গরু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কি ধরনের নৃশংস আচরণ করেছিল, তার ভিডিয়ো ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে। মজার কথা, এই ভিডিয়ো সম্প্রচার করে পারিজাতের অনুচররাই।  সংখ্যালঘুদের উপর কি ধরনের অত্যাচার হচ্ছে, তা প্রচার করে বাহবা পাওয়ার উদ্দেশেই এই ভিডিয়ো ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: বারুইপুর পুলিশের তৎপরতায় ডাকাতির আগেই আগ্নেয়াস্ত্র সহ গ্রেফতার তিন

বেশ কয়েকটি মুসলিম সংগঠন পারিজাত ও তার সঙ্গীদের গ্রেফতারের জন্য আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটে স্মারকলিপি প্রদান করেছিল। কিন্তু পুলিশ পারিজাতকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

রবিবার গভীর রাতে পারিজাতকে গ্রেফতারের সময় তার ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন চেহারা। সে তার মাথার চুল কেটে ছোট করে ফেলেছে, ফুলবাবুসুলভ দাড়ি কামিয়ে ফেলেছে এবং কপালে দিয়েছে খুব বড় টিকা। আর শরীরে ধারণ করেছে গেরুয়া বস্ত্র।

স্বাভাবিকভাবে তাকে আগের চেহারায় চেনা মুশকিল। পারিজাতবাবু ভেবেছিলেন এভাবেই তিনি পুলিশের চোখে ধুলো দেবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই কাজে তিনি সফল হতে পারেননি। ভেকধারী পারিজাতকে পুলিশ গ্রেফতার করে এবং শান্তিভঙ্গকারী এই   দুষ্কৃতীকারীকে আদালতে তোলা হলে তাকে ৫ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে দেওয়া হয়েছে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ভেক বদল করেও গ্রেফতারি এড়াতে পারল না পারিজাত

আপডেট : ১১ অগাস্ট ২০২৫, সোমবার

পুবের কলম প্রতিবেদকঃ দূর্গাপুরের কাছে কোক-ওভেন থানার অন্তর্গত একটি স্থানে বিজেপির যুব নেতা  পারিজাত গাঙ্গুলিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। উল্লেখ্য, গরু ব্যবসায়ীরা যখন শনিবার দিন নিকটবর্তী হাট থেকে গরু কিনে পিক-আপ ভ্যানে তুলে নিজেদের গ্রামে ফিরছিলেন, তখন পারিজাত গাঙ্গুলির নেতৃত্বে ওই গরু ব্যবসায়ীদের আটক করে প্রবল নির্যাতন করা হয়।

পারিজাত গাঙ্গুলিরা বুজুর্গ ব্যক্তিদেরও ছাড় দেয়নি। তাদের মোটা দড়ি দিয়ে বেঁধে ব্যাপক নির্যাতন করা হয়। গালিগালাজ, অপমান করা ছাড়াও ‘জয় শ্রীরাম’ বলতেও বাধ্য করা হয়। পারিজাত গাঙ্গুলি এবং তার দলবল শুধু এই বুজুর্গ ব্যক্তিদের নির্যাতন করেই ক্ষান্ত হয়নি, তারা তাদের টাকা-পয়সা এবং গরুগুলিকে লুঠ করে নেয়। গরুগুলিকে ‘গাঙ্গুলি মহাশয়রা’ কোথায় পাচার করেছে, তার হদিশ এখনও পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন: আইআইএম জোকা কাণ্ডে সিট গঠন

কোক ওভেন থানা এই নির্যাতনের জন্য কয়েকজন বিজেপি লুটেরাকে গ্রেফতার করলেও আসল অপরাধীরা পুলিশের নাকের ডগা দিয়ে ফেরার হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত এই কান্ডের মূলহোতা পারিজাত গাঙ্গুলিকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে রবিবার গভীর রাতে গ্রেফতার করে। পারিজাতবাবু ওই দুষ্কর্ম করার পর পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে চলে গিয়েছিলেন পার্শ্ববর্তী রাজ্য ঝাড়খন্ডের ধানবাদে। পুলিশ রবিবার তাকে ধানবাদের গোপন ডেরা থেকে গ্রেফতার করে।

আরও পড়ুন: বেপরোয়া গাড়ি চালকদের আটক করছে পুলিশ সুন্দরবনের মাতলা সেতুতে

পারিজাতবাবু খবর পেয়েছিলেন, তার বিরুদ্ধে বুজুর্গদের নির্যাতন ও অপমান করার অভিযোগে থানায় এফআইআর হয়েছে। আর তিনি ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা বৈধ গরু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কি ধরনের নৃশংস আচরণ করেছিল, তার ভিডিয়ো ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে। মজার কথা, এই ভিডিয়ো সম্প্রচার করে পারিজাতের অনুচররাই।  সংখ্যালঘুদের উপর কি ধরনের অত্যাচার হচ্ছে, তা প্রচার করে বাহবা পাওয়ার উদ্দেশেই এই ভিডিয়ো ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: বারুইপুর পুলিশের তৎপরতায় ডাকাতির আগেই আগ্নেয়াস্ত্র সহ গ্রেফতার তিন

বেশ কয়েকটি মুসলিম সংগঠন পারিজাত ও তার সঙ্গীদের গ্রেফতারের জন্য আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটে স্মারকলিপি প্রদান করেছিল। কিন্তু পুলিশ পারিজাতকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

রবিবার গভীর রাতে পারিজাতকে গ্রেফতারের সময় তার ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন চেহারা। সে তার মাথার চুল কেটে ছোট করে ফেলেছে, ফুলবাবুসুলভ দাড়ি কামিয়ে ফেলেছে এবং কপালে দিয়েছে খুব বড় টিকা। আর শরীরে ধারণ করেছে গেরুয়া বস্ত্র।

স্বাভাবিকভাবে তাকে আগের চেহারায় চেনা মুশকিল। পারিজাতবাবু ভেবেছিলেন এভাবেই তিনি পুলিশের চোখে ধুলো দেবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই কাজে তিনি সফল হতে পারেননি। ভেকধারী পারিজাতকে পুলিশ গ্রেফতার করে এবং শান্তিভঙ্গকারী এই   দুষ্কৃতীকারীকে আদালতে তোলা হলে তাকে ৫ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে দেওয়া হয়েছে।