১২ ঘন্টা যানজট, তবু কেন পথকর দেবে মানুষ? প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের

- আপডেট : ১৮ অগাস্ট ২০২৫, সোমবার
- / 22
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : জাতীয় সড়ক ৫৪৪ এর এরাপ্পল্লী-মান্নুথি রুটের রাস্তার হাল খারাপ হওয়ায় কেরল হাইকোর্ট ত্রিচূড় জেলার পালিয়েক্কারা টোল বুথে শুল্ক নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। সেই রায়ের বিরুদ্ধে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সুপ্রিম কোর্টের শরণাপন্ন হয়। প্রধান বিচারপতি গাভাই, বিচারপতি কে বিনোদচন্দ্রন এবং বিচারপতি এন ভি আঞ্জারিয়ার বেঞ্চে এই মামলার বিচারের পর সোমবার রায় দেওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু বিচারপতিরা রায়দান স্থগিত রেখেছেন। ওই টোল বুথে শুল্ক সংগ্রহের দায়িত্বে ছিল গুরুবায়ুর ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। সেই সংস্থাও কেরল হাইকোর্ট এর রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিল। তাদের বক্তব্যও শুনেছেন বিচারপতিরা। বিচারপতিরা শুনানির সময়ে বলেন, গত সপ্তাহান্তে ওই রুটে ব্যাপক যানজট ছিল। ১২ ঘন্টার বেশি অবরুদ্ধ হয়ে ছিল জাতীয় সড়ক। এটা কেন হবে?
এর আগের শুনানিতেও বিচারপতিরা এই মামলা শুনতেই অনাগ্রহী ছিলেন। তাঁরা সেদিনও বলেছিলেন, জাতীয় সড়কের যা হাল তা গাড়ি চলার উপযুক্ত নয়। কেন মানুষ অনর্থক টোল(শুল্ক) দেবে? এদিন শুনানির শুরুতেই বিচারপতি বিনোদচন্দ্রন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে বলেন, গতকালের টাইমস অফ ইণ্ডিয়া কাগজ দেখেছেন? ওই রুটে ১২ ঘন্টা অবরুদ্ধ হয়ে ছিল। তুষার মেহতা বলেন, এটা বুঝি ঈশ্বরের কাজ! একটা লরি উলটে গিয়েছে। বিচারপতি তখন বলেন, না, লরি এমনি এমনি উলটে পড়েনি। গর্ত ছিল বলে উল্টেছে। তখন মেহতা বলেন, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ওখানে আন্ডারপাসের নির্মাণকাজ চলছে বলে বিকল্প একটা সার্ভিস রোড তৈরি করে দিয়েছে। আবার বর্ষার জন্য নির্মাণকাজে সমস্যা হচ্ছে।
এই সময়ে প্রধান বিচারপতি গাভাই জিজ্ঞেস করেন, ৬৫ কিমি সড়কের জন্য কত টোল দিতে হয়? মেহতা বলেন, ১৫০ টাকা। তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, যে পথ পার হতে ১২ ঘন্টা সময় লাগে সেখানে কেন লোকে ১৫০ টাকা দেবে? যে পথ পার হতে ১ ঘন্টা সময় লাগার কথা সেখানে ১১ ঘন্টা বেশি সময় লাগছে, আবার ১৫০ টাকাও নেওয়া হচ্ছে। তখন মেহতা বলেন, একটা রায় ছিল যেখানে বলা হয়েছে, এইরকম ক্ষেত্রে টোল একেবারে না নেওয়ার বদলে সমানুপাতিক হারে নিতে হবে। তখন বিচারপতি বিনোদচন্দ্রন বলেন, ১২ ঘন্টা যানজটের জন্য জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের উলটে গাড়ির মালিকদের কিছু টাকা দেওয়া উচিত।
যানজট না থাকলে ওই রাস্তা পার হতে এক ঘন্টা লাগে। তার জায়গায় ৩ ঘন্টা লাগুক। তাবলে ১২ ঘন্টা। আবার সমানুপাতিক শুল্ক নেওয়ার কথা বলছেন? কিছুই নেওয়া উচিত নয়। তখন মেহতা বলেন, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের লোকসানের বহর বেড়েই চলেছে। টোল সংগ্রহকারী সংস্থার আইনজীবীও কেরল হাইকোর্ট এর রায় খারিজ করতে বলেন। তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, কেরল হাইকোর্ট সাধারণ মানুষের স্বার্থেই রায় দিয়েছে।
কেরল হাইকোর্টে যাঁরা মামলা করেছিলেন তাঁদের আইনজীবী জয়ন্ত মুথরাজ বলেন, হাইকোর্ট অনেক দিক খতিয়ে দেখেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সব বক্তব্য শুনে প্রধান বিচারপতি বলেন, বর্ষার কথাও মাথায় রাখতে হবে। তিনি বলেন, আপাতত আমরা কোনও নির্দেশ দিচ্ছি না। তবে নির্দেশ দেওয়ার আগে সব পক্ষের কথাই ভাবব।