২১ অগাস্ট ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জেলে বন্দী মন্ত্রীদের পদ থেকে সরানোর জন্য কেন্দ্রের নয়া নিয়ম জারি, সরব মমতা

মারুফা খাতুন
  • আপডেট : ২০ অগাস্ট ২০২৫, বুধবার
  • / 32

পুবের কলম ওয়েবডেস্কবুধবার লোকসভা নতুন একটি বিল পাশ করেছে। যেখানে বলা হয়েছে,  প্রধানমন্ত্রী, কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অথবা অন্য কোনও মন্ত্রী যদি একটানা ৩০ দিনের বেশি জেলে বন্দী থাকেন তাহলে তাঁকে তাঁর মন্ত্রীত্বের পদ ছাড়তে হবে। এই বিলটি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ স্বয়ং পেশ করেছেন। আর ওনার এই পেশ করা বিল নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে সমালোচনা।

এমনকি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এই বিলের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘’কেন্দ্র গ্ণতন্ত্রকে একপ্রকার হিটলারি কায়দায় শাসন করতে চাইছে। এমনকি ইডি, সিবিআই-কে কাজে লাগিয়ে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছে। তিনি তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “মানুষের ভোটের দ্বারা তৈরি হয় সরকার। আর সেই সরকারকেই উপেক্ষা করে তদন্ত সংস্থাগুলির হাতে অপরিসীম ক্ষমতা তুলে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি সুপ্রিম কোর্ট যাদের ‘খাঁচাবন্দি তোতা’বলে অভিহিত করেছিল, সেই সর্বোচ্চ আদালতই ইডি-সিবিআইকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচিত সরকারের কাজ থামানোর চেষ্টা করে চলছে।”

আরও পড়ুন: সংবিধান সংশোধনী বিল পেশ প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তীব্র প্রতিবাদ

মমতা আরও বলেন, ‘’ আমাদের দেশের গণতন্ত্রকে আমাদেরকেই বাঁচাতে হবে। গণতন্ত্রের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার এই চেষ্টা সাধারণ মানুষ কখনও ক্ষমা করবে না। এমনকি আদলতেরও ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। দেশের সাংবিধানিক কাঠামো বিকৃত করার জন্য বড় ষড়যন্ত্র চলছে। এর আগে পশ্চিমবঙ্গ থেকে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও রেশন দুর্নীতি মামলায় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন। আর গ্রেফতার হওয়ার পাঁচ দিনের মাথায় পার্থকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরানো হয়েছিল। কিন্তু জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তার পরেও অন্তত সাড়ে তিন মাস মন্ত্রিত্বের পদে ছিলেন। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জামিনে মুক্ত হলেও পার্থ কিন্তু এখনও পর্যন্ত জেলে বন্দী।

আরও পড়ুন: Shramashree scheme: পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্পের ঘোষণা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতার

এমনকি অরবিন্দ কেজরীওয়ালও যখন আবগারী দুর্নীতি মামলায় জেলে বন্দী ছিলেন, তখনও তিনি তাঁর দায়িত্ব, কর্তব্য থেকে পিছ পা হননি। জেলে থাকা অবস্থাতেই তিনি তাঁর মুখ্যমন্ত্রী পদের সমস্ত দায়িত্ব সামলেছেন। কারণ, অভিযুক্ত মন্ত্রীকে সরানোর কোন নিয়ম কিন্তু সংবিধানে ছিল না। বিরোধী পক্ষ মনে করছে, হয়তো রাজনৈতিকভাবে প্রতিপক্ষকে দমন করার জন্যই একপ্রকার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া। সংবিধানে এতদিন এই ধরনের কোন বাধ্যবাধকতা না থাকলেও, কেন্দ্রের এই নতুন প্রস্তাবে আপাতভাবে সেই নিয়ম তৈরি হচ্ছে। আসলে এই বিলের উদ্দেশ্য হল, এক ব্যক্তি, একটাই দল। যাকে বলে এক সরকারের হাতেই সমস্ত ক্ষমতা তুলে দেওয়া।’’

আরও পড়ুন: রক্ত দেব, কলিজা দেব, বিনাযুদ্ধে এক ইঞ্চি জমি ছাড়ব না, স্লোগান বেঁধে দিলেন মমতা

 

 

 

 

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

জেলে বন্দী মন্ত্রীদের পদ থেকে সরানোর জন্য কেন্দ্রের নয়া নিয়ম জারি, সরব মমতা

আপডেট : ২০ অগাস্ট ২০২৫, বুধবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্কবুধবার লোকসভা নতুন একটি বিল পাশ করেছে। যেখানে বলা হয়েছে,  প্রধানমন্ত্রী, কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অথবা অন্য কোনও মন্ত্রী যদি একটানা ৩০ দিনের বেশি জেলে বন্দী থাকেন তাহলে তাঁকে তাঁর মন্ত্রীত্বের পদ ছাড়তে হবে। এই বিলটি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ স্বয়ং পেশ করেছেন। আর ওনার এই পেশ করা বিল নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে সমালোচনা।

এমনকি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এই বিলের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘’কেন্দ্র গ্ণতন্ত্রকে একপ্রকার হিটলারি কায়দায় শাসন করতে চাইছে। এমনকি ইডি, সিবিআই-কে কাজে লাগিয়ে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছে। তিনি তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “মানুষের ভোটের দ্বারা তৈরি হয় সরকার। আর সেই সরকারকেই উপেক্ষা করে তদন্ত সংস্থাগুলির হাতে অপরিসীম ক্ষমতা তুলে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি সুপ্রিম কোর্ট যাদের ‘খাঁচাবন্দি তোতা’বলে অভিহিত করেছিল, সেই সর্বোচ্চ আদালতই ইডি-সিবিআইকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচিত সরকারের কাজ থামানোর চেষ্টা করে চলছে।”

আরও পড়ুন: সংবিধান সংশোধনী বিল পেশ প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তীব্র প্রতিবাদ

মমতা আরও বলেন, ‘’ আমাদের দেশের গণতন্ত্রকে আমাদেরকেই বাঁচাতে হবে। গণতন্ত্রের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার এই চেষ্টা সাধারণ মানুষ কখনও ক্ষমা করবে না। এমনকি আদলতেরও ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। দেশের সাংবিধানিক কাঠামো বিকৃত করার জন্য বড় ষড়যন্ত্র চলছে। এর আগে পশ্চিমবঙ্গ থেকে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও রেশন দুর্নীতি মামলায় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন। আর গ্রেফতার হওয়ার পাঁচ দিনের মাথায় পার্থকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরানো হয়েছিল। কিন্তু জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তার পরেও অন্তত সাড়ে তিন মাস মন্ত্রিত্বের পদে ছিলেন। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জামিনে মুক্ত হলেও পার্থ কিন্তু এখনও পর্যন্ত জেলে বন্দী।

আরও পড়ুন: Shramashree scheme: পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্পের ঘোষণা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতার

এমনকি অরবিন্দ কেজরীওয়ালও যখন আবগারী দুর্নীতি মামলায় জেলে বন্দী ছিলেন, তখনও তিনি তাঁর দায়িত্ব, কর্তব্য থেকে পিছ পা হননি। জেলে থাকা অবস্থাতেই তিনি তাঁর মুখ্যমন্ত্রী পদের সমস্ত দায়িত্ব সামলেছেন। কারণ, অভিযুক্ত মন্ত্রীকে সরানোর কোন নিয়ম কিন্তু সংবিধানে ছিল না। বিরোধী পক্ষ মনে করছে, হয়তো রাজনৈতিকভাবে প্রতিপক্ষকে দমন করার জন্যই একপ্রকার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া। সংবিধানে এতদিন এই ধরনের কোন বাধ্যবাধকতা না থাকলেও, কেন্দ্রের এই নতুন প্রস্তাবে আপাতভাবে সেই নিয়ম তৈরি হচ্ছে। আসলে এই বিলের উদ্দেশ্য হল, এক ব্যক্তি, একটাই দল। যাকে বলে এক সরকারের হাতেই সমস্ত ক্ষমতা তুলে দেওয়া।’’

আরও পড়ুন: রক্ত দেব, কলিজা দেব, বিনাযুদ্ধে এক ইঞ্চি জমি ছাড়ব না, স্লোগান বেঁধে দিলেন মমতা