কৃষ্ণনগরে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীর মর্মান্তিক খুন, অভিযুক্ত দেশরাজ সিংহ পলাতক

- আপডেট : ২৬ অগাস্ট ২০২৫, মঙ্গলবার
- / 242
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: কৃষ্ণনগরের মানিকপাড়া এলাকায় সোমবার ঘটে গেল চাঞ্চল্যকর খুন। নিহত দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী ঈশিতা মল্লিকের সঙ্গে বাবার কলকাতার ভিক্টোরিয়া কলেজে যাওয়ার কথা থাকলেও শেষমেশ আর যাওয়া হয়নি। মেয়ের মৃত্যুর পর বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ে মা কুসুম মল্লিক বলেছেন, যদি ঈশিতা সেই দিনই কলকাতায় চলে যেত, তাহলে হয়তো এভাবে প্রাণ হারাতে হতো না। মঙ্গলবার সকাল থেকেই এলাকায় থমথমে পরিবেশ, ঈশিতার বাড়ির সামনে চলছে পুলিশি পাহারা। শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুরে কৃষ্ণনগরের বাড়িতে একা ছিলেন ঈশিতা। সেই সময় কাঁচরাপাড়া এলাকার বাসিন্দা অভিযুক্ত দেশরাজ সিংহ হঠাৎই তাঁর বাড়িতে ঢুকে পড়েন। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করা হচ্ছে, দেশরাজ ঈশিতাকে মাথায় গুলি করেন এবং বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। তবে নিহতের মা কুসুম মল্লিকের দাবি, গুলি চালানোর পর অভিযুক্ত তাঁর সামনেও পড়েন এবং তাঁকে বন্দুক দেখিয়ে হুমকি দেন। অভিযোগ, দেশরাজ ট্রিগার টিপলেও গুলি না বেরোনোয় তিনি পালিয়ে যান।
ঈশিতার মায়ের বক্তব্য, মেয়ের মাথায় দু’টি গুলি করা হয়েছে। তবে কতগুলি গুলি এবং কত দূর থেকে করা হয়েছে, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে স্পষ্ট হবে বলে জানিয়েছেন কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার ডিএসপি শিল্পী পাল। এমনকি মাথার ভিতরে বুলেট রয়েছে, নাকি বাইরে বেরিয়ে গিয়েছে, সেটিও এখনও পরিষ্কার নয়। নিহতের দিদিমা নাতনির স্মৃতি আঁকড়ে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন।
অন্যদিকে অভিযুক্ত দেশরাজ সিংহের কাঁচরাপাড়ার বাড়িতে এখন শুধুমাত্র তাঁর বাবা রয়েছেন। পরিবারের বাকিরা উত্তরপ্রদেশে আছেন। ঘটনার পর থেকে বাবা-মায়ের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ হয়নি। দেশরাজের বাবা জানিয়েছেন, তিনি পুলিশকে তদন্তে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করবেন। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার অমরনাথ কে জানান, অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে এবং খুব শিগগিরই তাঁকে ধরা হবে।
নিহত ঈশিতার বাবা জয়দেব মল্লিক প্রাক্তন সেনা কর্মী, বর্তমানে একটি ব্যাঙ্কে চাকরি করেন। তাঁর বড় মেয়ে দীপান্বিতা মল্লিক পড়াশোনার জন্য ওডিশায় রয়েছেন। ছোট মেয়ে ঈশিতা কাঁচরাপাড়ার একটি স্কুল থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পাস করেছেন এবং এ বছর কলকাতার একটি কলেজে ভর্তি হওয়ার কথা ছিল। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে ধারণা, সম্পর্কের টানাপোড়েন থেকেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।