মুসলিম বিশ্বের নিরাপত্তা কি নতুন পথে?
Islamic NATO- র আহ্বান ইরানের
- আপডেট : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সোমবার
- / 452
পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: Iran Calls for Islamic NATO। পশ্চিম এশিয়ার উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে এবার নতুন এক প্রস্তাব সামনে আনল ইরান। কাতারে অনুষ্ঠিত ওআইসি (অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কোঅপারেশন )-এর জরুরি শীর্ষ সম্মেলনে ইরান ও মিশর যৌথভাবে একটি যুগান্তকারী প্রস্তাব পেশ করেছে; পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলোর জন্য একটি ন্যাটো-ধাঁচের সামরিক ও কৌশলগত জোট গঠন (Islamic NATO)।ইসরাইলের সাম্প্রতিক হামলা এবং গাজায় চলমান ধ্বংসযজ্ঞের প্রেক্ষাপটে এই প্রস্তাব মুসলিম বিশ্বের নিরাপত্তা কাঠামোকে নতুন করে সাজানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ব্রিটেনের রয়্যাল ডিফেন্স কলেজে ইসরাইলিদের নিষেধাজ্ঞা
ইরানের নেতারা বলছেন, এখন আর নীরব থাকা সম্ভব নয়। ইসরাইলের একের পর এক সামরিক অভিযান পুরো অঞ্চলের জন্য একটি স্থায়ী ঝুঁকির সৃষ্টি করেছে (iran and Egypt are spearheading new calls for a NATO-style alliance in the Middle East as their leaders gather in Qatar)। প্রাক্তন রেভল্যুশনারি গার্ড কমান্ডার মোহসেন রেজায়ী সতর্ক করে দিয়েছেন যে, যদি মুসলিম দেশগুলো ঐক্যবদ্ধ না হয়, তবে সউদি আরব, তুরস্ক এবং ইরাকের মতো দেশগুলোও ভবিষ্যতে একই ধরনের আক্রমণের শিকার হতে পারে। তার মতে, ক্ষ্মপরিস্থিতি এখন পরিষ্কার: এককভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত নয়।

এই প্রস্তাবে ইরানের পাশে আছে মিশর ও পাকিস্তান। আরব বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক শক্তি হিসেবে মিশর কায়রো-ভিত্তিক একটি যৌথ সামরিক কমান্ডের প্রস্তাব দিয়েছে। অন্যদিকে, পারমাণবিক শক্তিধর মুসলিম দেশ পাকিস্তান ইসরাইলের কার্যকলাপ নজরদারিতে রাখতে একটি যৌথ টাস্কফোর্স গঠনের পক্ষে সওয়াল করেছে।
কাতারের ওপর হামলার ঘটনা বহু মুসলিম দেশের মনে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে। এই উদ্বেগই ওআইসি-এর বৈঠকে বাস্তব ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিকে জোরালো করেছে।
ইরান স্পষ্ট করেই বলছে;যদি মুসলিম দেশগুলো নিজেদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী না করে, তাহলে এই অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি স্থাপন সম্ভব নয়। এটি এখন কেবল একটি কূটনৈতিক চাপ নয়, এটি আন্তর্জাতিক আইন এবং আঞ্চলিক সামরিক সমন্বয়ের এক জটিল মিশ্রণ, যা ইসরাইলের বিরুদ্ধে চাপ বাড়াতে এবং ভবিষ্যৎ হামলা প্রতিরোধ করতে লক্ষ্যমুখী।
তবে, এই উদ্যোগের পথে চ্যালেঞ্জও কম নয়। পশ্চিমা দেশগুলোর, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের, ইসরাইলের সঙ্গে ঐতিহাসিক নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে, যা এই নতুন জোট গঠনে জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া, বিভিন্ন আরব দেশের নিজস্ব স্বার্থ এবং রাজনৈতিক ভিন্নতাও এই ঐক্যবদ্ধ কাঠামোর পথে বাধা হতে পারে।
শেষ পর্যন্ত ওআইসি-এর সিদ্ধান্তই বলে দেবে মুসলিম বিশ্বের ঐক্য কেবল প্রতিশ্রুতিতে সীমাবদ্ধ থাকবে, নাকি তা কার্যকর একটি সামরিক ব্লকে রূপান্তরিত হবে। এই সিদ্ধান্ত কেবল পশ্চিম এশিয়ার ভাগ্য নির্ধারণ করবে না, বরং তা বিশ্ব শক্তির ভারসাম্যেও নতুন প্রভাব ফেলবে।



































