১০ নভেম্বর ২০২৫, সোমবার, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মার্কিন ভিসা ফি বৃদ্ধি, মোদি নীরব কেন: রাহুল

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শনিবার
  • / 256

পুবের কলম, ওয়েব ডেস্ক: লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধি বলেছেন, খুব শীঘ্রই ভোটচুরির হাইড্রোজেন বোমা ফাটতে চলেছে। এমনই যে, গোটা দেশের রাজনীতির চালচিত্র বদলে যাবে। এবার ভোটচুরির খুল্লাম খুল্লা বিবরণ ফাঁস করা হবে। এর আগে দুবার রাহুল গান্ধি ভোটচুরির অভিযোগ করেন এবং নির্বাচন কমিশন দুবারই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে নাকচ করে দেয়।

রাহুল শনিবার সাংবাদিকদের কাছে বলেন, এবার যা ফাঁস করা হবে তাতে কমিশনের থরহরি কম্পন হবে। আমাদের কাছে লিখিত প্রমাণ রয়েছে। সাংবাদিকরা তাঁকে প্রশ্ন করেন, আপনার এই ফাঁস করায় বারাণসী (প্রধানমন্ত্রীর কেন্দ্র) উত্তাল হবে? সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাহুল বলেন, আমি আমার কাজ করব, আপনারা আপনাদের কাজ করবেন। তিনি বেশি কিছু না বললেও আকারে-ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দেন যে, এবার যা তিনি ফাঁস করবেন তার রাজনৈতিক প্রভাব হবে অসামান্য।

আরও পড়ুন: ভোট চুরি না হলে বিহারের মানুষই মহাজোট সরকার গঠন করবে: রাহুল গান্ধী

রাহুলের আগের সংসদীয় কেন্দ্র ছিল এই ওয়েনাড়। এখন এই কেন্দ্রের সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধি। এদিন তিনি মা, কংগ্রেস সংসদীয় পর্ষদের চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধীকে নিয়ে নিজের পুরনো কেন্দ্র এবং দিদির বর্তমান কেন্দ্রে আসেন। সোনিয়াকে নিয়ে রাহুল এখানে দলের সাংগঠনিক শক্তি বাড়াতেই এসেছিলেন।

আরও পড়ুন: ২ কোটি ভোটারের মধ্যে ২৫ লক্ষই ভুয়ো, ভোটচুরি নিয়ে ‘হাইড্রোজেন বোমা’ ফাটালেন রাহুল

আমেরিকা এইচ আই বি ভিসার আবেদনের ফি বাড়িয়ে ১ লক্ষ ডলার করায় রাহুল এদিন নিজের এক্স হ্যাণ্ডেলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তীব্র সমালোচনা করে লেখেন, এ-র ফলে ভারতের মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের আমেরিকায় যাওয়ায় এবং থাকায় সমস্যা তৈরি হল। মোদিকে দুর্বল প্রধানমন্ত্রী বলে অভিহিত করে তিনি বলেন, একের পর এক ব্যবস্থা নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের টুঁটি চিপে ধরছে। অথচ প্রবাসী ভারতীয়দের স্বার্থরক্ষায় দুর্বল মোদি কোনও ব্যবস্থাই নিচ্ছেন না।

আরও পড়ুন: তামিলদের টার্গেট প্রধানমন্ত্রীর, তীব্র নিন্দা স্ট্যালিনের

একটি সংবাদ প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট সঙ্গে দিয়ে তিনি লেখেন, আমি আবার বলছি, দুর্বল প্রধানমন্ত্রী প্রবাসী ভারতীয়দের স্বার্থরক্ষায় অপারগ। এবার আমেরিকায় চাকরি করতে গেলে ভিসার জন্য আবেদন করার সময় ১ লক্ষ ডলার ফি জমা দিতে হবে। হাজার হাজার শিক্ষিত পেশাদার চরম অসুবিধার মধ্যে পড়বেন। ১ লক্ষ ডলার কম? ভাবুন, সরকার চুপ। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খারগেও বলেছেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে নাকি ট্রাম্পের শুভেচ্ছা ফোন পেয়েছিলেন। ভিসার ফি বাড়িয়ে ট্রাম্প রিটার্ন গিফট পাঠালেন। বিজেপি কর্মীরা যে আমেরিকার ভোটের সময় খুব লম্ফঝম্প করে স্লোগান দিয়েছিল, আব কি বার, ট্রাম্প সরকার, তার প্রতি-উপহার ট্রাম্প দিলেন ভিসার ফি দ্বিগুণের বেশি বাড়িয়ে দিয়ে। কংগ্রেস নেতা গৌরব গগৈ এক্স হ্যাণ্ডেলে লিখেছেন, মনমোহন সিং যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখন আমেরিকায় একজন মহিলা কূটনীতিককে অপমান করা হয়েছিল। তখন মনমোহন সিং যে বলিষ্ঠ মনোভাব নিয়ে ও-ই অপমানের শাস্তি নিশ্চিত করেছিলেন তার কাছে মোদি ম্রিয়মাণ।

প্রধানমন্ত্রীর এই কৌশলগত নীরবতা এবং লোকদেখানো চিৎকার ভারতের স্বার্থের পক্ষে বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব বলেছেন, এই প্রথম নয়, আমাদের বিদেশ নীতি দুর্বল হওয়ার কারণে আমেরিকা যা খুশি তাই করে যাচ্ছে। আমেরিকার দেখে অন্য দেশ এমন সিদ্ধান্ত নিলে ভারত কী করবে? কিছু ভেবেছে? আমরা ক্রমেই অন্য দেশের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছি। তেল এবং সার অন্য দেশ না দিলে ভারতের কী হাল হবে কেউ জানে না।

 

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

মার্কিন ভিসা ফি বৃদ্ধি, মোদি নীরব কেন: রাহুল

আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শনিবার

পুবের কলম, ওয়েব ডেস্ক: লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধি বলেছেন, খুব শীঘ্রই ভোটচুরির হাইড্রোজেন বোমা ফাটতে চলেছে। এমনই যে, গোটা দেশের রাজনীতির চালচিত্র বদলে যাবে। এবার ভোটচুরির খুল্লাম খুল্লা বিবরণ ফাঁস করা হবে। এর আগে দুবার রাহুল গান্ধি ভোটচুরির অভিযোগ করেন এবং নির্বাচন কমিশন দুবারই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে নাকচ করে দেয়।

রাহুল শনিবার সাংবাদিকদের কাছে বলেন, এবার যা ফাঁস করা হবে তাতে কমিশনের থরহরি কম্পন হবে। আমাদের কাছে লিখিত প্রমাণ রয়েছে। সাংবাদিকরা তাঁকে প্রশ্ন করেন, আপনার এই ফাঁস করায় বারাণসী (প্রধানমন্ত্রীর কেন্দ্র) উত্তাল হবে? সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাহুল বলেন, আমি আমার কাজ করব, আপনারা আপনাদের কাজ করবেন। তিনি বেশি কিছু না বললেও আকারে-ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দেন যে, এবার যা তিনি ফাঁস করবেন তার রাজনৈতিক প্রভাব হবে অসামান্য।

আরও পড়ুন: ভোট চুরি না হলে বিহারের মানুষই মহাজোট সরকার গঠন করবে: রাহুল গান্ধী

রাহুলের আগের সংসদীয় কেন্দ্র ছিল এই ওয়েনাড়। এখন এই কেন্দ্রের সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধি। এদিন তিনি মা, কংগ্রেস সংসদীয় পর্ষদের চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধীকে নিয়ে নিজের পুরনো কেন্দ্র এবং দিদির বর্তমান কেন্দ্রে আসেন। সোনিয়াকে নিয়ে রাহুল এখানে দলের সাংগঠনিক শক্তি বাড়াতেই এসেছিলেন।

আরও পড়ুন: ২ কোটি ভোটারের মধ্যে ২৫ লক্ষই ভুয়ো, ভোটচুরি নিয়ে ‘হাইড্রোজেন বোমা’ ফাটালেন রাহুল

আমেরিকা এইচ আই বি ভিসার আবেদনের ফি বাড়িয়ে ১ লক্ষ ডলার করায় রাহুল এদিন নিজের এক্স হ্যাণ্ডেলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তীব্র সমালোচনা করে লেখেন, এ-র ফলে ভারতের মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের আমেরিকায় যাওয়ায় এবং থাকায় সমস্যা তৈরি হল। মোদিকে দুর্বল প্রধানমন্ত্রী বলে অভিহিত করে তিনি বলেন, একের পর এক ব্যবস্থা নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের টুঁটি চিপে ধরছে। অথচ প্রবাসী ভারতীয়দের স্বার্থরক্ষায় দুর্বল মোদি কোনও ব্যবস্থাই নিচ্ছেন না।

আরও পড়ুন: তামিলদের টার্গেট প্রধানমন্ত্রীর, তীব্র নিন্দা স্ট্যালিনের

একটি সংবাদ প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট সঙ্গে দিয়ে তিনি লেখেন, আমি আবার বলছি, দুর্বল প্রধানমন্ত্রী প্রবাসী ভারতীয়দের স্বার্থরক্ষায় অপারগ। এবার আমেরিকায় চাকরি করতে গেলে ভিসার জন্য আবেদন করার সময় ১ লক্ষ ডলার ফি জমা দিতে হবে। হাজার হাজার শিক্ষিত পেশাদার চরম অসুবিধার মধ্যে পড়বেন। ১ লক্ষ ডলার কম? ভাবুন, সরকার চুপ। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খারগেও বলেছেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে নাকি ট্রাম্পের শুভেচ্ছা ফোন পেয়েছিলেন। ভিসার ফি বাড়িয়ে ট্রাম্প রিটার্ন গিফট পাঠালেন। বিজেপি কর্মীরা যে আমেরিকার ভোটের সময় খুব লম্ফঝম্প করে স্লোগান দিয়েছিল, আব কি বার, ট্রাম্প সরকার, তার প্রতি-উপহার ট্রাম্প দিলেন ভিসার ফি দ্বিগুণের বেশি বাড়িয়ে দিয়ে। কংগ্রেস নেতা গৌরব গগৈ এক্স হ্যাণ্ডেলে লিখেছেন, মনমোহন সিং যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখন আমেরিকায় একজন মহিলা কূটনীতিককে অপমান করা হয়েছিল। তখন মনমোহন সিং যে বলিষ্ঠ মনোভাব নিয়ে ও-ই অপমানের শাস্তি নিশ্চিত করেছিলেন তার কাছে মোদি ম্রিয়মাণ।

প্রধানমন্ত্রীর এই কৌশলগত নীরবতা এবং লোকদেখানো চিৎকার ভারতের স্বার্থের পক্ষে বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব বলেছেন, এই প্রথম নয়, আমাদের বিদেশ নীতি দুর্বল হওয়ার কারণে আমেরিকা যা খুশি তাই করে যাচ্ছে। আমেরিকার দেখে অন্য দেশ এমন সিদ্ধান্ত নিলে ভারত কী করবে? কিছু ভেবেছে? আমরা ক্রমেই অন্য দেশের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছি। তেল এবং সার অন্য দেশ না দিলে ভারতের কী হাল হবে কেউ জানে না।