১৬ অক্টোবর ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজায় ত্রাণ প্রবেশে ইসরাইলের নয়া বিধিনিষেধ, রাফা সীমান্ত বন্ধ

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০২৫, বুধবার
  • / 75

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার মাত্র চার দিনের মধ্যে ইসরাইল অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় মানবিক সাহায্য প্রবেশে নতুন করে বিধি নিষেধ আরোপ করেছে। এর ফলে একদিকে যেমন সাহায্য সংস্থাগুলোর উদ্বেগ বেড়েছে, তেমনি অন্যদিকে ইসরাইল-হামাস যুদ্ধবিরতির উপরও চাপ সৃষ্টি হয়েছে। ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর অঙ্গ সংগঠন মঙ্গলবার রাষ্ট্রসংঘকে জানিয়েছে যে, বুধবার থেকে গাজায় দৈনিক মাত্র ৩০০টি সাহায্যবাহী ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। পূর্বে সম্মত হওয়া সংখ্যার এটি অর্ধেক। গাজায় রাষ্ট্রসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয় বিষয়ক কার্যালয় এই খবরটি নিশ্চিত করেছে। নতুন নির্দেশ অনুযায়ী, মানবিক অবকাঠামো সম্পর্কিত নির্দিষ্ট প্রয়োজন ছাড়া গাজায় কোনও জ্বালানি বা গ্যাস প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। একই সঙ্গে, ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছে যে মিশর ও গাজার মধ্যে অবস্থিত রাফা সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ থাকবে। এই বিধিনিষেধগুলো এমন এক সময়ে এল, যখন ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় গাজার উত্তর ও দক্ষিণে কমপক্ষে নয়জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজা সিটিতে ছয়জন এবং খান ইউনিসে তিনজন নিহত হন বলে চিকিৎসকরা আল জাজিরাকে জানিয়েছেন।

রাষ্ট্রসংঘের সংস্থাগুলো এই পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা জানিয়েছে, ১,৯০,০০০ মেট্রিক টন সাহায্য গাজায় প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। ইউনিসেফ-এর একজন মুখপাত্র বলেছেন, ধ্বংসের মাত্রা এত বেশি যে প্রতিদিন কমপক্ষে ৬০০ ট্রাক সাহায্য প্রয়োজন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও দ্রুত চিকিৎসার সরঞ্জাম পাঠানোর ওপর জোর দিয়েছে। তারা অবিলম্বে সব সীমান্ত ক্রসিং খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
রাষ্ট্রসংঘের কর্মীরা স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘তিনশ ট্রাক পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন আনবে না।’ তারা জোর দিয়ে বলছেন যে, ইসরাইল যদি রাফা সীমান্ত ক্রসিং পুরোপুরি খুলে না দেয় এবং ত্রাণ সরবরাহকে একটি রাজনৈতিক দর কষাকষির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা বন্ধ না করে, তবে ধ্বংসস্তূপের নিচে থাকা ফিলিস্তিনিদের দুর্গতি দূর হবে না। তাদের কাছে, স্থিতিশীলতা শুধুমাত্র যুদ্ধবিরতি নয়, বরং মানবিক চাহিদার জরুরি সমাধান-এর উপর নির্ভর করে। ইসরাইলের এই নয়া বিধিনিষেধের ফলে উপত্যকার ফিলিস্তিনিরা দ্রুত তাদের জীবনযাত্রায় কোনও পরিবর্তন দেখছেন না। খাদ্য, জল, চিকিৎসা এবং জ্বালানির মতো মৌলিক চাহিদার জন্য ত্রাণের উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল এই অঞ্চলের মানুষেরা মনে করছেন, জীবন স্বাভাবিক হবে না যতক্ষণ না ইসরাইল কোনওরকম বিধিনিষেধ ছাড়া সাহায্য প্রবেশে অনুমতি দেয়।

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

গাজায় ত্রাণ প্রবেশে ইসরাইলের নয়া বিধিনিষেধ, রাফা সীমান্ত বন্ধ

আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০২৫, বুধবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার মাত্র চার দিনের মধ্যে ইসরাইল অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় মানবিক সাহায্য প্রবেশে নতুন করে বিধি নিষেধ আরোপ করেছে। এর ফলে একদিকে যেমন সাহায্য সংস্থাগুলোর উদ্বেগ বেড়েছে, তেমনি অন্যদিকে ইসরাইল-হামাস যুদ্ধবিরতির উপরও চাপ সৃষ্টি হয়েছে। ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর অঙ্গ সংগঠন মঙ্গলবার রাষ্ট্রসংঘকে জানিয়েছে যে, বুধবার থেকে গাজায় দৈনিক মাত্র ৩০০টি সাহায্যবাহী ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। পূর্বে সম্মত হওয়া সংখ্যার এটি অর্ধেক। গাজায় রাষ্ট্রসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয় বিষয়ক কার্যালয় এই খবরটি নিশ্চিত করেছে। নতুন নির্দেশ অনুযায়ী, মানবিক অবকাঠামো সম্পর্কিত নির্দিষ্ট প্রয়োজন ছাড়া গাজায় কোনও জ্বালানি বা গ্যাস প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। একই সঙ্গে, ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছে যে মিশর ও গাজার মধ্যে অবস্থিত রাফা সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ থাকবে। এই বিধিনিষেধগুলো এমন এক সময়ে এল, যখন ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় গাজার উত্তর ও দক্ষিণে কমপক্ষে নয়জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজা সিটিতে ছয়জন এবং খান ইউনিসে তিনজন নিহত হন বলে চিকিৎসকরা আল জাজিরাকে জানিয়েছেন।

রাষ্ট্রসংঘের সংস্থাগুলো এই পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা জানিয়েছে, ১,৯০,০০০ মেট্রিক টন সাহায্য গাজায় প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। ইউনিসেফ-এর একজন মুখপাত্র বলেছেন, ধ্বংসের মাত্রা এত বেশি যে প্রতিদিন কমপক্ষে ৬০০ ট্রাক সাহায্য প্রয়োজন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও দ্রুত চিকিৎসার সরঞ্জাম পাঠানোর ওপর জোর দিয়েছে। তারা অবিলম্বে সব সীমান্ত ক্রসিং খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
রাষ্ট্রসংঘের কর্মীরা স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘তিনশ ট্রাক পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন আনবে না।’ তারা জোর দিয়ে বলছেন যে, ইসরাইল যদি রাফা সীমান্ত ক্রসিং পুরোপুরি খুলে না দেয় এবং ত্রাণ সরবরাহকে একটি রাজনৈতিক দর কষাকষির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা বন্ধ না করে, তবে ধ্বংসস্তূপের নিচে থাকা ফিলিস্তিনিদের দুর্গতি দূর হবে না। তাদের কাছে, স্থিতিশীলতা শুধুমাত্র যুদ্ধবিরতি নয়, বরং মানবিক চাহিদার জরুরি সমাধান-এর উপর নির্ভর করে। ইসরাইলের এই নয়া বিধিনিষেধের ফলে উপত্যকার ফিলিস্তিনিরা দ্রুত তাদের জীবনযাত্রায় কোনও পরিবর্তন দেখছেন না। খাদ্য, জল, চিকিৎসা এবং জ্বালানির মতো মৌলিক চাহিদার জন্য ত্রাণের উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল এই অঞ্চলের মানুষেরা মনে করছেন, জীবন স্বাভাবিক হবে না যতক্ষণ না ইসরাইল কোনওরকম বিধিনিষেধ ছাড়া সাহায্য প্রবেশে অনুমতি দেয়।