২৭ অক্টোবর ২০২৫, সোমবার, ৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মধ্যপ্রদেশে মসজিদে আগুন ধরিয়ে দিল হিন্দুত্ববাদীরা, পুড়ল পবিত্র কুরআন

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, রবিবার
  • / 111

(Image Credit: The Hindustan Gazette)

পুবের কলম, ভোপাল: বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশে মসজিদে আগুন। ওই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বহু ধর্মীয় গ্রন্থ ও অন্যান্য সামগ্রী। শুক্রবার মধ্যরাতে মধ্যপ্রদেশের ছতারপুর জেলার হরপালপুর থানার এলাকার একটি মসজিদে হঠাৎ আগুন দেখতে পান বাসিন্দারা।

প্রশাসনকে খবর দেওয়ার আগেই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বহু ইসলামিক ধর্ম গ্রন্থ। দুর্ঘটনার জেরেই কি আগুন নাকি নেপথে সাম্প্রদায়িক উস্কানি! উঠছে প্রশ্ন। পুলিশ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে ঘটনায় ছ’জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। দু’জন গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। ধৃতরা হল- হর্ষ পাটোরিয়া ও মনোজ পাটোরিয়া। বাকি চারজন এখনও পলাতক।

আরও পড়ুন: কার্বাইড গানে আহতের সংখ্যা বেড়ে ৩২০, আহতদের দেখতে হাসপাতালে মুখ্যমন্ত্রী

সূত্রের খবর, ক’দিন আগে স্থানীয় এক মুসলিম ব্যক্তির সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছিল অভিযুক্তরা। পূর্বরাগ থেকেই তারা মসজিদে হামলা চালায়। অভিযুক্তরা আশেপাশের সম্পত্তিতেও ভাঙচুর করে। এলাকায় আতঙ্ক ছড়াতে বিভিন্ন বাড়ির দরজায় ধাক্কা দেয় তারা বলে অভিযোগ।

আরও পড়ুন: বিষাক্ত কফ সিরাপে ১০ শিশুর মৃত্যু, গ্রেফতার চিকিৎসক

ঘটনার সময় হামলাকারীরা মাস্ক পরেছিল বলে জানা গেছে। স্থানীয় মুসলিমদের বক্তব্য, একদল হিন্দুত্ববাদী মসজিদে প্রবেশ করে মসজিদে থাকা একাধিক জিনিসপত্র ভাঙচুর করে। তারা মসজিদে আগুন ধরিয়ে দেয়। এমনকি তারা পবিত্র কুরআন সহ অন্যান্য গ্রন্থ, নামাজের মাদুরসহ অন্যান্য জিনিসপত্রে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। তারা সবকিছুতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। মসজিদ কমিটির এক সদস্য বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: মধ্যপ্রদেশে বিরোধী দলনেতার মন্তব্য: ‘আদিবাসীরা হিন্দু নন’

পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনাটি ঘটেছে ইমলিয়া গ্রামে। সেখানে হিন্দুত্ববাদীরা বেশ কয়েকটি জিনিসপত্র পুড়িয়ে দেয় এবং অন্যদের ক্ষতিগ্রস্থ করে। মোট ছয়জন অভিযুক্ত রয়েছেন। ইতিমধ্যে দু’জন কে গ্রেফতার করে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বাকি চারজন অভিযুক্ত হল- সাতু অনুরাগি, সুনীল রাজপুত, উমেশ পাল এবং উন্নু রাজপুত। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। ছত্তরপুরের পুলিশ সুপার আগম জৈন বলেন, “২৩-২৪ অক্টোবর রাতে কিছু লোক একটি মসজিদে ধর্মীয় নথি পোড়ানোর চেষ্টা করেছিল।

ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ পাঠানো হয়। তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তথ্য সংগ্রহ করে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। সন্দেহভাজন অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূল অভিযুক্তকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা আরও চার অভিযুক্তকে খুঁজছি, যাদের শিগগিরই গ্রেফতার করা হবে।” অনেকের দাবি, সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা সৃষ্টি করতেই এই ষড়যন্ত্র।

পুলিশ সুপারের আরও বক্তব্য, গ্রেফতার হওয়া দুই অভিযুক্ত অতীতে একই ধরনের কাজে জড়িত ছিল। তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। পুলিশ বর্তমান মামলায় প্রতিরোধমূলক বিভাগ প্রয়োগ করবে এবং কঠোরতম ব্যবস্থা নেবে। এই ঘটনাকে নিয়ে এলাকায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে দ্রুত পুলিশি পদক্ষেপ এবং স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের সংযমতার কারণে কোনও উত্তেজনা বা হিংসা ছড়াইনি।

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

মধ্যপ্রদেশে মসজিদে আগুন ধরিয়ে দিল হিন্দুত্ববাদীরা, পুড়ল পবিত্র কুরআন

আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, রবিবার

পুবের কলম, ভোপাল: বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশে মসজিদে আগুন। ওই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বহু ধর্মীয় গ্রন্থ ও অন্যান্য সামগ্রী। শুক্রবার মধ্যরাতে মধ্যপ্রদেশের ছতারপুর জেলার হরপালপুর থানার এলাকার একটি মসজিদে হঠাৎ আগুন দেখতে পান বাসিন্দারা।

প্রশাসনকে খবর দেওয়ার আগেই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বহু ইসলামিক ধর্ম গ্রন্থ। দুর্ঘটনার জেরেই কি আগুন নাকি নেপথে সাম্প্রদায়িক উস্কানি! উঠছে প্রশ্ন। পুলিশ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে ঘটনায় ছ’জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। দু’জন গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। ধৃতরা হল- হর্ষ পাটোরিয়া ও মনোজ পাটোরিয়া। বাকি চারজন এখনও পলাতক।

আরও পড়ুন: কার্বাইড গানে আহতের সংখ্যা বেড়ে ৩২০, আহতদের দেখতে হাসপাতালে মুখ্যমন্ত্রী

সূত্রের খবর, ক’দিন আগে স্থানীয় এক মুসলিম ব্যক্তির সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছিল অভিযুক্তরা। পূর্বরাগ থেকেই তারা মসজিদে হামলা চালায়। অভিযুক্তরা আশেপাশের সম্পত্তিতেও ভাঙচুর করে। এলাকায় আতঙ্ক ছড়াতে বিভিন্ন বাড়ির দরজায় ধাক্কা দেয় তারা বলে অভিযোগ।

আরও পড়ুন: বিষাক্ত কফ সিরাপে ১০ শিশুর মৃত্যু, গ্রেফতার চিকিৎসক

ঘটনার সময় হামলাকারীরা মাস্ক পরেছিল বলে জানা গেছে। স্থানীয় মুসলিমদের বক্তব্য, একদল হিন্দুত্ববাদী মসজিদে প্রবেশ করে মসজিদে থাকা একাধিক জিনিসপত্র ভাঙচুর করে। তারা মসজিদে আগুন ধরিয়ে দেয়। এমনকি তারা পবিত্র কুরআন সহ অন্যান্য গ্রন্থ, নামাজের মাদুরসহ অন্যান্য জিনিসপত্রে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। তারা সবকিছুতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। মসজিদ কমিটির এক সদস্য বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: মধ্যপ্রদেশে বিরোধী দলনেতার মন্তব্য: ‘আদিবাসীরা হিন্দু নন’

পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনাটি ঘটেছে ইমলিয়া গ্রামে। সেখানে হিন্দুত্ববাদীরা বেশ কয়েকটি জিনিসপত্র পুড়িয়ে দেয় এবং অন্যদের ক্ষতিগ্রস্থ করে। মোট ছয়জন অভিযুক্ত রয়েছেন। ইতিমধ্যে দু’জন কে গ্রেফতার করে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বাকি চারজন অভিযুক্ত হল- সাতু অনুরাগি, সুনীল রাজপুত, উমেশ পাল এবং উন্নু রাজপুত। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। ছত্তরপুরের পুলিশ সুপার আগম জৈন বলেন, “২৩-২৪ অক্টোবর রাতে কিছু লোক একটি মসজিদে ধর্মীয় নথি পোড়ানোর চেষ্টা করেছিল।

ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ পাঠানো হয়। তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তথ্য সংগ্রহ করে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। সন্দেহভাজন অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূল অভিযুক্তকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা আরও চার অভিযুক্তকে খুঁজছি, যাদের শিগগিরই গ্রেফতার করা হবে।” অনেকের দাবি, সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা সৃষ্টি করতেই এই ষড়যন্ত্র।

পুলিশ সুপারের আরও বক্তব্য, গ্রেফতার হওয়া দুই অভিযুক্ত অতীতে একই ধরনের কাজে জড়িত ছিল। তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। পুলিশ বর্তমান মামলায় প্রতিরোধমূলক বিভাগ প্রয়োগ করবে এবং কঠোরতম ব্যবস্থা নেবে। এই ঘটনাকে নিয়ে এলাকায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে দ্রুত পুলিশি পদক্ষেপ এবং স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের সংযমতার কারণে কোনও উত্তেজনা বা হিংসা ছড়াইনি।