০৫ নভেম্বর ২০২৫, বুধবার, ১৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইরাক আগ্রাসনের মূল হোতা সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনি আর নেই

মোক্তার হোসেন মন্ডল
  • আপডেট : ৫ নভেম্বর ২০২৫, বুধবার
  • / 148

 

মার্কিন রাজনীতির অন্যতম প্রভাবশালী ও বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব ডিক চেনি আর নেই। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকালে তিনি নিউমোনিয়া ও হৃদ্‌যন্ত্র ও রক্তনালিজনিত জটিলতায় মারা যান,এ তথ্য নিশ্চিত করেছে তাঁর পরিবার, সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে।

এক বিবৃতিতে পরিবার জানিয়েছে, “দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে ডিক চেনি আমাদের জাতির সেবা করেছেন,হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ, ওয়াইওমিংয়ের কংগ্রেসম্যান, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে। তাঁর অবদানের প্রতি আমরা গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।”

রিপাবলিকান দলের এই নেতা ২০০১ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আধুনিক মার্কিন ইতিহাসে তাঁকে সবচেয়ে ক্ষমতাবান ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিবেচনা করা হয়। রাজনীতিতে তাঁর পথচলা শুরু হয় ১৯৬৯ সালে, রিচার্ড নিকসনের প্রশাসনে ডোনাল্ড রামসফেল্ডের সহকারী হিসেবে।

চেনি ছিলেন ২০০৩ সালের ইরাক আগ্রাসনের অন্যতম প্রধান নকশাকারী। তিনি দাবি করেছিলেন, সাদ্দাম হোসেনের কাছে গণবিধ্বংসী অস্ত্র রয়েছে এবং দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। সেই দাবির ভিত্তিতেই শুরু হয় যুদ্ধ, যা ইরাককে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে এবং সাদ্দামের পতন ঘটায়। কিন্তু পরে দেখা যায়, এমন কোনো অস্ত্রের অস্তিত্ব ছিল না।

এর আগে, ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত তিনি প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ সিনিয়রের অধীনে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন। আরও আগে, ১৯৭০-এর দশকে প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ডের হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং কংগ্রেসেও এক দশক প্রতিনিধিত্ব করেন।

৯/১১ হামলার পর “সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ”–এর অন্যতম রূপকার ছিলেন চেনি। তাঁর নীতি, ‘ওয়ান পারসেন্ট ডকট্রিন’—যেখানে বলা হয়, যদি কোনো সম্ভাব্য হুমকির আশঙ্কা এক শতাংশও থাকে, তবে যুক্তরাষ্ট্রকে আগাম ব্যবস্থা নিতে হবে—যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলেছিল।

ইরাকে গণবিধ্বংসী অস্ত্র না পাওয়া সত্ত্বেও চেনি শেষ পর্যন্ত নিজের অবস্থানে অনড় ছিলেন। তাঁর ভাষায়, “সেই সময়কার গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী সাদ্দাম হোসেনকে ক্ষমতা থেকে সরানো ছিল একেবারে সঠিক সিদ্ধান্ত।”

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ইরাক আগ্রাসনের মূল হোতা সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনি আর নেই

আপডেট : ৫ নভেম্বর ২০২৫, বুধবার

 

মার্কিন রাজনীতির অন্যতম প্রভাবশালী ও বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব ডিক চেনি আর নেই। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকালে তিনি নিউমোনিয়া ও হৃদ্‌যন্ত্র ও রক্তনালিজনিত জটিলতায় মারা যান,এ তথ্য নিশ্চিত করেছে তাঁর পরিবার, সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে।

এক বিবৃতিতে পরিবার জানিয়েছে, “দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে ডিক চেনি আমাদের জাতির সেবা করেছেন,হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ, ওয়াইওমিংয়ের কংগ্রেসম্যান, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে। তাঁর অবদানের প্রতি আমরা গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।”

রিপাবলিকান দলের এই নেতা ২০০১ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আধুনিক মার্কিন ইতিহাসে তাঁকে সবচেয়ে ক্ষমতাবান ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিবেচনা করা হয়। রাজনীতিতে তাঁর পথচলা শুরু হয় ১৯৬৯ সালে, রিচার্ড নিকসনের প্রশাসনে ডোনাল্ড রামসফেল্ডের সহকারী হিসেবে।

চেনি ছিলেন ২০০৩ সালের ইরাক আগ্রাসনের অন্যতম প্রধান নকশাকারী। তিনি দাবি করেছিলেন, সাদ্দাম হোসেনের কাছে গণবিধ্বংসী অস্ত্র রয়েছে এবং দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। সেই দাবির ভিত্তিতেই শুরু হয় যুদ্ধ, যা ইরাককে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে এবং সাদ্দামের পতন ঘটায়। কিন্তু পরে দেখা যায়, এমন কোনো অস্ত্রের অস্তিত্ব ছিল না।

এর আগে, ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত তিনি প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ সিনিয়রের অধীনে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন। আরও আগে, ১৯৭০-এর দশকে প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ডের হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং কংগ্রেসেও এক দশক প্রতিনিধিত্ব করেন।

৯/১১ হামলার পর “সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ”–এর অন্যতম রূপকার ছিলেন চেনি। তাঁর নীতি, ‘ওয়ান পারসেন্ট ডকট্রিন’—যেখানে বলা হয়, যদি কোনো সম্ভাব্য হুমকির আশঙ্কা এক শতাংশও থাকে, তবে যুক্তরাষ্ট্রকে আগাম ব্যবস্থা নিতে হবে—যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলেছিল।

ইরাকে গণবিধ্বংসী অস্ত্র না পাওয়া সত্ত্বেও চেনি শেষ পর্যন্ত নিজের অবস্থানে অনড় ছিলেন। তাঁর ভাষায়, “সেই সময়কার গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী সাদ্দাম হোসেনকে ক্ষমতা থেকে সরানো ছিল একেবারে সঠিক সিদ্ধান্ত।”