পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ব্রিগেডে মুসলিম প্যাটিস বিক্রেতাকে মারধর ও হেনস্থার ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় তিন অভিযুক্তকে। গ্রেফতারের পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন তারা। এরপরই অভিযুক্তদের ফুলের মালা ও গেরুয়া উত্তরীয় পরিয়ে সংবর্ধনা দিল বিজেপি। এদিন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযুক্তদের রাজকীয় ভাবে সংবর্ধনা দেওয়ার পাশাপাশি তাদের বরণ করে নেন। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “জঙ্গিদের যেভাবে গ্রেফতার করা হয়, ধর্ষকদের যেভাবে খোঁজা চেষ্টা করা হয় সেইভাবে সনাতন পরিবারের হিন্দু সন্তানদের ঠিক একইভাবে অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে মমতার পুলিশ গ্রেফতার করে।” পশ্চিমবঙ্গে সরকার তোষণবাদের সরকার বলেও আক্রমণ শানিয়েছে বিরোধী দলনেতা। তাঁর বক্তব্য, মমতা সরকার হিন্দু-বিরোধী হয়ে গিয়েছে। আর মমতার পুলিশ পরিণত হয়েছে মুসলিম লিগের পুলিশে।
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে তোপ দেগে শুভেন্দু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী দম্ভের সঙ্গে বলছেন ওদের আমি গ্রেফতার করিয়ে দিয়েছি। কিন্তু আপনি গ্রেফতার করানোর কে? আসলে বিচারের বাণী নিরবে নিভৃতে কাঁদে। এখনও ভারতে বিচারব্যবস্থা নিরপেক্ষ জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে বলে এই যুবকদের আজকে জামিন মিলেছে। অনেক আইনজীবী এদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।”
ব্রিগেডে লক্ষ কন্ঠে গীতাপাঠের অনুষ্ঠানে মুসলিম প্যাটিস বিক্রেতাকে মারধর ও হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছিল। ঘটনার ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়। কট্টরপন্থীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলেন বিশিষ্টরা। এই ঘটনায় জোড়া এফআইআর দায়ের হয় ময়দান থানায়। অভিযোগের ভিত্তিতে ৩ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। ধৃতদের নাম, সৌমিক গোলদার, তরুণ ভট্টাচার্য ও স্বর্ণেন্দু চক্রবর্তী। পুলিশ সূত্রে খবর, বুধরাত রাতে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়। ধৃত সৌমিক ঘোষ উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙার বাসিন্দা ও তরুণ ভট্টাচার্য হুগলির উত্তরপাড়ার বাসিন্দা। আরেক ধৃত স্বর্ণেন্দু চক্রবর্তী অশোকনগরের বাসিন্দা।
এদিকে চিকেন প্যাটিস বিক্রেতাকে হেনস্থা ঘটনায় ফুঁসে ওঠেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, “সবকটাকে গ্রেফতার করেছি। এটা বাংলা। উত্তরপ্রদেশ নয়।” সর্বধর্ম সমম্বয়ের বার্তা দিয়ে মমতা আরও বলেন, “গীতাপাঠ তো আমরা সকলেই বাড়িতে করি। পাবলিক মিটিং করার কী দরকার? দুর্গাপুজো যখন হয়, তখন মিলেমিশে করি। আপনারা কে? যে ভেদাভেদ করছেন। আমি সবধর্মকে নিয়ে চলতে চাই। নতুন ধর্ম আমদানি করেছেন।”
উল্লেখ্য, ৭ ডিসেম্বর গীতাপাঠ অনুষ্ঠানে মুসলিম চিকেন প্যাটিস বিক্রেতাকে শেখ রেয়াজুলকে ঘিরে ধরে মারধর করে কয়েকজন কট্টরপন্থী। তাঁদের কারও কপালে ছিল তিলক, কারও গলায় উত্তরীয়। ওই বিক্রেতাকে কান ধরে ওঠবোস করানো হয়। তাঁর প্যাটিস ভর্তি টিনের বাক্স থেকে সমস্ত খাবার ফেলে দেওয়া হয়। আক্রান্ত শেখ রেয়াজুল সংবাদ মাধ্যমকে জানান, একজন তার কাছে জানতে চায় তার কাছে চিকেন প্যাটিস আছে কি না। উত্তরে তিনি জানান, তাঁর কাছে চিকেন প্যাটিস আছে। এরপরেই তার উপর চড়াও হয় আক্রমণকারীরা। তার টিনে থাকা চিকেন প্যাটিস উল্টে দেওয়া হয়।


































