২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, রবিবার, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মধ্যপ্রদেশে পথদুর্ঘটনা, কেড়ে নিল উত্তরদিনাজপুরের ৪ পরিযায়ী শ্রমিকের প্রাণ

পুবের কলম প্রতিবেদক, ইসলামপুরঃ অভাব নিত্যসঙ্গী। তাই পেটের টানে সংসারের মুখের দিকে চেয়ে ভিন রাজ্যে পাড়ি দেয় এরাজ্যেরর শ্রমিকরা। সেই রকমই বাড়ি থেকে রোজগারের টানে বেড়িয়েছিল ওরা। খিদের কাছে বাড়ির বারণও তুচ্ছ বলে মনে হয়েছিল ওদের। কারণ কাজে না যোগ দিলে আছে কাজ হারানোর ভয়। তাই বেড়িয়ে পড়েছিল ওরা। না কর্মস্থলে যাওয়া হয়নি। পথদুর্ঘটনা কেড়ে নিল কেড়ে নিল চারজন পরিযায়ী শ্রমিকের প্রাণ। আহত ১২ জন।

মঙ্গলবার ভোর রাতে মধ্যপ্রদেশের শিবাজীপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন উত্তর দিনাজপুরের চারজন পরিযায়ী শ্রমিক। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন চাকুলিয়া এলাকার, শিরশি গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ হাকিমুল (২২) ও মহম্মদ আধুল্লাহ (২১) পাশের ডুমুরিয়া গ্রামের মহম্মদ সাকিম (১৯), ভুইধর গ্রামের রুহুল আমিন (২১)।

আরও পড়ুন: বিজেপি-শাসিত রাজ্যে বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর নির্যাতন, তীব্র নিন্দা মুখ্যমন্ত্রীর

বুধবার নিহত পরিবারদের বাড়ি গিয়ে সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস দিলেন রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের মন্ত্রী গোলাম রব্বানি।

আরও পড়ুন: হলদিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত ২, জখম অন্তত ৫

স্থানীয় বাসিন্দা আনোয়ারুল আলম জানালেন, ভিন্ রাজ্যে কাজ করার জন্যই গত রবিবার কিসানগঞ্জ থেকে এলাকার মোট এলাকার মোট ১৫  জন ট্রেনে চেপে রওনা দেন। ঝাঁসি স্টেশন থেকে নেমে ঠিকাদার সংস্থার পিক আপ ভ্যানে ওঠেন ভ্যানটিতে ১৯ জন ছিলেন। শিবাজীপুরে একটি সেতু নির্মাণের কাজে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তাদের। কিন্ত পথে আচমকা চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে  সড়কের ধারে উল্টে যায়। ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়। পরে শিবাজীপুর  হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়। কাল শুক্রবার চারটি দেহ গ্রামে পৌঁছবে।

আরও পড়ুন: সড়ক দুর্ঘটনায় আহতরা পাবেন ক্যাশলেস চিকিৎসা, নতুন ব্যবস্থা চালুর পথে রাজ্য

মন্ত্রী গোলাম রব্বানী বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের পাশে রয়েছি।’

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন আধুল্লাহার বাবা মুজ্জাফর হোসেন। মুজাফফর  বলেন, ছেলেকে নিষেধ করেছিলাম। বলেছিলাম এখন যেতে হবে না। কিন্ত কথা শুনল কই। ছেলের নাকি কাজ হাত ছাড়া হয়ে যাবে। তাই গ্রামের অন্যদের সঙ্গে পাড়ি দিয়েছিল।’

ভূঁইধর গ্রামের আমিনের বাবা আধুর রহিম দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। তিনি বলেন, ছেলে গত দু বছর ধরে ভিনরাজ্যে কাজে যুক্ত ছিলেন। ছেলের আয়ে সংসার চলত। এখন সংসারের কী হবে, জানি না।

শিরশির বাসিন্দা, সামসুল আলম বলেন, বাইরে যেতেই হবে আমাদের ঘরের ছেলেদের। আর তার পর অপেক্ষা। কখনও সুসংবাদ আসে, কখনও দুঃসংবাদ।

সর্বধিক পাঠিত

উত্তরপ্রদেশ: কলেজ ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে গুলি করে খুন ছাত্রকে, দুষ্কৃতীদের খোঁজে পুলিশ

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

মধ্যপ্রদেশে পথদুর্ঘটনা, কেড়ে নিল উত্তরদিনাজপুরের ৪ পরিযায়ী শ্রমিকের প্রাণ

আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২, বুধবার

পুবের কলম প্রতিবেদক, ইসলামপুরঃ অভাব নিত্যসঙ্গী। তাই পেটের টানে সংসারের মুখের দিকে চেয়ে ভিন রাজ্যে পাড়ি দেয় এরাজ্যেরর শ্রমিকরা। সেই রকমই বাড়ি থেকে রোজগারের টানে বেড়িয়েছিল ওরা। খিদের কাছে বাড়ির বারণও তুচ্ছ বলে মনে হয়েছিল ওদের। কারণ কাজে না যোগ দিলে আছে কাজ হারানোর ভয়। তাই বেড়িয়ে পড়েছিল ওরা। না কর্মস্থলে যাওয়া হয়নি। পথদুর্ঘটনা কেড়ে নিল কেড়ে নিল চারজন পরিযায়ী শ্রমিকের প্রাণ। আহত ১২ জন।

মঙ্গলবার ভোর রাতে মধ্যপ্রদেশের শিবাজীপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন উত্তর দিনাজপুরের চারজন পরিযায়ী শ্রমিক। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন চাকুলিয়া এলাকার, শিরশি গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ হাকিমুল (২২) ও মহম্মদ আধুল্লাহ (২১) পাশের ডুমুরিয়া গ্রামের মহম্মদ সাকিম (১৯), ভুইধর গ্রামের রুহুল আমিন (২১)।

আরও পড়ুন: বিজেপি-শাসিত রাজ্যে বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর নির্যাতন, তীব্র নিন্দা মুখ্যমন্ত্রীর

বুধবার নিহত পরিবারদের বাড়ি গিয়ে সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস দিলেন রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের মন্ত্রী গোলাম রব্বানি।

আরও পড়ুন: হলদিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত ২, জখম অন্তত ৫

স্থানীয় বাসিন্দা আনোয়ারুল আলম জানালেন, ভিন্ রাজ্যে কাজ করার জন্যই গত রবিবার কিসানগঞ্জ থেকে এলাকার মোট এলাকার মোট ১৫  জন ট্রেনে চেপে রওনা দেন। ঝাঁসি স্টেশন থেকে নেমে ঠিকাদার সংস্থার পিক আপ ভ্যানে ওঠেন ভ্যানটিতে ১৯ জন ছিলেন। শিবাজীপুরে একটি সেতু নির্মাণের কাজে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তাদের। কিন্ত পথে আচমকা চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে  সড়কের ধারে উল্টে যায়। ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়। পরে শিবাজীপুর  হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়। কাল শুক্রবার চারটি দেহ গ্রামে পৌঁছবে।

আরও পড়ুন: সড়ক দুর্ঘটনায় আহতরা পাবেন ক্যাশলেস চিকিৎসা, নতুন ব্যবস্থা চালুর পথে রাজ্য

মন্ত্রী গোলাম রব্বানী বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের পাশে রয়েছি।’

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন আধুল্লাহার বাবা মুজ্জাফর হোসেন। মুজাফফর  বলেন, ছেলেকে নিষেধ করেছিলাম। বলেছিলাম এখন যেতে হবে না। কিন্ত কথা শুনল কই। ছেলের নাকি কাজ হাত ছাড়া হয়ে যাবে। তাই গ্রামের অন্যদের সঙ্গে পাড়ি দিয়েছিল।’

ভূঁইধর গ্রামের আমিনের বাবা আধুর রহিম দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। তিনি বলেন, ছেলে গত দু বছর ধরে ভিনরাজ্যে কাজে যুক্ত ছিলেন। ছেলের আয়ে সংসার চলত। এখন সংসারের কী হবে, জানি না।

শিরশির বাসিন্দা, সামসুল আলম বলেন, বাইরে যেতেই হবে আমাদের ঘরের ছেলেদের। আর তার পর অপেক্ষা। কখনও সুসংবাদ আসে, কখনও দুঃসংবাদ।