২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেশজুড়ে এনপিআর, ঘোষণা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: দেশজুড়ে শুরু হচ্ছে এনপিআর। এমনটাই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বিরোধীরা, এনপিআর’কে এনআরসি চালুর প্রথম ধাপ বলে দাবি করে থাকে। স্বাভাবিকভাবেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এই ঘোষণায় ফের দেশজুড়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে।

সোমবারই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তাদের বার্ষিক প্রতিবেদন (২০২১-২২) প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, মানুষর জন্ম, মৃত্যু সংক্রান্ত তথ্য ও কেউ পরিযায়ী হলে সেই সংক্রান্ত তথ্য ও পরিবর্তনগুলি অন্তর্ভূক্ত করতে এনপিআর (ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্টার) আপডেট করা হবে। এজন্য প্রতিটি পরিবারের সদস্য সংখ্যা সহ প্রত্যেক ব্যক্তির বিবরণ সংগ্রহ করা হবে।

আরও পড়ুন: ছাব্বিশের এপ্রিল মাস থেকে শুরু জনগণনা, ১১ হাজার কোটি বাজেট ঘোষণা করল কেন্দ্র

কেন্দ্রের বক্তব্য, এনপিআর প্রথম ২০১০ সালে প্রস্তুত করা হয়েছিল। তারপর ২০১৫ সালে দেশের সাধারণ বাসিন্দাদের তথ্য সংগ্রহ করে তা আপডেট করা হয়েছিল। অনেক বিরোধী শাসিত রাজ্য এর বিরোধিতা করেছে।

আরও পড়ুন: ভগবত গীতাই দেশের ‘আসল সংবিধান’: বির্তকে অন্ধ্রের উপমুখ্যমন্ত্রী, ‘অবুঝ’ বলল কংগ্রেস

বিরোধীদের দাবি, ২০০৩ সালের নাগরিকত্বের নিয়ম অনুসারে, এটি এনআরসি চালু করার প্রথম পদক্ষেপ। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে যদিও ফের পালটা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এখনই এনআরসি চালু করার মতো কোনও পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি। তবে কীভাবে এনপিআরের কাজ হবে তার উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এনপিআর তৈরি করা হয়েছে নাগরিকত্ব আইন-১৯৫৫’র প্রণীত নাগরিকত্ব বিধি ও ২০০৩ সালের নাগরিকত্ব বিধির বিভিন্ন বিধানের অধীনে।

আরও পড়ুন: Jucsu polls: জাকসুর ফল প্রকাশ সন্ধ্যা ৭-টায়

২০১৫ সালে যে এনপিআর হয়েছিল সেখানে, প্রত্যেক পরিবারের প্রত্যের ব্যক্তির নাম, লিঙ্গ, জন্ম তারিখ, জন্মস্থান, বসবাসের স্থান ও বাব-মায়ের নাম আপডেট করা হয়েছিল। সংগ্রহ করা হয়েছিল আধার কার্ড, রেশন কার্ড ও মোবাইল ফোনের নম্বর। জন্ম-মৃত্যু ও স্থানান্তরের কারণে সৃষ্ট পরিবর্তনগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ফের একবার এনপিআর আপডেট করা দরকার।

দেশের ১১৫ কোটি বাসিন্দার ডেটাবেস সংবলিত এনপিআরকে আদমশুমারির প্রথম ধাপের সঙ্গে আপডেট করতে হবে, যা ২০১৯ সাল থেকে করোনা মহামারির কারণে অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত করে দেওয়া হয়েছিল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বলেছে, এনপিআর স্ব-গণনার মাধ্যমে আপডেট করা যেতে পারে। কারণ, ওয়েব পোর্টালে কিছু প্রমাণ্যকরণের প্রটোকল মেনে চলার পর বাসিন্দাদের নিজেদের ডেটা আপডেট করার অনুমতি দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে। তবে, রিপোর্টে এনআরসির কোনও উল্লেখ নেই।

উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিগত অর্থবর্ষের (২০২০-২১) রিপোর্টে বলা হয়েছিল, সিএএ একটি সহানুভূতিশীল আইন যা ভারতীয় নাগরিকদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, তাই কোনওভাবেই কোনও ভারতীয় নাগরিকের অধিকার হ্রাসের কোনও প্রশ্নই ওঠে না।

সংসদে সিএএ পাস হওয়ার পরে আশঙ্কা তৈরি হয় যে, দেশজুড়ে এবার এনআরসি করা হবে। যার কোপে পড়বে মূলত মুসলিমরা। তাদের ‘পাকিস্তানি’ বা ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে দেশ থেকে বিতাড়ন করা হতে পারে। কারণ, খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ একাধিক জনসভায় হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ‘ঘুসপেটিয়া’দের খুঁজে খুঁজে দেশ থেকে বিতাড়িত করবেন।

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.
সর্বধিক পাঠিত

বাম শাসিত কেরলে বাদ গেল ২৪ লক্ষ নাম, ১৪ লক্ষ ভোটারই অনুপস্থিত

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

দেশজুড়ে এনপিআর, ঘোষণা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের

আপডেট : ৯ নভেম্বর ২০২২, বুধবার

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: দেশজুড়ে শুরু হচ্ছে এনপিআর। এমনটাই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বিরোধীরা, এনপিআর’কে এনআরসি চালুর প্রথম ধাপ বলে দাবি করে থাকে। স্বাভাবিকভাবেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এই ঘোষণায় ফের দেশজুড়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে।

সোমবারই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তাদের বার্ষিক প্রতিবেদন (২০২১-২২) প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, মানুষর জন্ম, মৃত্যু সংক্রান্ত তথ্য ও কেউ পরিযায়ী হলে সেই সংক্রান্ত তথ্য ও পরিবর্তনগুলি অন্তর্ভূক্ত করতে এনপিআর (ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্টার) আপডেট করা হবে। এজন্য প্রতিটি পরিবারের সদস্য সংখ্যা সহ প্রত্যেক ব্যক্তির বিবরণ সংগ্রহ করা হবে।

আরও পড়ুন: ছাব্বিশের এপ্রিল মাস থেকে শুরু জনগণনা, ১১ হাজার কোটি বাজেট ঘোষণা করল কেন্দ্র

কেন্দ্রের বক্তব্য, এনপিআর প্রথম ২০১০ সালে প্রস্তুত করা হয়েছিল। তারপর ২০১৫ সালে দেশের সাধারণ বাসিন্দাদের তথ্য সংগ্রহ করে তা আপডেট করা হয়েছিল। অনেক বিরোধী শাসিত রাজ্য এর বিরোধিতা করেছে।

আরও পড়ুন: ভগবত গীতাই দেশের ‘আসল সংবিধান’: বির্তকে অন্ধ্রের উপমুখ্যমন্ত্রী, ‘অবুঝ’ বলল কংগ্রেস

বিরোধীদের দাবি, ২০০৩ সালের নাগরিকত্বের নিয়ম অনুসারে, এটি এনআরসি চালু করার প্রথম পদক্ষেপ। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে যদিও ফের পালটা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এখনই এনআরসি চালু করার মতো কোনও পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি। তবে কীভাবে এনপিআরের কাজ হবে তার উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এনপিআর তৈরি করা হয়েছে নাগরিকত্ব আইন-১৯৫৫’র প্রণীত নাগরিকত্ব বিধি ও ২০০৩ সালের নাগরিকত্ব বিধির বিভিন্ন বিধানের অধীনে।

আরও পড়ুন: Jucsu polls: জাকসুর ফল প্রকাশ সন্ধ্যা ৭-টায়

২০১৫ সালে যে এনপিআর হয়েছিল সেখানে, প্রত্যেক পরিবারের প্রত্যের ব্যক্তির নাম, লিঙ্গ, জন্ম তারিখ, জন্মস্থান, বসবাসের স্থান ও বাব-মায়ের নাম আপডেট করা হয়েছিল। সংগ্রহ করা হয়েছিল আধার কার্ড, রেশন কার্ড ও মোবাইল ফোনের নম্বর। জন্ম-মৃত্যু ও স্থানান্তরের কারণে সৃষ্ট পরিবর্তনগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ফের একবার এনপিআর আপডেট করা দরকার।

দেশের ১১৫ কোটি বাসিন্দার ডেটাবেস সংবলিত এনপিআরকে আদমশুমারির প্রথম ধাপের সঙ্গে আপডেট করতে হবে, যা ২০১৯ সাল থেকে করোনা মহামারির কারণে অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত করে দেওয়া হয়েছিল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বলেছে, এনপিআর স্ব-গণনার মাধ্যমে আপডেট করা যেতে পারে। কারণ, ওয়েব পোর্টালে কিছু প্রমাণ্যকরণের প্রটোকল মেনে চলার পর বাসিন্দাদের নিজেদের ডেটা আপডেট করার অনুমতি দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে। তবে, রিপোর্টে এনআরসির কোনও উল্লেখ নেই।

উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিগত অর্থবর্ষের (২০২০-২১) রিপোর্টে বলা হয়েছিল, সিএএ একটি সহানুভূতিশীল আইন যা ভারতীয় নাগরিকদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, তাই কোনওভাবেই কোনও ভারতীয় নাগরিকের অধিকার হ্রাসের কোনও প্রশ্নই ওঠে না।

সংসদে সিএএ পাস হওয়ার পরে আশঙ্কা তৈরি হয় যে, দেশজুড়ে এবার এনআরসি করা হবে। যার কোপে পড়বে মূলত মুসলিমরা। তাদের ‘পাকিস্তানি’ বা ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে দেশ থেকে বিতাড়ন করা হতে পারে। কারণ, খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ একাধিক জনসভায় হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ‘ঘুসপেটিয়া’দের খুঁজে খুঁজে দেশ থেকে বিতাড়িত করবেন।