১৭ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দলিতরা ইসলাম গ্রহণ করলে পাবে না সংরক্ষণের সুবিধা: হাইকোর্ট

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ৪ ডিসেম্বর ২০২২, রবিবার
  • / 32

মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতি স্বামীনাথন

পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ পশ্চাৎপদ শ্রেণির হিন্দু তার ধর্ম ছেড়ে ইসলাম ধর্মগ্রহণ করলে সে জাতিভিত্তিক সংরক্ষণের সুবিধা পাবে না বলে রায় দিয়েছে মাদ্রাজ হাইকোর্ট। মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতি জিআর স্বামীনাথন এক ব্যক্তি আর্জি খারিজ করতে গিয়ে উক্ত রায় দিয়েছেন।

এক ব্যক্তি হিন্দুধর্ম ছেড়ে ইসলাম ধর্মগ্রহণ করে আদালতে আবেদন জানায় সে যে জাতিতে (কাস্ট) জন্মেছে সেই জাতি হল দলিত। দলিত শ্রেণি সরকারি স্কুল কলেজ এবং চাকরিতে সংরক্ষণের সুবিধা ভোগ করে থাকে। সেই সূত্রে তাকেও সংরক্ষণের সুবিধা দেওয়া হোক। সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেও সে জন্মেছে দলিত পরিবারে।

আরও পড়ুন: ফাঁসি নয় যাবজ্জীবন, ৪০ বছর জেল প্রেমিক সুশান্ত চৌধুরীর

বিচারপতি স্বামীনাথন সুপ্রিম কোর্টের একাধিক রায় উল্লেখ করে বলেন, একজন হিন্দু যদি ইসলাম ধর্মগ্রহণ করে তাহলে সে জাতি ও বর্ণভিত্তিক সংরক্ষণের সুবিধা দাবি করতে পারে না। কারণ ইসলাম ধর্মে জাতি ধর্মের ভেদাভেদ স্বীকৃত নয়।

আরও পড়ুন: বাক্-স্বাধীনতা থাকলেই ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা যায় না– শর্মিষ্ঠার অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন খারিজ

বিচারপতি স্বামীনাথন এই প্রসঙ্গে কৈলাস সোনকর বনাম মায়াদেবী মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায় উদ্ধৃত করেন। সেই রায়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে একজন হিন্দুর জাতি বা ধর্ম নির্ধারিত হয় তার জন্মের দ্বারা। একজন হিন্দু যদি ইসলাম কিংবা খ্রিস্টান ধর্মগ্রহণ করে তাহলে তার জাতি-ধর্ম সবই লোপ পায় কারণ এই ধর্মগুলি জাতি ধর্ম প্রথায় বিশ্বাস করে না। আবার সেই ধর্মান্তরিত ব্যক্তি যদি ফের তার প্রথম ধর্ম হিন্দুধর্ম গ্রহণ করে, তাহলে তার জাতি-ধর্ম পরিচয় সে ফিরে পাবে।

আরও পড়ুন: সরকারি ট্রেন্ডারে মুসলিমদের ৪ শতাংশ সংরক্ষণ, সিদ্ধান্ত কর্নাটক সরকারের

আবেদনকারী তার আর্জিতে হাইকোর্টকে জানিয়েছে সে ইসলাম ধর্মগ্রহণ করলেও তার পরিবারের সদস্যরা এখনও দলিত হিন্দু। তারা অতি পশ্চাৎপদ শ্রেণিভুক্ত। আবেদনকারী ২০০৮ সালে ইসলাম ধর্মগ্রহণ করে। ২০১৮ সালে সে তামিলনাড়ু কম্বাইন্ড সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসে। কিন্তু সফল প্রার্থীদের তালিকায় তার নাম ওঠেনি। সে আরটিআই করে জানতে পারে যে তাকে সংরক্ষণের সুবিধা দেওয়া হয়নি, তাকে সাধারণ শ্রেণিতে রাখা হয়েছে বলে সে প্রতিযোগিতায় সফল হতে পারেননি। তাকে পশ্চাৎপদ মুসলিম শ্রেণিতেও ধরা হয়নি। সে আদালতে বলে যে, সে ইসলাম ধর্মগ্রহণ করে তার মৌলিক অধিকারের প্রয়োগ করেছে। তাকে পশ্চাৎপদ শ্রেণির সুবিধা দেওয়া হোক।

বিচারপতি স্বামীনাথন এস রুহাইয়া বেগম বনাম তামিলনাড়ু সরকার মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের উল্লেখ করেন। সেখানেও সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে পশ্চাৎপদ হিন্দুধর্মের কেউ ধর্ম পরিবর্তন করালে সে তার জাতি ধর্মভিত্তিক সংরক্ষণের সুবিধা পাবে না।  আবেদনকারীর পক্ষে (আইনজীবী) ছিলেন এম আজমল খান এবং বেঙ্কটেশ কুমার। বিশেষ সরকারি আইনজীবী ছিলেন একে মনিক্কাম এবং আইনজীবী পনির সিলভাম।

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

দলিতরা ইসলাম গ্রহণ করলে পাবে না সংরক্ষণের সুবিধা: হাইকোর্ট

আপডেট : ৪ ডিসেম্বর ২০২২, রবিবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ পশ্চাৎপদ শ্রেণির হিন্দু তার ধর্ম ছেড়ে ইসলাম ধর্মগ্রহণ করলে সে জাতিভিত্তিক সংরক্ষণের সুবিধা পাবে না বলে রায় দিয়েছে মাদ্রাজ হাইকোর্ট। মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতি জিআর স্বামীনাথন এক ব্যক্তি আর্জি খারিজ করতে গিয়ে উক্ত রায় দিয়েছেন।

এক ব্যক্তি হিন্দুধর্ম ছেড়ে ইসলাম ধর্মগ্রহণ করে আদালতে আবেদন জানায় সে যে জাতিতে (কাস্ট) জন্মেছে সেই জাতি হল দলিত। দলিত শ্রেণি সরকারি স্কুল কলেজ এবং চাকরিতে সংরক্ষণের সুবিধা ভোগ করে থাকে। সেই সূত্রে তাকেও সংরক্ষণের সুবিধা দেওয়া হোক। সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেও সে জন্মেছে দলিত পরিবারে।

আরও পড়ুন: ফাঁসি নয় যাবজ্জীবন, ৪০ বছর জেল প্রেমিক সুশান্ত চৌধুরীর

বিচারপতি স্বামীনাথন সুপ্রিম কোর্টের একাধিক রায় উল্লেখ করে বলেন, একজন হিন্দু যদি ইসলাম ধর্মগ্রহণ করে তাহলে সে জাতি ও বর্ণভিত্তিক সংরক্ষণের সুবিধা দাবি করতে পারে না। কারণ ইসলাম ধর্মে জাতি ধর্মের ভেদাভেদ স্বীকৃত নয়।

আরও পড়ুন: বাক্-স্বাধীনতা থাকলেই ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা যায় না– শর্মিষ্ঠার অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন খারিজ

বিচারপতি স্বামীনাথন এই প্রসঙ্গে কৈলাস সোনকর বনাম মায়াদেবী মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায় উদ্ধৃত করেন। সেই রায়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে একজন হিন্দুর জাতি বা ধর্ম নির্ধারিত হয় তার জন্মের দ্বারা। একজন হিন্দু যদি ইসলাম কিংবা খ্রিস্টান ধর্মগ্রহণ করে তাহলে তার জাতি-ধর্ম সবই লোপ পায় কারণ এই ধর্মগুলি জাতি ধর্ম প্রথায় বিশ্বাস করে না। আবার সেই ধর্মান্তরিত ব্যক্তি যদি ফের তার প্রথম ধর্ম হিন্দুধর্ম গ্রহণ করে, তাহলে তার জাতি-ধর্ম পরিচয় সে ফিরে পাবে।

আরও পড়ুন: সরকারি ট্রেন্ডারে মুসলিমদের ৪ শতাংশ সংরক্ষণ, সিদ্ধান্ত কর্নাটক সরকারের

আবেদনকারী তার আর্জিতে হাইকোর্টকে জানিয়েছে সে ইসলাম ধর্মগ্রহণ করলেও তার পরিবারের সদস্যরা এখনও দলিত হিন্দু। তারা অতি পশ্চাৎপদ শ্রেণিভুক্ত। আবেদনকারী ২০০৮ সালে ইসলাম ধর্মগ্রহণ করে। ২০১৮ সালে সে তামিলনাড়ু কম্বাইন্ড সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসে। কিন্তু সফল প্রার্থীদের তালিকায় তার নাম ওঠেনি। সে আরটিআই করে জানতে পারে যে তাকে সংরক্ষণের সুবিধা দেওয়া হয়নি, তাকে সাধারণ শ্রেণিতে রাখা হয়েছে বলে সে প্রতিযোগিতায় সফল হতে পারেননি। তাকে পশ্চাৎপদ মুসলিম শ্রেণিতেও ধরা হয়নি। সে আদালতে বলে যে, সে ইসলাম ধর্মগ্রহণ করে তার মৌলিক অধিকারের প্রয়োগ করেছে। তাকে পশ্চাৎপদ শ্রেণির সুবিধা দেওয়া হোক।

বিচারপতি স্বামীনাথন এস রুহাইয়া বেগম বনাম তামিলনাড়ু সরকার মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের উল্লেখ করেন। সেখানেও সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে পশ্চাৎপদ হিন্দুধর্মের কেউ ধর্ম পরিবর্তন করালে সে তার জাতি ধর্মভিত্তিক সংরক্ষণের সুবিধা পাবে না।  আবেদনকারীর পক্ষে (আইনজীবী) ছিলেন এম আজমল খান এবং বেঙ্কটেশ কুমার। বিশেষ সরকারি আইনজীবী ছিলেন একে মনিক্কাম এবং আইনজীবী পনির সিলভাম।