২৮ জুলাই ২০২৫, সোমবার, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

২৫ শতাংশ পকসো মামলার নেপথ্যেই রয়েছে প্রণয়ঘটিত সম্পর্ক, উদ্বেগ প্রকাশ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২২, সোমবার
  • / 41

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক : সমাজে প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে নানান অপরাধমূলক ঘটনা। তার মধ্যে খবরের শিরোনামে রয়েছে নারী নির্যাতন। তবে তার মধ্যে সব থেকে উদ্বেগের বিষয় নাবালিকার ওপরে পাশবিক অত্যাচার চালানোর মতো নৃশংসতা।

এক্ষেত্রে গবেষণায় দেখা যাচ্ছে এই অপরাধমূলক কাজ কর্ম বৃদ্ধি পাচ্ছে অভিযোগকারিণী নাবালিকার সঙ্গে অভিযুক্তের পূর্ব পরিচয় থেকে। দুজনের সম্মতিতেই গড়ে উঠছে প্রণয়ঘটিত সম্পর্ক। তার পরেই ঘটেছে করুণ পরিণতি। অনেক সময় ১৮ বছরের নীচে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি হওয়া থেকে শুরু করে বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। ২৫ শতাংশ পকসো মামলার নেপথ্যেই রয়েছে প্রণয়ঘটিত সম্পর্ক।

আরও পড়ুন: আদানির শেয়ারের দাম বাড়ল ২৫ শতাংশ

এবার এই অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়।
একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, এই মুহূর্তে ২৫ শতাংশ পসকো মামলায় খবরের শিরোনামে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, অসম ও মহারাষ্ট্র এই তিনটি রাজ্যের নাম। পকসো মামলায় অধিকাংশ ঘটনার সূত্রপাত রোমান্টিক সম্পর্ক থেকেই, এমনই বলছে সমীক্ষা। এই অবস্থায় উদ্বেগ প্রকাশ করে শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় কিশোর-কিশোরীদের অপরাধপ্রবণ মনোবৃত্তি মোকাবিলায় আইনপ্রণেতার আহ্বান জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন: ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত আসনের বন্দোবস্তঃ বিদেশী শিক্ষার্থীদের দিতে হবে না কোনও প্রবেশিকা পরীক্ষা, নির্দেশ ইউজিসির

এনফোল্ড প্রোঅ্যাকটিভ হেলথ ট্রাস্ট এবং ইউনিসেফ-ইন্ডিয়া’র তথ্য অনুসারে পশ্চিমবঙ্গ, অসম এবং মহারাষ্ট্রে যৌন অপরাধ থেকে শিশুদের সুরক্ষা (পকসো) আইনের অধীনে প্রতি চারটির মধ্যে একটি পকসো মামলা নথিভূক্ত হয়। আর নেপথ্যে রয়েছে রোমান্টিক বা প্রণয়ঘটিত সম্পর্ক। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পকসো মামলায় দেখা গেছে নির্যাতিতার সঙ্গে অভিযুক্তের প্রণয়ঘটিত সম্পর্ক ছিল।

উল্লেখযোগ্যভাবে সমীক্ষায় জানা গেছে, পকসো মামলায় প্রায় ৪৬.৬ শতাংশ প্রণয়ঘটিত সম্পর্কের মধ্যে মেয়েটির বয়স ছিল ১৬ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। বয়ঃসন্ধিকালে নাবালিকাদের সহমতে ক্রমবর্ধমান শারীরিক সম্পর্কগুলিতে জড়িয়ে পড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়।

গবেষক স্বাগতা রাহা ও শ্রুতি রামাকৃষ্ণান ২০১৬ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে অসম, মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গে দায়ের হওয়া ৭.০৬৪ পকসো মামলার ওপরে গবেষণা চালিয়েছেন। সেখানে ১৭১৫টি মামলায় দেখা গেছে অভিযোগকারিণী ও অভিযুক্ত আগে থেকেই সম্পর্কে লিপ্ত ছিল।

১০ ডিসেম্বর প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ১৫০৮টি’র মধ্যে ৮৭.৯ শতাংশ মামলায় অভিযোগকারী ও অভিযুক্তের মধ্যে প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল।  আদালতে শুনানির সময়েও অভিযোগকারিণী নাবালিকাকে অভিযুক্তের সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্কের কথা স্বীকার করতে দেখা গেছে।    আবার অনেক সময় পুলিশি তদন্তে সেই সম্পর্কের কথা সামনে এসেছে।

সমীক্ষায় আরও দেখা গিয়েছে ফৌজদারি মামলার অধীনে নাবালিকাদের পরিবারের অমতে বিবাহ নিয়ন্ত্রণ করা সহ পালিয়ে গেলে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে।

গবেষক শ্রুতি রামকৃষ্ণান জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত সমীক্ষায় পকসো মামলায় যে পরিসংখ্যান উঠে এসেছে তার থেকেও হয়তো সেই সংখ্যা আরও বেশি। কিছু ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রে মামলাগুলি রেকর্ড করা হয় আদালতে। তবে অনেক সময় প্রণয়ঘটিত সম্পর্কের ক্ষেত্রে অভিযুক্ত বেকসুর খালাস পেয়ে যায়।

শ্রুতি’র দাবি ১৮ বছরের নীচে বিবাহের অনুমতি দেওয়া না হলেও, আদালত এই ধরনের মামলায় নম্র মনোভাব পোষণ করে থাকে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

২৫ শতাংশ পকসো মামলার নেপথ্যেই রয়েছে প্রণয়ঘটিত সম্পর্ক, উদ্বেগ প্রকাশ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির

আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২২, সোমবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক : সমাজে প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে নানান অপরাধমূলক ঘটনা। তার মধ্যে খবরের শিরোনামে রয়েছে নারী নির্যাতন। তবে তার মধ্যে সব থেকে উদ্বেগের বিষয় নাবালিকার ওপরে পাশবিক অত্যাচার চালানোর মতো নৃশংসতা।

এক্ষেত্রে গবেষণায় দেখা যাচ্ছে এই অপরাধমূলক কাজ কর্ম বৃদ্ধি পাচ্ছে অভিযোগকারিণী নাবালিকার সঙ্গে অভিযুক্তের পূর্ব পরিচয় থেকে। দুজনের সম্মতিতেই গড়ে উঠছে প্রণয়ঘটিত সম্পর্ক। তার পরেই ঘটেছে করুণ পরিণতি। অনেক সময় ১৮ বছরের নীচে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি হওয়া থেকে শুরু করে বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। ২৫ শতাংশ পকসো মামলার নেপথ্যেই রয়েছে প্রণয়ঘটিত সম্পর্ক।

আরও পড়ুন: আদানির শেয়ারের দাম বাড়ল ২৫ শতাংশ

এবার এই অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়।
একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, এই মুহূর্তে ২৫ শতাংশ পসকো মামলায় খবরের শিরোনামে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, অসম ও মহারাষ্ট্র এই তিনটি রাজ্যের নাম। পকসো মামলায় অধিকাংশ ঘটনার সূত্রপাত রোমান্টিক সম্পর্ক থেকেই, এমনই বলছে সমীক্ষা। এই অবস্থায় উদ্বেগ প্রকাশ করে শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় কিশোর-কিশোরীদের অপরাধপ্রবণ মনোবৃত্তি মোকাবিলায় আইনপ্রণেতার আহ্বান জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন: ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত আসনের বন্দোবস্তঃ বিদেশী শিক্ষার্থীদের দিতে হবে না কোনও প্রবেশিকা পরীক্ষা, নির্দেশ ইউজিসির

এনফোল্ড প্রোঅ্যাকটিভ হেলথ ট্রাস্ট এবং ইউনিসেফ-ইন্ডিয়া’র তথ্য অনুসারে পশ্চিমবঙ্গ, অসম এবং মহারাষ্ট্রে যৌন অপরাধ থেকে শিশুদের সুরক্ষা (পকসো) আইনের অধীনে প্রতি চারটির মধ্যে একটি পকসো মামলা নথিভূক্ত হয়। আর নেপথ্যে রয়েছে রোমান্টিক বা প্রণয়ঘটিত সম্পর্ক। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পকসো মামলায় দেখা গেছে নির্যাতিতার সঙ্গে অভিযুক্তের প্রণয়ঘটিত সম্পর্ক ছিল।

উল্লেখযোগ্যভাবে সমীক্ষায় জানা গেছে, পকসো মামলায় প্রায় ৪৬.৬ শতাংশ প্রণয়ঘটিত সম্পর্কের মধ্যে মেয়েটির বয়স ছিল ১৬ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। বয়ঃসন্ধিকালে নাবালিকাদের সহমতে ক্রমবর্ধমান শারীরিক সম্পর্কগুলিতে জড়িয়ে পড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়।

গবেষক স্বাগতা রাহা ও শ্রুতি রামাকৃষ্ণান ২০১৬ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে অসম, মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গে দায়ের হওয়া ৭.০৬৪ পকসো মামলার ওপরে গবেষণা চালিয়েছেন। সেখানে ১৭১৫টি মামলায় দেখা গেছে অভিযোগকারিণী ও অভিযুক্ত আগে থেকেই সম্পর্কে লিপ্ত ছিল।

১০ ডিসেম্বর প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ১৫০৮টি’র মধ্যে ৮৭.৯ শতাংশ মামলায় অভিযোগকারী ও অভিযুক্তের মধ্যে প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল।  আদালতে শুনানির সময়েও অভিযোগকারিণী নাবালিকাকে অভিযুক্তের সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্কের কথা স্বীকার করতে দেখা গেছে।    আবার অনেক সময় পুলিশি তদন্তে সেই সম্পর্কের কথা সামনে এসেছে।

সমীক্ষায় আরও দেখা গিয়েছে ফৌজদারি মামলার অধীনে নাবালিকাদের পরিবারের অমতে বিবাহ নিয়ন্ত্রণ করা সহ পালিয়ে গেলে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে।

গবেষক শ্রুতি রামকৃষ্ণান জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত সমীক্ষায় পকসো মামলায় যে পরিসংখ্যান উঠে এসেছে তার থেকেও হয়তো সেই সংখ্যা আরও বেশি। কিছু ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রে মামলাগুলি রেকর্ড করা হয় আদালতে। তবে অনেক সময় প্রণয়ঘটিত সম্পর্কের ক্ষেত্রে অভিযুক্ত বেকসুর খালাস পেয়ে যায়।

শ্রুতি’র দাবি ১৮ বছরের নীচে বিবাহের অনুমতি দেওয়া না হলেও, আদালত এই ধরনের মামলায় নম্র মনোভাব পোষণ করে থাকে।