২৪ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জনবিস্ফোরণ! চিনকেও ছাপিয়ে যাবে ভারত, ২০৫০ সালে দেশের জনসংখ্যা ১৬৬ কোটি ছাড়াবে

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১৮ জানুয়ারী ২০২৩, বুধবার
  • / 33

বিশেষ প্রতিবেদন: বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হল চিন। এবার জনংখ্যার দিক দিয়ে সেই চিনকেই ছাড়িতে যেতে চলেছে ভারত। এমনই একটি সমীক্ষা উঠে এসেছে। বিশ্ব জনসংখ্যা পর্যালোচনা (ডাব্লুপিআর)-এর করা একটি সমীক্ষায় জানানো হয়েছে ২০২২ সালের শেষ পর্যন্ত ভারতের জনসংখ্যা ছিল ১৪১.৭ কোটি।   ২০২৩-এর নভেম্বর মাসের মধ্যে বিশ্বে জনসংখ্যা ৮০০ কোটি ছাড়াবে বলেও রিপোর্ট উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২২ সালে বিশ্বের দুটি সর্বাধিক জনবহুল অঞ্চল ছিল পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। যেখানে ২.৩ বিলিয়ন জনসংখ্যা ছিল, যা বিশ্বে জনসংখ্যার ২৯ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব করেন। মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় ছিল ২.১ বিলিয়ন, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ২৬ শতাংশ। ডাব্লুপিআর-এর সমীক্ষা অনুসারে, গত বছরের ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ভারতের জনসংখ্যা বেড়ে ১৪৩.৩ কোটিতে পৌঁছেছে।

আরও পড়ুন: চিনের সতর্কবার্তা: ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা বিশ্বে বিপর্যয় নামিয়ে আনতে পারে

সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিবেদন অনুসারে যদিও ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির গতি কমেছে, তবুও এটি কমপক্ষে ২০৫০ সাল পর্যন্ত বেড়ে চলবে। রিপোর্ট অনুসারে ২০২২ সালে ভারতের জনসংখ্যা ১.৪১২ বিলিয়ন হতে চলেছে। সেখানে চিনের জনসংখ্যা ১.৪২৬ বিলিয়ন। ২০২৩ সালে ভারত শুধু চিনকে ছাপিয়ে যাবে তা নয়, আর ২০৫০ সালে ভারতের জনসংখ্যা হবে ১৬৬ কোটি ৮০ লক্ষ। বলে রিপোর্টে অনুমান করা হয়েছে। সেখানে চিনের জনসংখ্যা হবে ১৩১ কোটি।

আরও পড়ুন: ফ্রান্সের পর প্রথম ভারতে তৈরি হবে ফ্যালকন জেট

ভিন্ন মতে মাইক্রোট্রেন্ডের গবেষণা অনুসারে, এই মুহূর্তে ভারতের জনসংখ্যা ১৪২.৮ কোটি। ২০২১ সালে করোনা মহামারির কারণে জনসংখ্যাভিত্তিক সমীক্ষা বন্ধ ছিল, সেই কারণে দীর্ঘ দশ বছরে একবার আদমশুমারির প্রকাশ করা হয়নি।
রাষ্ট্রসংঘের সেক্রেটারি-জেনারেল আন্তোনিও গুতেরস ২০২২-এ বলেন, এই বছরের বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস এক মাইলফলক ছুঁয়েছে। চলতি বছরেই বিশ্বের জনসংখ্যা ৮০০ কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

আরও পড়ুন: চিনের নাগরিকদের ‘যত দ্রুত সম্ভব’ ইসরাইল ছাড়ার পরামর্শ

এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম দেশ ভারত বর্তমানে খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। চাল, গম এবং চিনি উৎপাদনের দিক থেকে এটি দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। ভোজ্য তেলের শীর্ষস্থানীয় আমদানিকারক হওয়া সত্ত্বেও, চিনির বৃহত্তম গ্রাহকও। ভারত বিশ্বের তৃতীয়তম দেশীয় বিমান চলাচলের বাজার। ভারতের মধ্যে ৮০ কোটি মানুষ বিনামূল্যে রেশন পরিষেবা পেয়ে থাকেন। জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, চিনের জনসংখ্যা আগের বছরের তুলনায় ২০২২ সালে ৮.৫ লক্ষ কমেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে আর্থিক অবস্থার উন্নতি হলেও জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ভারতের কাছে আগামীদিনে একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এক সন্তান নীতি চিন গ্রহণ করায় ওই দেশে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হলেও, ভারতের ক্ষেত্রে তা হয়নি। প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা প্রয়াত সঞ্জয় গান্ধি এক সন্তান নীতির চালুর পক্ষে সওয়াল করলেও, তা নিয়ে সেই সময় বিতর্ক শুরু হয়। সচেতনতার মাধ্যমে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের পক্ষেই মত দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু ভারতে তা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়।

২০২২ থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে ৬১টি দেশের জনসংখ্যা এক শতাংশ বা তার বেশি কমবে। তার মধ্যে আছে চিন, রাশিয়া, বুলগেরিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, সার্বিয়া ও ইউক্রেন। ২০৫০ সালে বিশ্বের জনসংখ্যা যা বাড়বে তার অর্ধেকের বেশি হবে ৮টি দেশের। এই আট দেশ হল, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গো, মিশর, ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, ফিলিপাইন্স ও ভারত।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

জনবিস্ফোরণ! চিনকেও ছাপিয়ে যাবে ভারত, ২০৫০ সালে দেশের জনসংখ্যা ১৬৬ কোটি ছাড়াবে

আপডেট : ১৮ জানুয়ারী ২০২৩, বুধবার

বিশেষ প্রতিবেদন: বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হল চিন। এবার জনংখ্যার দিক দিয়ে সেই চিনকেই ছাড়িতে যেতে চলেছে ভারত। এমনই একটি সমীক্ষা উঠে এসেছে। বিশ্ব জনসংখ্যা পর্যালোচনা (ডাব্লুপিআর)-এর করা একটি সমীক্ষায় জানানো হয়েছে ২০২২ সালের শেষ পর্যন্ত ভারতের জনসংখ্যা ছিল ১৪১.৭ কোটি।   ২০২৩-এর নভেম্বর মাসের মধ্যে বিশ্বে জনসংখ্যা ৮০০ কোটি ছাড়াবে বলেও রিপোর্ট উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২২ সালে বিশ্বের দুটি সর্বাধিক জনবহুল অঞ্চল ছিল পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। যেখানে ২.৩ বিলিয়ন জনসংখ্যা ছিল, যা বিশ্বে জনসংখ্যার ২৯ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব করেন। মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় ছিল ২.১ বিলিয়ন, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ২৬ শতাংশ। ডাব্লুপিআর-এর সমীক্ষা অনুসারে, গত বছরের ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ভারতের জনসংখ্যা বেড়ে ১৪৩.৩ কোটিতে পৌঁছেছে।

আরও পড়ুন: চিনের সতর্কবার্তা: ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা বিশ্বে বিপর্যয় নামিয়ে আনতে পারে

সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিবেদন অনুসারে যদিও ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির গতি কমেছে, তবুও এটি কমপক্ষে ২০৫০ সাল পর্যন্ত বেড়ে চলবে। রিপোর্ট অনুসারে ২০২২ সালে ভারতের জনসংখ্যা ১.৪১২ বিলিয়ন হতে চলেছে। সেখানে চিনের জনসংখ্যা ১.৪২৬ বিলিয়ন। ২০২৩ সালে ভারত শুধু চিনকে ছাপিয়ে যাবে তা নয়, আর ২০৫০ সালে ভারতের জনসংখ্যা হবে ১৬৬ কোটি ৮০ লক্ষ। বলে রিপোর্টে অনুমান করা হয়েছে। সেখানে চিনের জনসংখ্যা হবে ১৩১ কোটি।

আরও পড়ুন: ফ্রান্সের পর প্রথম ভারতে তৈরি হবে ফ্যালকন জেট

ভিন্ন মতে মাইক্রোট্রেন্ডের গবেষণা অনুসারে, এই মুহূর্তে ভারতের জনসংখ্যা ১৪২.৮ কোটি। ২০২১ সালে করোনা মহামারির কারণে জনসংখ্যাভিত্তিক সমীক্ষা বন্ধ ছিল, সেই কারণে দীর্ঘ দশ বছরে একবার আদমশুমারির প্রকাশ করা হয়নি।
রাষ্ট্রসংঘের সেক্রেটারি-জেনারেল আন্তোনিও গুতেরস ২০২২-এ বলেন, এই বছরের বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস এক মাইলফলক ছুঁয়েছে। চলতি বছরেই বিশ্বের জনসংখ্যা ৮০০ কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

আরও পড়ুন: চিনের নাগরিকদের ‘যত দ্রুত সম্ভব’ ইসরাইল ছাড়ার পরামর্শ

এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম দেশ ভারত বর্তমানে খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। চাল, গম এবং চিনি উৎপাদনের দিক থেকে এটি দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। ভোজ্য তেলের শীর্ষস্থানীয় আমদানিকারক হওয়া সত্ত্বেও, চিনির বৃহত্তম গ্রাহকও। ভারত বিশ্বের তৃতীয়তম দেশীয় বিমান চলাচলের বাজার। ভারতের মধ্যে ৮০ কোটি মানুষ বিনামূল্যে রেশন পরিষেবা পেয়ে থাকেন। জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, চিনের জনসংখ্যা আগের বছরের তুলনায় ২০২২ সালে ৮.৫ লক্ষ কমেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে আর্থিক অবস্থার উন্নতি হলেও জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ভারতের কাছে আগামীদিনে একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এক সন্তান নীতি চিন গ্রহণ করায় ওই দেশে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হলেও, ভারতের ক্ষেত্রে তা হয়নি। প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা প্রয়াত সঞ্জয় গান্ধি এক সন্তান নীতির চালুর পক্ষে সওয়াল করলেও, তা নিয়ে সেই সময় বিতর্ক শুরু হয়। সচেতনতার মাধ্যমে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের পক্ষেই মত দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু ভারতে তা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়।

২০২২ থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে ৬১টি দেশের জনসংখ্যা এক শতাংশ বা তার বেশি কমবে। তার মধ্যে আছে চিন, রাশিয়া, বুলগেরিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, সার্বিয়া ও ইউক্রেন। ২০৫০ সালে বিশ্বের জনসংখ্যা যা বাড়বে তার অর্ধেকের বেশি হবে ৮টি দেশের। এই আট দেশ হল, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গো, মিশর, ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, ফিলিপাইন্স ও ভারত।