০৫ নভেম্বর ২০২৫, বুধবার, ১৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আলিয়া সংসদের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার প্রদান

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২৩, সোমবার
  • / 48

‘স্মরণ:আবদুল রাউফ’ বইয়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে (বাঁদিক থেকে) সিরাজুল ইসলাম, আহমদ হাসান ইমরান, আমজাদ হোসেন, মেঘ মুখোপাধ্যায়, শহীদুল ইসলাম, সাইফুল্লা।

পুবের কলম প্রতিবেদক: বিগত চার বছর ধরে শিক্ষা- সংস্কৃতি  সামাজিক গবেষণা, বই প্রকাশ ইত্যাদি নিয়ে কাজ করছে আলিয়া সংস্কৃতি সংসদ। এরই পাশাপাশি সংগঠনটি ‘উজ্জীবন’ বলে একটি  পত্রিকা প্রকাশ করে থাকে। সব মিলিয়ে বাঙালি মুসলিমদের শিক্ষা-সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও ইতিহাস নিয়ে কাজ করে থাকে সংগঠনটি।  সংসদের উদ্যোগে রবিবার অপরাহ্নে ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেসের সভাকক্ষে বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হল। এ দিন ৩জনকে পুরস্কার প্রদান করা হয়।

এ দিন আলিয়া সংস্কৃতি সংসদের পক্ষ থেকে লেখক খাজিম আহমদ,  সুমিতা দাস ও সৈয়দ রেজাউল করিমকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। সুমিতা দাস তাঁর লেখা পুস্তক ‘অন্য এক রেনেসাঁস’-এর জন্য ইতিমধ্যেই বিদ্বজন মহলে সাড়া ফেলেছেন। পুস্তকটি তিনি লিখেছেন ‘আরবি ও ইসলামীয় সভ্যতার স্বর্ণ যুগে জ্ঞান-বিজ্ঞানে বিকাশ’ সম্পর্কে। তাঁকে প্রদান করা হয় ‘রোকেয়া পুরস্কার ২০২৩’।

একইসঙ্গে সদ্য প্রয়াত বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ও লেখক আবদুর রাউফকে নিয়ে ‘স্মরণ: আবদুর রাউফ’ শীর্ষক সংকলন বই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়। এছাড়াও আলিয়া সংস্কৃতি সংসদের মুখপত্র  উজ্জীবনের ফেব্রুয়ারি সংখ্যাও মঞ্চে বিদ্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এটি প্রকাশ করেন পুবের কলম পত্রিকার সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান। উপস্থিত ছিলেন নতুন গতি পত্রিকার সম্পাদক এমদাদুল হক নূর, রাহেলা পত্রিকার সম্পাদক আবদুর রব খান, উদার আকাশের সম্পাদক ফারুক আহমেদ ও আপনজন পত্রিকার জাইদুল হক।

আলিয়া সংস্কৃতি সংসদ কি ধরনের কাজ করছে, তার বিবরণ দেন  দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভিন্ন বিভাগীয় পরিচালক অধ্যক্ষ আফসার আলি, হাফিজুর রহমান, ইনাসউদ্দীন, ড. শেখ কামালউদ্দীন প্রমুখ। সভা পরিচালনায় ছিলেন অধ্যাপক সাইফুল্লাহ, তিনি আলিয়া সংস্কৃতি সংসদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য, সমস্যা ও সম্ভাবনা তুলে ধরেন। সংগঠনের  সভাপতি অধ্যাপক আমজাদ হোসেনও অনুষ্ঠানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।

সংগঠনের সামাজিক গবেষণা শাখার অধ্যক্ষ অধ্যাপক আফসার আলী পুবের কলম প্রতিবেদককে বলেন, দেশভাগের সময় বাঙালি মুসলিমদের একটা বড় অংশ যারা শিক্ষা-সংস্কৃতিক জগতে  প্রথিতযশা তাঁরা ওপারে চলে যান। তার ফলে এপার বাংলায় একটি শূন্যতা তৈরি হয়েছিল। আমাদের বর্তমান সমাজ সেইভাবে সচেতন নয়, তাই আমরা সব ঐতিহ্য ভুলতে বসেছি। কারও প্রতি দোষ দিচ্ছি না, তবে বলব এ. কে ফজলুল হক,  শহীদুল্লাহদের মতো বিশিষ্টদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য আমাদের তুলে ধরতে হবে। তা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। ইতিমধ্যে এমন কিছু প্রকল্প নেওয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

আলিয়া সংস্কৃতি সংসদের প্রকাশনা অধ্যক্ষ হাফিজুর রহমান তাদের  বর্তমান প্রকাশনামূলক কাজকর্মের বিষয়ে আলোচনা করেন। তিনি জানান, শুধুমাত্র আলমারি ভর্তি করার জন্য তাঁরা বই প্রকাশ করবেন না ইতিহাস ও গবেষণামূলক যে সমস্ত তথ্য মুসলিমদের সামাজিক বা সংস্কৃতিক ঐতিহ্য বহন করছে, সে সম্পর্কে বই প্রকাশে তাঁরা বেশি নজর দেবে।

আলিয়া সংস্কৃতি সংসদের এ দিনের অনুষ্ঠানে বহু বিশিষ্টজন উপস্থিত  ছিলেন। তাঁদের মধ্যে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, বিশিষ্ট সমাজকর্মী ও লেখক মহিউদ্দিন সরকার, মীরাতুন নাহার, তথ্যচিত্র নির্মাতা মুজিবর রহমান, মৃত্যুঞ্জয় পাল, শহীদুল ইসলাম প্রমুখ।

বার্ষিক সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে নজরুলের গান ও কবিতা পরিবেশনা শ্রোতা-দর্শকদের নজর কাড়ে সোমঋতা মল্লিকের  নেতৃত্বে ছায়ানট শিল্পী গোষ্ঠী। নবী মুহাম্মদ সা.কে নিয়ে তাসনীম হাসানের একটি বই প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

আলিয়া সংসদের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার প্রদান

আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২৩, সোমবার

পুবের কলম প্রতিবেদক: বিগত চার বছর ধরে শিক্ষা- সংস্কৃতি  সামাজিক গবেষণা, বই প্রকাশ ইত্যাদি নিয়ে কাজ করছে আলিয়া সংস্কৃতি সংসদ। এরই পাশাপাশি সংগঠনটি ‘উজ্জীবন’ বলে একটি  পত্রিকা প্রকাশ করে থাকে। সব মিলিয়ে বাঙালি মুসলিমদের শিক্ষা-সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও ইতিহাস নিয়ে কাজ করে থাকে সংগঠনটি।  সংসদের উদ্যোগে রবিবার অপরাহ্নে ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেসের সভাকক্ষে বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হল। এ দিন ৩জনকে পুরস্কার প্রদান করা হয়।

এ দিন আলিয়া সংস্কৃতি সংসদের পক্ষ থেকে লেখক খাজিম আহমদ,  সুমিতা দাস ও সৈয়দ রেজাউল করিমকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। সুমিতা দাস তাঁর লেখা পুস্তক ‘অন্য এক রেনেসাঁস’-এর জন্য ইতিমধ্যেই বিদ্বজন মহলে সাড়া ফেলেছেন। পুস্তকটি তিনি লিখেছেন ‘আরবি ও ইসলামীয় সভ্যতার স্বর্ণ যুগে জ্ঞান-বিজ্ঞানে বিকাশ’ সম্পর্কে। তাঁকে প্রদান করা হয় ‘রোকেয়া পুরস্কার ২০২৩’।

একইসঙ্গে সদ্য প্রয়াত বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ও লেখক আবদুর রাউফকে নিয়ে ‘স্মরণ: আবদুর রাউফ’ শীর্ষক সংকলন বই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়। এছাড়াও আলিয়া সংস্কৃতি সংসদের মুখপত্র  উজ্জীবনের ফেব্রুয়ারি সংখ্যাও মঞ্চে বিদ্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এটি প্রকাশ করেন পুবের কলম পত্রিকার সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান। উপস্থিত ছিলেন নতুন গতি পত্রিকার সম্পাদক এমদাদুল হক নূর, রাহেলা পত্রিকার সম্পাদক আবদুর রব খান, উদার আকাশের সম্পাদক ফারুক আহমেদ ও আপনজন পত্রিকার জাইদুল হক।

আলিয়া সংস্কৃতি সংসদ কি ধরনের কাজ করছে, তার বিবরণ দেন  দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভিন্ন বিভাগীয় পরিচালক অধ্যক্ষ আফসার আলি, হাফিজুর রহমান, ইনাসউদ্দীন, ড. শেখ কামালউদ্দীন প্রমুখ। সভা পরিচালনায় ছিলেন অধ্যাপক সাইফুল্লাহ, তিনি আলিয়া সংস্কৃতি সংসদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য, সমস্যা ও সম্ভাবনা তুলে ধরেন। সংগঠনের  সভাপতি অধ্যাপক আমজাদ হোসেনও অনুষ্ঠানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।

সংগঠনের সামাজিক গবেষণা শাখার অধ্যক্ষ অধ্যাপক আফসার আলী পুবের কলম প্রতিবেদককে বলেন, দেশভাগের সময় বাঙালি মুসলিমদের একটা বড় অংশ যারা শিক্ষা-সংস্কৃতিক জগতে  প্রথিতযশা তাঁরা ওপারে চলে যান। তার ফলে এপার বাংলায় একটি শূন্যতা তৈরি হয়েছিল। আমাদের বর্তমান সমাজ সেইভাবে সচেতন নয়, তাই আমরা সব ঐতিহ্য ভুলতে বসেছি। কারও প্রতি দোষ দিচ্ছি না, তবে বলব এ. কে ফজলুল হক,  শহীদুল্লাহদের মতো বিশিষ্টদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য আমাদের তুলে ধরতে হবে। তা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। ইতিমধ্যে এমন কিছু প্রকল্প নেওয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

আলিয়া সংস্কৃতি সংসদের প্রকাশনা অধ্যক্ষ হাফিজুর রহমান তাদের  বর্তমান প্রকাশনামূলক কাজকর্মের বিষয়ে আলোচনা করেন। তিনি জানান, শুধুমাত্র আলমারি ভর্তি করার জন্য তাঁরা বই প্রকাশ করবেন না ইতিহাস ও গবেষণামূলক যে সমস্ত তথ্য মুসলিমদের সামাজিক বা সংস্কৃতিক ঐতিহ্য বহন করছে, সে সম্পর্কে বই প্রকাশে তাঁরা বেশি নজর দেবে।

আলিয়া সংস্কৃতি সংসদের এ দিনের অনুষ্ঠানে বহু বিশিষ্টজন উপস্থিত  ছিলেন। তাঁদের মধ্যে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, বিশিষ্ট সমাজকর্মী ও লেখক মহিউদ্দিন সরকার, মীরাতুন নাহার, তথ্যচিত্র নির্মাতা মুজিবর রহমান, মৃত্যুঞ্জয় পাল, শহীদুল ইসলাম প্রমুখ।

বার্ষিক সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে নজরুলের গান ও কবিতা পরিবেশনা শ্রোতা-দর্শকদের নজর কাড়ে সোমঋতা মল্লিকের  নেতৃত্বে ছায়ানট শিল্পী গোষ্ঠী। নবী মুহাম্মদ সা.কে নিয়ে তাসনীম হাসানের একটি বই প্রকাশিত হয়।