০৫ নভেম্বর ২০২৫, বুধবার, ১৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লাইলাতুল কদরে রাসূলুল্লাহ্ সা.-এর অভ্যাস

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২৩, মঙ্গলবার
  • / 55

মাওলানা আবদুল মান্নান: আজ লাইলাতুল কদরের রাত। সমগ্র মুসলিম জাহান এই রাতটির জন্য অধীর অপেক্ষায় রয়েছেন। নবী করিম সা. বলেছেন, ‘লাইলাতুল কদরকে রমযানের শেষ ১০ দিনের বিজোড় রাতগুলোতে অন্বেষণ করো’ (বুখারী)। অধিকাংশ আলেমদের মতে, ২৭ রমযানের রাতে এর সম্ভাবনা  বেশি।

হযরত ইবনে আব্বাস রা. বলেন, (গাণিতিক হিসেবে) লাইলাতুল কদর রমযানের ২৭ তারিখে হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। হযরত আয়েশা রা. বলেন, ‘নবী করীম সা. রমযানের শেষ ১০ দিন রাতের ইবাদাত  করার জন্য নিজে কোমর বাঁধতেন এবং পরিবারের সকলকে ওই রাতগুলোতে জেগে ইবাদাত করার জন্য উৎসাহিত করতেন।’ অন্য একটি হাদিসে তিনি বলেন, নবী করীম সা. রমযানের শেষ ১০ দিন ইবাদাতে কঠোর মেহনত করতেন। কদরের এক অর্থ মাহাত্ম্য, মর্যাদা ও সম্মান। আর এই সম্মানিত রাতে ‘কুরআন’ নাযিল হওয়ায় এই রাত এক বিশেষ গুরুত্ব ও মর্যাদা বহন করছে। এই রাতের ইবাদাত এক হাজার মাসের ইবাদাতের চেয়েও উত্তম। এক হাজার মাস প্রায় ৮৩ বছর ৪ মাসে হয়। সাধারণত একটি মানুষের গড়ে বেঁচে থাকার চেয়েও বেশি সময় হচ্ছে। তাই মানুষ যদি এই রাতটি ইবাদাতে কাটিয়ে দিতে পারে, তাহলে সারাজীবনের ইবাদাতের চেয়েও বেশি সওয়াব বা পুণ্য অর্জন করা যাবে।

কদরের আর এক অর্থ তাকদির (ভাগ্য)। এই রাতে পরবর্তী এক বছরের নির্ধারিত লিপি ব্যবস্থাপক ও ফেরেশতাগণের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এতে প্রত্যেক মানুষের জীবন, মৃত্যু ও রিযক ইত্যাদির বিবরণ  থাকে। আর অনুতপ্ত হৃদয়ের দোয়া ভাগ্যের লিখনকেও খণ্ডন করতে সাহায্য করে। (আল হাদিস)

শান্তিময় ও এই রাত ফযরের উদয় পর্যন্ত থাকে। ফেরেশতাগণ দুনিয়াবাসীর প্রতি রহমত ও কল্যাণ বর্ষণ  করতে থাকে এবং এ রাতে ইবাদাতে লিপ্ত থাকা বান্দাহদের জাহান্নাম থেকে নাজাতের সুসংবাদ  শোনান। ক্বদর রাতের দোয়া ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন, তুহিব্বাল আফউয়া-ফাআফু আন্নী ইয়া কারীম।’ এই দোয়া প্রিয় নবী করীম সা. হযরত আয়েশা রা.-কে কদরের রাতে পাঠ করতে বলেছেন।

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

লাইলাতুল কদরে রাসূলুল্লাহ্ সা.-এর অভ্যাস

আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২৩, মঙ্গলবার

মাওলানা আবদুল মান্নান: আজ লাইলাতুল কদরের রাত। সমগ্র মুসলিম জাহান এই রাতটির জন্য অধীর অপেক্ষায় রয়েছেন। নবী করিম সা. বলেছেন, ‘লাইলাতুল কদরকে রমযানের শেষ ১০ দিনের বিজোড় রাতগুলোতে অন্বেষণ করো’ (বুখারী)। অধিকাংশ আলেমদের মতে, ২৭ রমযানের রাতে এর সম্ভাবনা  বেশি।

হযরত ইবনে আব্বাস রা. বলেন, (গাণিতিক হিসেবে) লাইলাতুল কদর রমযানের ২৭ তারিখে হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। হযরত আয়েশা রা. বলেন, ‘নবী করীম সা. রমযানের শেষ ১০ দিন রাতের ইবাদাত  করার জন্য নিজে কোমর বাঁধতেন এবং পরিবারের সকলকে ওই রাতগুলোতে জেগে ইবাদাত করার জন্য উৎসাহিত করতেন।’ অন্য একটি হাদিসে তিনি বলেন, নবী করীম সা. রমযানের শেষ ১০ দিন ইবাদাতে কঠোর মেহনত করতেন। কদরের এক অর্থ মাহাত্ম্য, মর্যাদা ও সম্মান। আর এই সম্মানিত রাতে ‘কুরআন’ নাযিল হওয়ায় এই রাত এক বিশেষ গুরুত্ব ও মর্যাদা বহন করছে। এই রাতের ইবাদাত এক হাজার মাসের ইবাদাতের চেয়েও উত্তম। এক হাজার মাস প্রায় ৮৩ বছর ৪ মাসে হয়। সাধারণত একটি মানুষের গড়ে বেঁচে থাকার চেয়েও বেশি সময় হচ্ছে। তাই মানুষ যদি এই রাতটি ইবাদাতে কাটিয়ে দিতে পারে, তাহলে সারাজীবনের ইবাদাতের চেয়েও বেশি সওয়াব বা পুণ্য অর্জন করা যাবে।

কদরের আর এক অর্থ তাকদির (ভাগ্য)। এই রাতে পরবর্তী এক বছরের নির্ধারিত লিপি ব্যবস্থাপক ও ফেরেশতাগণের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এতে প্রত্যেক মানুষের জীবন, মৃত্যু ও রিযক ইত্যাদির বিবরণ  থাকে। আর অনুতপ্ত হৃদয়ের দোয়া ভাগ্যের লিখনকেও খণ্ডন করতে সাহায্য করে। (আল হাদিস)

শান্তিময় ও এই রাত ফযরের উদয় পর্যন্ত থাকে। ফেরেশতাগণ দুনিয়াবাসীর প্রতি রহমত ও কল্যাণ বর্ষণ  করতে থাকে এবং এ রাতে ইবাদাতে লিপ্ত থাকা বান্দাহদের জাহান্নাম থেকে নাজাতের সুসংবাদ  শোনান। ক্বদর রাতের দোয়া ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন, তুহিব্বাল আফউয়া-ফাআফু আন্নী ইয়া কারীম।’ এই দোয়া প্রিয় নবী করীম সা. হযরত আয়েশা রা.-কে কদরের রাতে পাঠ করতে বলেছেন।