০৪ অক্টোবর ২০২৫, শনিবার, ১৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সুন্দরবনে দুই খুদের তৈরি এক ফুটের দুর্গা নজর কাড়লো জঙ্গল পারে

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২, শুক্রবার
  • / 92

ইনামুল হক, বসিরহাটঃ বসিরহাটের হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের সুন্দরবনের পথের দাবীর দুই ছাত্র তথা দুই ভাই অষ্টম শ্রেণী ছাত্র সায়ন মল্লিক. সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র অনিক মল্লিক দীর্ঘ একমাস ধরে ইছামতি নদী থেকে মাটি বিচুলী পাট গাছের ফেসো দিয়ে পেশাদার শিল্পীদের মত নিপুন দক্ষতা নৈপুূর্ণতায় রং তুলির ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলল একটি এক ফুটের আস্ত দুর্গা।  সময় লেগেছে এক মাস। নিজেরদের হাতে তৈরি দুর্গা প্রতিমা এমনকি নিজেরাই প্যান্ডেল তৈরি করে বাড়িতে পুজো করছেন। খুদেরদের এই সাফল্য নজর কেড়েছে গোটা সুন্দরবনবাসীর। সাধারণ মানুষ জানা মাত্রই হাজির হচ্ছেন হিঙ্গলগঞ্জের পথের দাবীর দুই ছাত্রের বাড়ির প্রাঙ্গণে। জানিয়েছেন যে অর্থ খরচ হয়েছে দীর্ঘ এক বছর ধরে তাদের টিফিনের খরচা বাঁচিয়ে তিল তিল জমিয়ে সেই অর্থ দিয়েই এই দুর্গা প্রতিমা তারা তৈরি করেছে।  পুজোর কটা দিন দুই ছাত্রের হাতের তৈরি দুর্গা প্রতিমা দেখতে যে ভিড় জমাবে তা বলা বাহুল্য।

অন্যদিকে টাকি গভর্মেন্ট স্কুলের খুদে শিল্পীর ঠাকুর পাড়ি দিচ্ছে কলকাতায়।টাকির ইছামতি পারে ক্ষুদে শিল্পীর এই প্রতিভা দেখতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটক ভিড় জমাচ্ছে তার বাড়িতে। টাকি পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের হসপিটাল পাড়ার টাকি গভর্মেন্ট হাইস্কুলের ক্লাস সিক্সের ছাত্র কুনাল মন্ডল। বাবা তারক মন্ডল পেশায় টোটো চালক। বরাবরই ছোটবেলা পড়াশোনার ফাঁকে সময় বের করে কখনো দিন আবার কখনো রাত্রে রং তুলি ছবি আঁকার মধ্য দিয়ে স্কুল ও জেলা স্তরে বিভিন্ন সম্মানে ভূষিত হয়েছে। বছর যখন ৫ হাতে করে সরস্বতী ঠাকুর,তারপর কালি ঠাকুর ,এক একে তৈরি করেছে ।গত তিন বছর ধরে দুর্গা প্রতিমা তৈরি করছে। কখনো এক ফুটের আবার কখনো দু ফুটের, তার দুর্গা প্রতিমা সুন্দরবন সহ কলকাতা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে পাড়ি দেয়। বাবা তারক মন্ডল  ছেলের এই প্রতিভাকে তুলে ধরতে দৈনন্দিন জীবনের রুজি রোজগার থেকে একটু একটু করে জমিয়ে তার হাতে তুলে দিয়ে, কখনো রং কখনো বিচুলি, কখনো মাটি এনে দিচ্ছে।আর সেই টাকে শিল্পীর পূর্ণ দক্ষতার নৈপুণ্যতায় ফুটিয়ে তুলছে একটি আস্ত  দুই ফুটের দুর্গা প্রতিমা। এবারে দুর্গা ঠাকুর তার কাছে একটু আলাদা। তার কারণ করোনার মধ্যে ঠাকুর তৈরি করলেও সেটা বিক্রি হয়নি ।তাই এবারে বেশ কয়েকটি দুর্গা প্রতিমা বিক্রি হলে। একটা থেকে যাওয়ায় বাড়িতে ছোট্ট প্যান্ডেল করে সেটাকে পুজো করছে এই ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র কুনাল।মা চম্পা মন্ডল বলেন ছোট থেকে ওর আঁকার হাত ভালো ছিল। তাই আমরা ওর পাশে দাঁড়িয়েছি। বিভিন্ন ও  পুরস্কার পেয়েছে। আমরা চাই ও এই ভাবে এগিয়ে যাক স্কুলের নাম উজ্জ্বল করুক। সেই সঙ্গে ওর প্রতিভার  স্বীকৃতি পাক। আজকে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকা টাকির বাসিন্দারা ওকে নিয়ে গর্ববোধ করছে। এতে আমাদের মন ভরে উঠছে।  আগামী দিনে আরো ভালো কিছু করুক। পঞ্চমীর সকাল থেকেই টাকির  হসপিটাল পাড়ায় দেড় ফুটের দুর্গা প্রতিমা দেখতে দর্শনার্থীরা ভিড় জমিয়েছে কুনালের বাড়িতে।

আরও পড়ুন: Chetla Agrani Club: চেতলা অগ্রণীর পুজো মণ্ডপে আগুন

আরও পড়ুন: দুর্গাপুজোর আগেই বাংলায় পদ্মার ইলিশ

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

সুন্দরবনে দুই খুদের তৈরি এক ফুটের দুর্গা নজর কাড়লো জঙ্গল পারে

আপডেট : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২, শুক্রবার

ইনামুল হক, বসিরহাটঃ বসিরহাটের হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের সুন্দরবনের পথের দাবীর দুই ছাত্র তথা দুই ভাই অষ্টম শ্রেণী ছাত্র সায়ন মল্লিক. সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র অনিক মল্লিক দীর্ঘ একমাস ধরে ইছামতি নদী থেকে মাটি বিচুলী পাট গাছের ফেসো দিয়ে পেশাদার শিল্পীদের মত নিপুন দক্ষতা নৈপুূর্ণতায় রং তুলির ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলল একটি এক ফুটের আস্ত দুর্গা।  সময় লেগেছে এক মাস। নিজেরদের হাতে তৈরি দুর্গা প্রতিমা এমনকি নিজেরাই প্যান্ডেল তৈরি করে বাড়িতে পুজো করছেন। খুদেরদের এই সাফল্য নজর কেড়েছে গোটা সুন্দরবনবাসীর। সাধারণ মানুষ জানা মাত্রই হাজির হচ্ছেন হিঙ্গলগঞ্জের পথের দাবীর দুই ছাত্রের বাড়ির প্রাঙ্গণে। জানিয়েছেন যে অর্থ খরচ হয়েছে দীর্ঘ এক বছর ধরে তাদের টিফিনের খরচা বাঁচিয়ে তিল তিল জমিয়ে সেই অর্থ দিয়েই এই দুর্গা প্রতিমা তারা তৈরি করেছে।  পুজোর কটা দিন দুই ছাত্রের হাতের তৈরি দুর্গা প্রতিমা দেখতে যে ভিড় জমাবে তা বলা বাহুল্য।

অন্যদিকে টাকি গভর্মেন্ট স্কুলের খুদে শিল্পীর ঠাকুর পাড়ি দিচ্ছে কলকাতায়।টাকির ইছামতি পারে ক্ষুদে শিল্পীর এই প্রতিভা দেখতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটক ভিড় জমাচ্ছে তার বাড়িতে। টাকি পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের হসপিটাল পাড়ার টাকি গভর্মেন্ট হাইস্কুলের ক্লাস সিক্সের ছাত্র কুনাল মন্ডল। বাবা তারক মন্ডল পেশায় টোটো চালক। বরাবরই ছোটবেলা পড়াশোনার ফাঁকে সময় বের করে কখনো দিন আবার কখনো রাত্রে রং তুলি ছবি আঁকার মধ্য দিয়ে স্কুল ও জেলা স্তরে বিভিন্ন সম্মানে ভূষিত হয়েছে। বছর যখন ৫ হাতে করে সরস্বতী ঠাকুর,তারপর কালি ঠাকুর ,এক একে তৈরি করেছে ।গত তিন বছর ধরে দুর্গা প্রতিমা তৈরি করছে। কখনো এক ফুটের আবার কখনো দু ফুটের, তার দুর্গা প্রতিমা সুন্দরবন সহ কলকাতা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে পাড়ি দেয়। বাবা তারক মন্ডল  ছেলের এই প্রতিভাকে তুলে ধরতে দৈনন্দিন জীবনের রুজি রোজগার থেকে একটু একটু করে জমিয়ে তার হাতে তুলে দিয়ে, কখনো রং কখনো বিচুলি, কখনো মাটি এনে দিচ্ছে।আর সেই টাকে শিল্পীর পূর্ণ দক্ষতার নৈপুণ্যতায় ফুটিয়ে তুলছে একটি আস্ত  দুই ফুটের দুর্গা প্রতিমা। এবারে দুর্গা ঠাকুর তার কাছে একটু আলাদা। তার কারণ করোনার মধ্যে ঠাকুর তৈরি করলেও সেটা বিক্রি হয়নি ।তাই এবারে বেশ কয়েকটি দুর্গা প্রতিমা বিক্রি হলে। একটা থেকে যাওয়ায় বাড়িতে ছোট্ট প্যান্ডেল করে সেটাকে পুজো করছে এই ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র কুনাল।মা চম্পা মন্ডল বলেন ছোট থেকে ওর আঁকার হাত ভালো ছিল। তাই আমরা ওর পাশে দাঁড়িয়েছি। বিভিন্ন ও  পুরস্কার পেয়েছে। আমরা চাই ও এই ভাবে এগিয়ে যাক স্কুলের নাম উজ্জ্বল করুক। সেই সঙ্গে ওর প্রতিভার  স্বীকৃতি পাক। আজকে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকা টাকির বাসিন্দারা ওকে নিয়ে গর্ববোধ করছে। এতে আমাদের মন ভরে উঠছে।  আগামী দিনে আরো ভালো কিছু করুক। পঞ্চমীর সকাল থেকেই টাকির  হসপিটাল পাড়ায় দেড় ফুটের দুর্গা প্রতিমা দেখতে দর্শনার্থীরা ভিড় জমিয়েছে কুনালের বাড়িতে।

আরও পড়ুন: Chetla Agrani Club: চেতলা অগ্রণীর পুজো মণ্ডপে আগুন

আরও পড়ুন: দুর্গাপুজোর আগেই বাংলায় পদ্মার ইলিশ