০৭ অক্টোবর ২০২৫, মঙ্গলবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফের ‘আস্থার’ জয় হবে না তো ! বাবরি রায় আতঙ্ক ভুলতে পারছেন না বহু মুসলিম

মাসুদ আলি
  • আপডেট : ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২, মঙ্গলবার
  • / 44

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : রায় হয়নি হিজাব মামলার। বৃহত্তর বেঞ্চে চলছে মামলার শুনানি ।  কর্ণাটক হাইকোর্ট অন্তর্বর্তী নির্দেশে বলেছিল রায় না হয় পর্যন্ত ধর্মীয় প্রতীক ও চিহ্ন নিয়ে পড়ুয়ারা আসতে পারবে না। দ্রুত খুলে দিতে হবে স্কুল-কলেজ । এই অন্তর্বর্তী নির্দেশটি দিয়েছিলেন প্রধানবিচারপতি ঋতুরাজ অবস্তি, বিচারপতি কৃষ্ণা এস দীক্ষিত ও বিচারপতি কাজী জৈবুন্নেসা মহিউদ্দিন।

হিজাব মামলা অনেক মুসলিমের মনে বাবরি মামলার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। কেবল মুসলিমরা নন, বহু হিন্দু মনে করেছিলেন অযোধ্যা মামলায় সুপ্রিম কোর্ট এমন রায় দেবে যা দেশের গণতন্ত্র ও ধর্ম নিরপেক্ষ ভাবমূর্তির জন্য উজ্জ্বল হয়ে থাকবে। সে সুযোগ সুপ্রিম কোর্টের কাছে ছিল। সুপ্রিম কোর্ট বিশ্বের কাছে ভারতের ন্যায় বিচারের নিশান উড়াতে পারত। কিন্তু তা হয়নি। পরবর্তীতে তদানীন্তন প্রধান বিচারপতি অবসর নেওয়ার পর তাঁকে রাজ্যসভার সাংসদ করেছে কেন্দ্রীয় শাসক দল।

আরও পড়ুন: কর্নাটকের নার্সিং কলেজে কাশ্মীরি ছাত্রীদের হিজাব নিষেধাজ্ঞা! মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি ছাত্র সংগঠনের

রায় দিতে গিয়ে বাবরি ধ্বংসের সমালোচনা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। রামলীলার মূর্তি ঢোকানো যে ঠিক হয়নি সে কথাও বলেছিল। কেউ যে মন্দির ভেঙে এই মসজিদ বানায়নি তারও উল্লেখ করা হয়েছিল। তারপরও গরিষ্ঠের ‘আস্থায়’ জিতে গিয়েছিল ‘রামমন্দির’। সে কারণেই অনেক মুসলিমের মনে সিঁদুরে মেঘ।

আরও পড়ুন: Iran: নারীদের পোশাকবিধি নিশ্চিত করতে নয়া প্রযুক্তি

আরএসএসের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন এক দেশ, এক ভাষা, এক ধর্মের। বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের তারা ঘোর বিরোধী। এই বৈচিত্রের ওপর তারা বুলডোজার চালিয়ে ‘হিন্দু সুপ্রিমেসি’ প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। সাভারকার, গোলওয়ালকাররা এই স্বপ্নই দেখতেন। তারা সহনশীল হিন্দুত্বের ঘোরবিরোধী। তাদের হিন্দুত্ব তাই বিদ্বেষে ঠাসা। এই বিদ্বেষ দিয়ে তারা হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ করতে চায়। আজকের কেন্দ্রীয় শাসকদলের সবথেকে জনপ্রিয় শক্তিশালী পুরুষও এই আরএসএস-এরই লোক।

আরও পড়ুন: হিজাবে ঢাকল Eiffel Tower

তাহলে কি এইভাবে মুসলিম, শিখ, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ-সকলের ধর্মীয় অধিকার কেড়ে নেওয়া হবে? তাদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক বানানো হবে? নাকি তাদের আতঙ্কে রেখে হিন্দুদের খুশি করা চেষ্টা চলবে? উত্তর দেবে সময়। রাজনীতি বহুকাল থেকেই নীতিহীন।কিন্তু ‘ন্যায়ালয়’ যদি ‘অ-ন্যায়ালয়’ হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে বিচারের বাণী নীরবে নয়, সরবে কাঁদবে। একের পর এক আস্থায় জয় পেয়ে হিন্দুত্ববাদীরা রণহুংকারে বলে উঠবে ‘জয় শ্রী রাম।’

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ফের ‘আস্থার’ জয় হবে না তো ! বাবরি রায় আতঙ্ক ভুলতে পারছেন না বহু মুসলিম

আপডেট : ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২, মঙ্গলবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : রায় হয়নি হিজাব মামলার। বৃহত্তর বেঞ্চে চলছে মামলার শুনানি ।  কর্ণাটক হাইকোর্ট অন্তর্বর্তী নির্দেশে বলেছিল রায় না হয় পর্যন্ত ধর্মীয় প্রতীক ও চিহ্ন নিয়ে পড়ুয়ারা আসতে পারবে না। দ্রুত খুলে দিতে হবে স্কুল-কলেজ । এই অন্তর্বর্তী নির্দেশটি দিয়েছিলেন প্রধানবিচারপতি ঋতুরাজ অবস্তি, বিচারপতি কৃষ্ণা এস দীক্ষিত ও বিচারপতি কাজী জৈবুন্নেসা মহিউদ্দিন।

হিজাব মামলা অনেক মুসলিমের মনে বাবরি মামলার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। কেবল মুসলিমরা নন, বহু হিন্দু মনে করেছিলেন অযোধ্যা মামলায় সুপ্রিম কোর্ট এমন রায় দেবে যা দেশের গণতন্ত্র ও ধর্ম নিরপেক্ষ ভাবমূর্তির জন্য উজ্জ্বল হয়ে থাকবে। সে সুযোগ সুপ্রিম কোর্টের কাছে ছিল। সুপ্রিম কোর্ট বিশ্বের কাছে ভারতের ন্যায় বিচারের নিশান উড়াতে পারত। কিন্তু তা হয়নি। পরবর্তীতে তদানীন্তন প্রধান বিচারপতি অবসর নেওয়ার পর তাঁকে রাজ্যসভার সাংসদ করেছে কেন্দ্রীয় শাসক দল।

আরও পড়ুন: কর্নাটকের নার্সিং কলেজে কাশ্মীরি ছাত্রীদের হিজাব নিষেধাজ্ঞা! মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি ছাত্র সংগঠনের

রায় দিতে গিয়ে বাবরি ধ্বংসের সমালোচনা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। রামলীলার মূর্তি ঢোকানো যে ঠিক হয়নি সে কথাও বলেছিল। কেউ যে মন্দির ভেঙে এই মসজিদ বানায়নি তারও উল্লেখ করা হয়েছিল। তারপরও গরিষ্ঠের ‘আস্থায়’ জিতে গিয়েছিল ‘রামমন্দির’। সে কারণেই অনেক মুসলিমের মনে সিঁদুরে মেঘ।

আরও পড়ুন: Iran: নারীদের পোশাকবিধি নিশ্চিত করতে নয়া প্রযুক্তি

আরএসএসের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন এক দেশ, এক ভাষা, এক ধর্মের। বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের তারা ঘোর বিরোধী। এই বৈচিত্রের ওপর তারা বুলডোজার চালিয়ে ‘হিন্দু সুপ্রিমেসি’ প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। সাভারকার, গোলওয়ালকাররা এই স্বপ্নই দেখতেন। তারা সহনশীল হিন্দুত্বের ঘোরবিরোধী। তাদের হিন্দুত্ব তাই বিদ্বেষে ঠাসা। এই বিদ্বেষ দিয়ে তারা হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ করতে চায়। আজকের কেন্দ্রীয় শাসকদলের সবথেকে জনপ্রিয় শক্তিশালী পুরুষও এই আরএসএস-এরই লোক।

আরও পড়ুন: হিজাবে ঢাকল Eiffel Tower

তাহলে কি এইভাবে মুসলিম, শিখ, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ-সকলের ধর্মীয় অধিকার কেড়ে নেওয়া হবে? তাদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক বানানো হবে? নাকি তাদের আতঙ্কে রেখে হিন্দুদের খুশি করা চেষ্টা চলবে? উত্তর দেবে সময়। রাজনীতি বহুকাল থেকেই নীতিহীন।কিন্তু ‘ন্যায়ালয়’ যদি ‘অ-ন্যায়ালয়’ হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে বিচারের বাণী নীরবে নয়, সরবে কাঁদবে। একের পর এক আস্থায় জয় পেয়ে হিন্দুত্ববাদীরা রণহুংকারে বলে উঠবে ‘জয় শ্রী রাম।’