পুবের কলম প্রতিবেদক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের H-1B visa-র হঠাৎ ঘোষণায় কার্যত অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন হাজার হাজার ভারতীয় পেশাজীবী। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, আমেরিকায় কাজের জন্য এইচ-১বি ভিসা পেতে হলে মার্কিন সংস্থাগুলিকে এখন থেকে বছরে এক লক্ষ মার্কিন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৮৮ লক্ষ টাকা) অতিরিক্ত দিতে হবে। একদিনের নোটিশে কার্যকর হওয়া এই নিয়মে দিশেহারা আমেরিকার প্রযুক্তি সংস্থাগুলি। অস্থিরতার আবহে বহু ভারতীয় তরুণ-তরুণী দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন।
এই অবস্থায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘নাসা থেকে গবেষণাগার;সব জায়গাতেই বাঙালি তথা ভারতীয়দের অবদান অসীম। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে শুধু বাঙালি নয়, দেশের অসংখ্য তরুণ এখন বিপদের মুখে। একদিকে ট্রাম্পের কঠোর সিদ্ধান্ত, অন্যদিকে দেশে কর্মসংস্থানের সংকট;সব মিলিয়ে যেন যুদ্ধ চলছে।’
READ MORE: Supreme Court on VC Appointment: ১২ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগে সায় ললিত কমিটির
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ওয়াশিংটনে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দাবি করেছিলেন, তাঁর বন্ধু ট্রাম্পের সহায়তায় ভারতীয়রা সহজেই ভারতে বসে এইচ-১বি ভিসার সুযোগ পাবেন। কিন্তু ট্রাম্পের হঠাৎ সিদ্ধান্তে সেই দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘অশান্তির মধ্যে মন কিলবিল করছে। এই ছেলেমেয়েগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা চিন্তিত। প্রার্থনা করি, তারা যেখানেই থাকুক, ভালো থাকুক।’
ভারতের বিদেশ মন্ত্রক অবশ্য জানিয়েছে, এই পদক্ষেপে বহু পরিবারের জীবনে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। হঠাৎ চাপানো এই বোঝা শুধু চাকরির অনিশ্চয়তা নয়, আর্থিক ও মানসিক দুশ্চিন্তাও বাড়িয়ে দেবে। তবে কেন্দ্র আশা করছে, শেষ পর্যন্ত ট্রাম্প প্রশাসন এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। ইতিমধ্যেই দিল্লিতে সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে এবং নীতি পরিবর্তনের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আমেরিকার তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলিতে ভারতীয় কর্মীরাই সবচেয়ে বেশি কাজ করেন। তাই ট্রাম্পের নতুন ভিসা নীতির সবচেয়ে বড় ধাক্কা আসবে ভারতীয়দের উপরেই। অন্যদিকে দেশে ফেরার পর কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত থাকায় প্রবাসীদের সমস্যা আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে। সব মিলিয়ে, ট্রাম্প প্রশাসনের নয়া ভিসা নীতি এবং দেশে বেকারত্বের চাপ;দুইয়ের মাঝেই উদ্বেগ বাড়ছে। আর সেই কারণেই মার্কিন মুলুকে কর্মরত ভারতীয়দের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

































