রোহিঙ্গা তকমা দিয়ে কারমাইকেল হস্টেলের আবাসিকদের উপর আক্রমণের অভিযোগ

- আপডেট : ২১ অগাস্ট ২০২৫, বৃহস্পতিবার
- / 30
আসিফ রেজা আনসারী : ভিনরাজ্যে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিক (Migrant Worker) দেখলেই যেন সন্দেহ জেগে ওঠে। তাতে যদি মুসলিম (Muslim) অর্থাৎ আরবি শব্দের কোনও নাম থাকে আর কথাই হবে না। এবার সেই ঘটনার সাক্ষী থাকল শহর কলকাতা (Kolkata)। খোদ কলকাতার বুকে মুসলিম পড়ুয়াদের রোহিঙ্গা (Rohingya) ও বাংলাদেশি (Bangladeshi) বলে তকমা দিয়ে আক্রমণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যেই মুচিপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে। ইতিমধ্যে ২ জন পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে।
জানা গিয়েছে, বৈঠকখানা রোডের কারমাইকেল হস্টেলের (Carmichael Hostel) কয়েকজন রাত ১০ টার দিকে শিয়ালদহের শিশির মার্কেটে মোবাইলের কভার কিনতে গিয়েছিল। জিনিস পছন্দ না হওয়ায় তারা যখন ফিরে আসছিল তখন এক দোকানদার ও তার বন্ধু হিন্দিতে বলতে শুরু করে যে, ‘এরা মুসলিম কিছু কিনবে না। শুধু দেখবে’। দোকানদারদের একজনের নাম ‘কৃষ্ণা’ বলে আক্রান্তরা জানতে পারে। পড়ুয়ারা অভিযোগ করেন, মোবাইলের কভার না নিয়ে দোকান ছাড়ার সময় ধর্মীয় পরিচয় তুলে কটুক্তি করা হয়।
সবাইকে বাংলাদেশি, রোহিঙ্গা, কাটুয়া ও মোল্লা বলে গালাগালি দিতে শুরু করে দোকানদার ও তার সঙ্গীরা। অযথা গালাগালি দেওয়ার কারণ জানতে চাইলেই শুরু হয় মারধর। প্রথমে তিন-চারজন পড়ুয়া গুরুতর আহত হয়। খবর পেয়ে অন্যরা উদ্ধার করতে এসে আক্রান্ত হয়। হস্টেলের আবাসিকদের ছুরি, লাঠি, রড, হকি স্টিক এমনকী পিস্তল দিয়ে মারধর করার অভিযোগ সামনে এসেছে।
ততক্ষণ ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। হস্টেলের বাকি পড়ুয়ারা আহতদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায়। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসা করা হয়। প্রায় ৭ জন গুরুতর আহত হয়েছে। পড়ুয়াদের গাল, পিঠ, গলায় চুরির আঘাত লাগে বলে অভিযোগ। রাতেই মুচিপাড়া থানা ঘেরাও করে হস্টলের আবাসিকরা। বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার ভোর ৪ টা পর্যন্ত থানার সামনে থেকে লিখিত অভিযোগ জমা করে পড়ুয়ারা। পুলিশ দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির আশ্বাস দিয়েছে।
এ দিন রাতে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অভিরুপ চক্রবর্তী, এসএফআই’র প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি প্রতীক উর রহমান, রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে, বাংলা পক্ষর (Bangla Pokkho) গর্গ চট্টোপাধ্যায় সকলেই থানায় যান। দোষীদের গ্রেফতারি ও শাস্তির দাবিতে সবাই সরব হন। হস্টেলের প্রাক্তনীদের অনেকেই রাতে থানায় হাজির হয়ে বর্তমান পড়ুয়াদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। তাদের মধ্য অনেকেইন ছিলেন আইনজীবী।
এ দিন সকাল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বা হস্টেলের সুপার কোনও বিবৃতি দেননি। কর্তৃপক্ষ কড়া পদক্ষেপ না নিয়ে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন প্রাক্তনীরা।