২৪ অক্টোবর ২০২৫, শুক্রবার, ৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৪ জুলাই শুনানি

ইয়েমেনে নিমিশা প্রিয়ার ফাঁসি রুখতে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের মামলা

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১০ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার
  • / 246

পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: নিমিশা প্রিয়ার ফাঁসি রুখতে শীর্ষ আদালতে দায়ের মামলা। কূটনৈতিক সাহায্য করুক কেন্দ্র। প্রবাসী ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়ার ফাঁসি রুখতে মামলা দায়ের সুপ্রিম কোর্টে। বলা বাহুল্য, ইয়েমেনের এক নাগরিককে হত্যা করার অপরাধে তাকে ফাঁসির সাজা দেওয়ার রায় দেওয়া হয়। বিগত ৭ বছর ধরে ইয়েমেনের জেলে বন্দি রয়েছেন তিনি। চলছে মামলাও।

 

আরও পড়ুন: Supreme Court on VC Appointment: ১২ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগে সায় ললিত কমিটির

জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতে পিটিশন দাখিল করেছে ‘সেভ নিমিশা প্রিয়া অ্যাকশন কাউন্সিল’ নামে এক সংগঠন। তাদের দাবি, নিমিশার মৃত্যুদণ্ড রুখতে কূটনৈতিক পদক্ষেপ করুক কেন্দ্র। আদালত সূত্রে খবর, আগামী ১৪ জুলাই মামলাটি শুনবেন বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ।

আরও পড়ুন: মানুষের শান্তি কেড়ে ‘ শান্তিতে পুরস্কার ‘ পেতে চাচ্ছেন, ট্রাম্পের নোবেল আটকাতে কমিটিকে চিঠি কেরলবাসীর

 

আরও পড়ুন: Pendency in Supreme Court সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে

নিমিশা কেরলের পলাক্কড়ের বাসিন্দা। পেশায় নার্স। ইয়েমেনের এক নাগরিককে হত্যার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয় সে। প্রায় সাত বছর ধরে মামলা চলে। তাকে বাঁচাতে কূটনৈতিক চেষ্টাও কম হয়নি। তবে সব বিফলে গেল। জানা গেছে, এই রায়ের পরেও কূটনৈতিক স্তরে যোগাযোগ করে নিমিশার প্রাণরক্ষার চেষ্টা চালাচ্ছে ভারত সরকার।

উল্লেখ্য,  বিজনেস পার্টনারকে খুনের দায়ে ২০১৭ সাল থেকে ইয়েমেনের জেলে বন্দি রয়েছেন নিমিশা। ২০১৮ সালে এই মামলায় তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনায় দেশটির আদালত। প্রবাসী ভারতীয় ওই যুবতীর প্রাণভিক্ষার আবেদন রাষ্ট্রপতির কাছে পৌঁছলে তা খারিজ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট রশিদ মুহাম্মদ আল আলিমি। এই রায় শুনেই নিমিশাকে ছাড়াতে আরও তৎপর হয় বিদেশমন্ত্রক।

 

বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এই প্রেক্ষিতে জানান, ইয়েমেনে প্রবাসী ভারতীয় নিমিশা প্রিয়ার বিষয়ে আমরা অবগত। তার পরিবারও মেয়ের প্রাণরক্ষার  জন্য সব প্রয়াস চালাচ্ছে। সরকার ওই পরিবারের পাশে আছে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করছে।

 

‘সেভ নিমিশা প্রিয়া অ্যাকশন কাউন্সিল’-এর সদস্য এবং ইয়েমেনি কর্তৃপক্ষ ও নিমিশার   পরিবারের সঙ্গে আলোচনায় যুক্ত স্যামুয়েল জোরোম এদিন বলেন, ফাঁসির চিঠি জারি করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে নিমিশার ফাঁসির তারিখ জানিয়ে দিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। নিহতের পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম। তাঁদের ব্লাড মানি (ক্ষমাপ্রার্থনা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া) কথাও জানানো হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তারা রাজি হয়নি। একমাত্র তারা ক্ষমা করলেই নিমিশার মৃত্যুদণ্ড আটকানোর একটা পথ উন্মুখ হবে।

 

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে উত্তম ভবিষ্যৎ নির্ধারণে সুদূর ইয়েমেনে পাড়ি দিয়েছিলেন স্বামী-সন্তান সহ নিমিশা। ইয়েমেনের একাধিক হাসপাতালে কাজও করেছে। ২০১৪–এ তাঁর স্বামী এবং মেয়ে ভারতে ফিরে আসে। তবে নিজস্ব ক্লিনিক খোলার স্বপ্ন নিয়ে সেদেশেই থেকে যান তিনি।

 

ইয়েমেনের আইন অনুযায়ী, কোনও বিদেশি যদি ব্যবসা করতে চান তা হলে দেশের একজন নাগরিককে অংশীদার করতে হবে। সেই সময় তরুণীকে সাহয্য করতে এগিয়ে আসেন দেশটির নাগরিক আব্দো মাহদি । ২০১৫ সালে তাঁরা ক্লিনিক শুরুও করেন। কিন্তু খুব দ্রুত তাঁদের সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে।

 

ক্লিনিকের অংশীদারিত্ব নিয়ে দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক দিন  দিন খারাপ হতে শুরু করে। অভিযোগ, একসময় মাহদি  নিমিশার পাসপোর্ট কেড়ে নিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, লুট করে নেয় টাকাপয়সাও। পাসপোর্ট উদ্ধার করার জন্যেই একদিন মাহদিকে ঘুমের ইঞ্জেকশন দেন নিমিশা। কিন্তু ওভারডোজ়ের কারণে মাহদির মৃত্যু হয়। এই অবস্থায় অন্য একজনের সাহায্য নিয়ে মেহদির দেহ টুকরো করে জলের ট্যাঙ্কে ফেলে দেন নিমিশা।

 

এবং ইয়েমেন থেকে পালানোর সময় ধরা পড়ে যান। এর পরেই নিমিশাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২০১৮–এ তাঁকে দোষী  সাব্যস্ত করে ইয়েমেনের আদালত।  ২০২২ সালে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট নিমিশার ক্ষমার আর্জি খারিজ করে দেন। অবশেষে ফাঁসির দিনক্ষণ ঘোষণা হয় এদিন।

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

১৪ জুলাই শুনানি

ইয়েমেনে নিমিশা প্রিয়ার ফাঁসি রুখতে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের মামলা

আপডেট : ১০ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার

পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: নিমিশা প্রিয়ার ফাঁসি রুখতে শীর্ষ আদালতে দায়ের মামলা। কূটনৈতিক সাহায্য করুক কেন্দ্র। প্রবাসী ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়ার ফাঁসি রুখতে মামলা দায়ের সুপ্রিম কোর্টে। বলা বাহুল্য, ইয়েমেনের এক নাগরিককে হত্যা করার অপরাধে তাকে ফাঁসির সাজা দেওয়ার রায় দেওয়া হয়। বিগত ৭ বছর ধরে ইয়েমেনের জেলে বন্দি রয়েছেন তিনি। চলছে মামলাও।

 

আরও পড়ুন: Supreme Court on VC Appointment: ১২ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগে সায় ললিত কমিটির

জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতে পিটিশন দাখিল করেছে ‘সেভ নিমিশা প্রিয়া অ্যাকশন কাউন্সিল’ নামে এক সংগঠন। তাদের দাবি, নিমিশার মৃত্যুদণ্ড রুখতে কূটনৈতিক পদক্ষেপ করুক কেন্দ্র। আদালত সূত্রে খবর, আগামী ১৪ জুলাই মামলাটি শুনবেন বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ।

আরও পড়ুন: মানুষের শান্তি কেড়ে ‘ শান্তিতে পুরস্কার ‘ পেতে চাচ্ছেন, ট্রাম্পের নোবেল আটকাতে কমিটিকে চিঠি কেরলবাসীর

 

আরও পড়ুন: Pendency in Supreme Court সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে

নিমিশা কেরলের পলাক্কড়ের বাসিন্দা। পেশায় নার্স। ইয়েমেনের এক নাগরিককে হত্যার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয় সে। প্রায় সাত বছর ধরে মামলা চলে। তাকে বাঁচাতে কূটনৈতিক চেষ্টাও কম হয়নি। তবে সব বিফলে গেল। জানা গেছে, এই রায়ের পরেও কূটনৈতিক স্তরে যোগাযোগ করে নিমিশার প্রাণরক্ষার চেষ্টা চালাচ্ছে ভারত সরকার।

উল্লেখ্য,  বিজনেস পার্টনারকে খুনের দায়ে ২০১৭ সাল থেকে ইয়েমেনের জেলে বন্দি রয়েছেন নিমিশা। ২০১৮ সালে এই মামলায় তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনায় দেশটির আদালত। প্রবাসী ভারতীয় ওই যুবতীর প্রাণভিক্ষার আবেদন রাষ্ট্রপতির কাছে পৌঁছলে তা খারিজ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট রশিদ মুহাম্মদ আল আলিমি। এই রায় শুনেই নিমিশাকে ছাড়াতে আরও তৎপর হয় বিদেশমন্ত্রক।

 

বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এই প্রেক্ষিতে জানান, ইয়েমেনে প্রবাসী ভারতীয় নিমিশা প্রিয়ার বিষয়ে আমরা অবগত। তার পরিবারও মেয়ের প্রাণরক্ষার  জন্য সব প্রয়াস চালাচ্ছে। সরকার ওই পরিবারের পাশে আছে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করছে।

 

‘সেভ নিমিশা প্রিয়া অ্যাকশন কাউন্সিল’-এর সদস্য এবং ইয়েমেনি কর্তৃপক্ষ ও নিমিশার   পরিবারের সঙ্গে আলোচনায় যুক্ত স্যামুয়েল জোরোম এদিন বলেন, ফাঁসির চিঠি জারি করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে নিমিশার ফাঁসির তারিখ জানিয়ে দিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। নিহতের পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম। তাঁদের ব্লাড মানি (ক্ষমাপ্রার্থনা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া) কথাও জানানো হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তারা রাজি হয়নি। একমাত্র তারা ক্ষমা করলেই নিমিশার মৃত্যুদণ্ড আটকানোর একটা পথ উন্মুখ হবে।

 

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে উত্তম ভবিষ্যৎ নির্ধারণে সুদূর ইয়েমেনে পাড়ি দিয়েছিলেন স্বামী-সন্তান সহ নিমিশা। ইয়েমেনের একাধিক হাসপাতালে কাজও করেছে। ২০১৪–এ তাঁর স্বামী এবং মেয়ে ভারতে ফিরে আসে। তবে নিজস্ব ক্লিনিক খোলার স্বপ্ন নিয়ে সেদেশেই থেকে যান তিনি।

 

ইয়েমেনের আইন অনুযায়ী, কোনও বিদেশি যদি ব্যবসা করতে চান তা হলে দেশের একজন নাগরিককে অংশীদার করতে হবে। সেই সময় তরুণীকে সাহয্য করতে এগিয়ে আসেন দেশটির নাগরিক আব্দো মাহদি । ২০১৫ সালে তাঁরা ক্লিনিক শুরুও করেন। কিন্তু খুব দ্রুত তাঁদের সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে।

 

ক্লিনিকের অংশীদারিত্ব নিয়ে দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক দিন  দিন খারাপ হতে শুরু করে। অভিযোগ, একসময় মাহদি  নিমিশার পাসপোর্ট কেড়ে নিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, লুট করে নেয় টাকাপয়সাও। পাসপোর্ট উদ্ধার করার জন্যেই একদিন মাহদিকে ঘুমের ইঞ্জেকশন দেন নিমিশা। কিন্তু ওভারডোজ়ের কারণে মাহদির মৃত্যু হয়। এই অবস্থায় অন্য একজনের সাহায্য নিয়ে মেহদির দেহ টুকরো করে জলের ট্যাঙ্কে ফেলে দেন নিমিশা।

 

এবং ইয়েমেন থেকে পালানোর সময় ধরা পড়ে যান। এর পরেই নিমিশাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২০১৮–এ তাঁকে দোষী  সাব্যস্ত করে ইয়েমেনের আদালত।  ২০২২ সালে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট নিমিশার ক্ষমার আর্জি খারিজ করে দেন। অবশেষে ফাঁসির দিনক্ষণ ঘোষণা হয় এদিন।