২৮ জুলাই ২০২৫, সোমবার, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘সিবিআই- ইডি সবে দুর্নীতির কোমর পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছে ‘ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১৩ এপ্রিল ২০২৩, বৃহস্পতিবার
  • / 39

পারিজাত মোল্লা:     বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে উঠে কুন্তল ঘোষের চিঠি বিষয়ক মামলা। এর আগে গত বুধবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন কুন্তল ঘোষের লেখা চিঠি নিয়ে কোনও আদেশ বা এফআইআর কার্যকর হবে না। এদিন সেই মামলার শুনানি ছিল আদালতে। সে সময় বিচারপতি অভিজিৎ  গঙ্গোপাধ্যায় অভিষেক ও কুন্তলকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করেন।’ সিবিআই-ইডি এখন সবে কোমর পর্যন্ত পৌঁছতে পেরেছে ।আশা করি শীঘ্রই তারা মাথা খুঁজে পাবে’ । বৃহস্পতিবার এমনটাই বললেন, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কুন্তল ঘোষের চিঠির প্রসঙ্গ খোলসা করতে শীঘ্রই তাঁকে এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিচারপতি  । বিচারপতি  শুনানিতে বলেন,  এ বছরের ২৯ মার্চ তৃণমূলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একটি জনসভা থেকে মন্তব্য করেন, “তাঁর নাম বলাতে জোর করা হচ্ছে ।” এই বক্তব্যের সঙ্গে কুন্তল ঘোষের চিঠির বক্তব্যের মিল রয়েছে’ ।

সেই জন্য অভিষেক ও কুন্তলকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন বলে মনে করছে আদালত। সিবিআই-ইডির শীঘ্রই সেই জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার বলে মনে করছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় উল্লেখ করেন, “সিবিআই-ইডি এখন সবে কোমর পর্যন্ত পৌঁছতে পেরেছে। আশা করি শীঘ্রই তারা মাথা খুঁজে পাবে। যদি না-পারে তাহলে আদালত বাধ্য হবে কঠোর নির্দেশ দিতে।” বিচারপতির  মন্তব্য, -‘ সিবিআই-ইডি এখনও পর্যন্ত দুর্নীতির কোমরের উপরে উঠতে পারেনি। দালালরা তো কমিশন খেয়েছে। আসল টাকাটা গেল কোথায় ?” কুন্তল ঘোষের চিঠির সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখার পর এটা সম্পূর্ণ বানানো বলেই মনে হয়েছে বিচারপতির। সিবিআই-ইডির কোনও অফিসারের বিরুদ্ধে একইরকম অভিযোগ হয়েছে কি না জানতে চান এদিন বিচারপতি।

আরও পড়ুন: কি করেছে শুভেন্দু? অভিজিতের মন্তব্যে তোলপাড়, দুর্নীতিগ্রস্তকে আড়াল করছেন খোঁচা কুণালের

তিনি বলেন, “যেখানে তাদের নামে এফআইআর দায়ের হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ?” সিবিআই আইনজীবী  জানান, কপিল রাজ (জয়েন্ট ডিরেক্টর) উমেশ কুমার (এসপি ), সুশান্ত ভট্টাচার্যদের বিরুদ্ধে লালন শেখ মৃত্যু মামলায় এফআইয়ার দায়ের করেছিল পুলিশ’ । কুন্তল ঘোষের চিঠি আসলে তদন্তকারী অফিসারদেরকে ভয় দেখানোর চেষ্টা বলে উল্লেখ করেন বিচারপতি। তারপর তিনি একাধিক নির্দেশ দিয়েছেন। সেগুলি হল-  এদিন থেকে আদালতের অনুমতি ছাড়া কোনও সিবিআই অফিসারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা যাবে না থানায়। যারা শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতির তদন্ত করছে।কুন্তল ঘোষের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে কোনও এফআইআর বা আদেশ কার্যকর হবে না আদালতের অনুমতি ছাড়া।

আরও পড়ুন: বিজেপি যোগের প্রবল সম্ভবনা, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে জোর জল্পনা

ইডি ও সিবিআই রিপোর্ট ফাইল করবে ২০ এপ্রিল এই বিষয়ে তদন্ত করে। প্রয়োজনে ভিডিয়ো রেকর্ডিং করতে হবে।অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য এই তদন্তের ব্যাপারে অত্যন্ত তাত্‍পর্যপূর্ণ। প্রেসিডেন্সি সংশোধনগারের সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি । ২১ মার্চ  থেকে ৬  এপ্রিল  পর্যন্ত, এই সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ রেজিস্টার ও আদালতে জমা দিতে হবে। কারণ কুন্তল চিঠি লিখেছিলেন ৩০ মার্চ। আগামী ২০  এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। সিবিআইয়ের আইনজীবীরা নিম্ন আদালতে এমন সওয়াল করছে যাতে কিছু লোক জামিন পেয়ে যায়। অযোগ্য আইনজীবীদের সিবিআই নিম্ন আদালতে নিযুক্ত রেখেছে।

আরও পড়ুন: বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে নতুন ইনিংসের শুভেচ্ছা, খোঁচা দিয়ে প্রশ্নও করলেন কুণাল

অবিলম্বে তাদের বাদ দিতে বলুন বলে সিবিআই কে জানান বিচারপতি । এদিন শুনানিতে  ইডির আইনজীবী  জানান,  গত ২১ জানুয়ারি কুন্তল গ্রেফতার হয় ইডির হাতে। তাঁকে বিশেষ আদালতে হাজির করা হয়। প্রথমে ১৪ দিনের হেফাজতে ছিলেন। ৩ ফেব্রুয়ারি তাঁর ইডির হেফাজত শেষ হয়। তারপর তাঁকে ১৭ ফেব্রুয়ারি, ৩ মার্চ পরে ১৭ মার্চ  দফায় দফায় বিচারবিভাগীয় হেফাজত দেওয়া হয়। তিনি এসএসকেএমে চিকিত্‍সার জন্য আবেদন করলেও ইডি অফিসারদের বিরুদ্ধে তাঁর কোনও অভিযোগ ছিল না। ৩০ মার্চ প্রেসিডেন্সি জেল সুপারের মাধ্যমে হেস্টিংস থানায় অভিযোগ করে কুন্তল ঘোষ।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

‘সিবিআই- ইডি সবে দুর্নীতির কোমর পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছে ‘ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়

আপডেট : ১৩ এপ্রিল ২০২৩, বৃহস্পতিবার

পারিজাত মোল্লা:     বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে উঠে কুন্তল ঘোষের চিঠি বিষয়ক মামলা। এর আগে গত বুধবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন কুন্তল ঘোষের লেখা চিঠি নিয়ে কোনও আদেশ বা এফআইআর কার্যকর হবে না। এদিন সেই মামলার শুনানি ছিল আদালতে। সে সময় বিচারপতি অভিজিৎ  গঙ্গোপাধ্যায় অভিষেক ও কুন্তলকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করেন।’ সিবিআই-ইডি এখন সবে কোমর পর্যন্ত পৌঁছতে পেরেছে ।আশা করি শীঘ্রই তারা মাথা খুঁজে পাবে’ । বৃহস্পতিবার এমনটাই বললেন, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কুন্তল ঘোষের চিঠির প্রসঙ্গ খোলসা করতে শীঘ্রই তাঁকে এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিচারপতি  । বিচারপতি  শুনানিতে বলেন,  এ বছরের ২৯ মার্চ তৃণমূলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একটি জনসভা থেকে মন্তব্য করেন, “তাঁর নাম বলাতে জোর করা হচ্ছে ।” এই বক্তব্যের সঙ্গে কুন্তল ঘোষের চিঠির বক্তব্যের মিল রয়েছে’ ।

সেই জন্য অভিষেক ও কুন্তলকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন বলে মনে করছে আদালত। সিবিআই-ইডির শীঘ্রই সেই জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার বলে মনে করছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় উল্লেখ করেন, “সিবিআই-ইডি এখন সবে কোমর পর্যন্ত পৌঁছতে পেরেছে। আশা করি শীঘ্রই তারা মাথা খুঁজে পাবে। যদি না-পারে তাহলে আদালত বাধ্য হবে কঠোর নির্দেশ দিতে।” বিচারপতির  মন্তব্য, -‘ সিবিআই-ইডি এখনও পর্যন্ত দুর্নীতির কোমরের উপরে উঠতে পারেনি। দালালরা তো কমিশন খেয়েছে। আসল টাকাটা গেল কোথায় ?” কুন্তল ঘোষের চিঠির সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখার পর এটা সম্পূর্ণ বানানো বলেই মনে হয়েছে বিচারপতির। সিবিআই-ইডির কোনও অফিসারের বিরুদ্ধে একইরকম অভিযোগ হয়েছে কি না জানতে চান এদিন বিচারপতি।

আরও পড়ুন: কি করেছে শুভেন্দু? অভিজিতের মন্তব্যে তোলপাড়, দুর্নীতিগ্রস্তকে আড়াল করছেন খোঁচা কুণালের

তিনি বলেন, “যেখানে তাদের নামে এফআইআর দায়ের হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ?” সিবিআই আইনজীবী  জানান, কপিল রাজ (জয়েন্ট ডিরেক্টর) উমেশ কুমার (এসপি ), সুশান্ত ভট্টাচার্যদের বিরুদ্ধে লালন শেখ মৃত্যু মামলায় এফআইয়ার দায়ের করেছিল পুলিশ’ । কুন্তল ঘোষের চিঠি আসলে তদন্তকারী অফিসারদেরকে ভয় দেখানোর চেষ্টা বলে উল্লেখ করেন বিচারপতি। তারপর তিনি একাধিক নির্দেশ দিয়েছেন। সেগুলি হল-  এদিন থেকে আদালতের অনুমতি ছাড়া কোনও সিবিআই অফিসারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা যাবে না থানায়। যারা শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতির তদন্ত করছে।কুন্তল ঘোষের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে কোনও এফআইআর বা আদেশ কার্যকর হবে না আদালতের অনুমতি ছাড়া।

আরও পড়ুন: বিজেপি যোগের প্রবল সম্ভবনা, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে জোর জল্পনা

ইডি ও সিবিআই রিপোর্ট ফাইল করবে ২০ এপ্রিল এই বিষয়ে তদন্ত করে। প্রয়োজনে ভিডিয়ো রেকর্ডিং করতে হবে।অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য এই তদন্তের ব্যাপারে অত্যন্ত তাত্‍পর্যপূর্ণ। প্রেসিডেন্সি সংশোধনগারের সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি । ২১ মার্চ  থেকে ৬  এপ্রিল  পর্যন্ত, এই সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ রেজিস্টার ও আদালতে জমা দিতে হবে। কারণ কুন্তল চিঠি লিখেছিলেন ৩০ মার্চ। আগামী ২০  এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। সিবিআইয়ের আইনজীবীরা নিম্ন আদালতে এমন সওয়াল করছে যাতে কিছু লোক জামিন পেয়ে যায়। অযোগ্য আইনজীবীদের সিবিআই নিম্ন আদালতে নিযুক্ত রেখেছে।

আরও পড়ুন: বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে নতুন ইনিংসের শুভেচ্ছা, খোঁচা দিয়ে প্রশ্নও করলেন কুণাল

অবিলম্বে তাদের বাদ দিতে বলুন বলে সিবিআই কে জানান বিচারপতি । এদিন শুনানিতে  ইডির আইনজীবী  জানান,  গত ২১ জানুয়ারি কুন্তল গ্রেফতার হয় ইডির হাতে। তাঁকে বিশেষ আদালতে হাজির করা হয়। প্রথমে ১৪ দিনের হেফাজতে ছিলেন। ৩ ফেব্রুয়ারি তাঁর ইডির হেফাজত শেষ হয়। তারপর তাঁকে ১৭ ফেব্রুয়ারি, ৩ মার্চ পরে ১৭ মার্চ  দফায় দফায় বিচারবিভাগীয় হেফাজত দেওয়া হয়। তিনি এসএসকেএমে চিকিত্‍সার জন্য আবেদন করলেও ইডি অফিসারদের বিরুদ্ধে তাঁর কোনও অভিযোগ ছিল না। ৩০ মার্চ প্রেসিডেন্সি জেল সুপারের মাধ্যমে হেস্টিংস থানায় অভিযোগ করে কুন্তল ঘোষ।