জগন্নাথ রথযাত্রায় ভিড়ের চাপে মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী, দুই পুলিশ অফিসার সাসপেন্ড

- আপডেট : ২৯ জুন ২০২৫, রবিবার
- / 29
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: পুরী রথযাত্রা ২০২৫-এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। জগন্নাথ দর্শনে ভিড়ের চাপে মৃত্যু হল ৩ জন ভক্তের। এই ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ ও ক্ষমা চাইলেন ওডিশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি। নিহতদের পরিবারকে ২৫ লক্ষ টাকা আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণাও করেছেন তিনি। নিরাপত্তা ব্যর্থতার দায়ে সরকার দুই পুলিশ অফিসারকে সাসপেন্ড এবং পুরীর জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে বদলি করেছে।
রবিবার ভোরে গুন্ডিচা মন্দিরে রথের কাছে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। ‘কলিঙ্গ টিভি’-র তথ্য অনুযায়ী, ভিড়ের চাপে বাসন্তী সাহু, প্রেমাকান্ত মোহান্তি ও প্রভাতী দাস নামের তিন ভক্তের মৃত্যু হয়। আহত হন ৫০ জনেরও বেশি। প্রাথমিকভাবে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর অভিযোগ উঠলেও, ওডিশা সরকারের দাবি— ভিড়ের চাপে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয়েছে।
ঘটনার পরে মুখ্যমন্ত্রী X (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট করে বলেন, “মহাপ্রভুর দর্শনের জন্য ভক্তদের প্রবল উত্তেজনা ও ঠেলাঠেলির কারণে যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে, তার জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে এবং আমার সরকারের পক্ষ থেকে সমস্ত জগন্নাথভক্তদের কাছে ক্ষমা চাইছি। নিহতদের পরিবারকে গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।” তিনি একে ‘ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ’ বলে উল্লেখ করেন।
ঘটনার পরে মুখ্যমন্ত্রী উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসেন মন্ত্রীদের সঙ্গে। সিদ্ধান্ত হয়, ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে। তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে উন্নয়ন কমিশনের চেয়ারম্যানকে। ভিড় নিয়ন্ত্রণে গাফিলতির প্রমাণ পাওয়ায় ডিসিপি বিষ্ণুপতি ও কমান্ড্যান্ট অজয় পাধীকে সাসপেন্ড করা হয়। বদলি করা হয় জেলাশাসক সিদ্ধার্থ শঙ্কর সোয়াইন এবং পুলিশ সুপার বিনীত আগরওয়ালকে। নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন যথাক্রমে চঞ্চল রানা ও পিনাক মিশ্র।
ওডিশার আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দ্রন জানান, “নিশ্চয় কোথাও গাফিলতি ছিল। মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। তিনি দুঃখপ্রকাশও করেছেন।” পাশাপাশি আশ্বাস দিয়েছেন, “ভবিষ্যতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে।”
পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার ভোরে জগন্নাথদেবের রথ ‘নন্দীঘোষ’ গুন্ডিচা মন্দিরে পৌঁছয়। প্রচুর ভক্ত তখন এলাকায় উপস্থিত ছিলেন। সেই সময় আচার-অনুষ্ঠানের উপকরণ নিয়ে দুটি ট্রাক প্রবেশ করায় বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। এখান থেকেই পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। ভিড়ের ধাক্কায় মৃত্যু হয় তিন জনের। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যার মধ্যে ৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।