১৫০ কিলোমিটার গতিবেগে বৃহস্পতিবার আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়, গুজরাটে জারি হাই অ্যালার্ট

- আপডেট : ১৪ জুন ২০২৩, বুধবার
- / 8
পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক : প্রবল শক্তি সঞ্চয় করে এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়। আবহবিদদের পূর্বাভাস অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়টি বৃহস্পতিবার ১৫ জুন সন্ধ্যায় গুজরাটের জাখাউ বন্দরের কাছে কচ্ছের মাণ্ডভি এবং পাকিস্তানের করাচির মধ্যে দিয়ে অতিক্রম করবে। ল্যান্ডফল হওয়ার সম্ভাবনা গুজরাটের সৌরাষ্ট্র ও কচ্ছ অঞ্চল এবং সংলগ্ন পাকিস্তান উপকূলে। এই মুহূর্তে ‘বিপর্যয়’ জাখাউ থেকে ২৯০ কিলোমিটার এবং দ্বারকা থেকে ২৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।
বুধবার গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় মোকাবিলায় গান্ধীনগরে একটি পর্যালোচনা বৈঠক করেছেন। বিপর্যয় মোকাবিলায় কোমর বেঁধে তৈরি গুজরাট প্রশাসন। মঙ্গলবারেই গুজরাটের উপকূলবর্তী অঞ্চল থেকে ৪৭ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হয়েছে।

মৌসম বিভাগের তরফ থেকে গুজরাটের সৌরাষ্ট্র ও কচ্ছে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মুম্বইতে জারি হাই অ্যালার্ট। প্রস্তুত রয়েছে রাজ্য ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী সহ সেনা। ১৫ জুন পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে দ্বারকাধীশ মন্দির। পশ্চিম রেলওয়ে তরফে ৯৫টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে, ৩২টি গন্তব্যস্থল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, ২৬টি ট্রেনের গতিপথ কমানো হয়েছে। ১৬ জুন পর্যন্ত বন্ধ করা হল ভূজ বিমানবন্দরের টার্মিনাল।
ইতিমধ্যেই গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল সহ ঊর্ধবতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক সেরেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিপর্যয় মোকাবিলায় রাজ্য প্রশাসনকে সব রকমভাবে তৈরি থাকার নির্দেশ দিয়েছেন শাহ। উপকূলবর্তী এলাকা থেকে নিরাপদ জায়গায় মানুষকে সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এলাকাগুলিতে বিদ্যুৎ পরিষেবা, টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য পরিষেবা, পানীয় জল নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যের ত্রাণ কমিশনার অলোক কুমার পাণ্ডে জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই উপকূলবর্তী এলাকা থেকে মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরানোর কাজ চলছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে সেই ধরনের অঞ্চলগুলি থেকে এখনও পর্যন্ত ৩০ হাজার মানুষকে অস্থায়ী শিবিরে সরানো হয়েছে। দুই ধাপে চলবে উদ্ধারকাজ। প্রথম পর্যায়ে সমুদ্র উপকূলের শূন্য থেকে পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে ও দ্বিতীয় পর্যায়ে উপকূলের ৫ থেকে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাসকারী মানুষকে সরানো হবে। ত্রাণ কমিশনার পাণ্ডে আরও জানিয়েছেন, দেবভূমি দ্বারকা, রাজকোট, জামনগর, জুনাগড়, পোরবন্দর, গির সোমনাথ, মরবি এবং ভালসাডের ক্ষতিগ্রস্থ জেলাগুলিতে ১৮টি এনডিআরএফ এবং ১৩টি এসডিআরএফ দলকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
আহমদাবাদে মৌসম বিভাগের ডিরেক্টর মনোরমা মোহান্তি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কচ্ছের মাণ্ডবি ও পাকিস্তানের করাচির কাছে জাখাউ বন্দরের কাছে ল্যান্ডফলের সম্ভাবনা। বাতাসের গতিবেগ হবে ১২৫-১৩৫ কিলোমিটার। প্রতি ঘণ্টায় ঘূর্ণিঝড়ের দাপট বেড়ে হবে ১৫০ কিলোমিটার। ঝোড়ো বাতাসের সঙ্গে ভারী বৃষ্টির সতকর্তা জারি সৌরাষ্ট্র-কচ্ছ উপকূল অংশ ছাড়াও কচ্ছ, পোরবন্দর, ও দেবভূমি দ্বারকাতে। ১৫-১৭ জুন পর্যন্ত গুজরাটে ভারী থেকে অতিভারীর বৃষ্টির পূর্বাভাস। ঘূর্ণিঝড়টি শক্তি ক্ষয় করে উত্তর-পূর্ব হয়ে দক্ষিণ রাজস্থানের দিকে অগ্রসর হবে।