০১ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মহিলার দিকে তাকানোর অভিযোগে গুলি করে মারা হল দলিত যুবক ও বাবা-মা কে, আহত ভাই

সামিমা এহসানা
  • আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২২, বুধবার
  • / 37

পুবের কলম, ওয়েব ডেস্ক: উচ্চবর্ণের বাড়ির বৌ এর দিকে তাকানোর অভিযোগে গুলি করা হল এক যুবক, তার বাবা-মা ও ভাইকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে দামোহ জেলার দেভরান গ্রামের মানক আহিরওয়ার ও তার বাবা-মার। আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে মানকের ভাই মহেশ আহিরওয়ার। মহেশও যেভাবে গুলিবিদ্ধ হয়েছে, তাতে তার বাঁচার সম্ভাবনা খুবই কম বলা চলে।

মানক আহিরওয়ারের প্রতিবেশী, উচ্চবর্ণের জগদীশ প্যাটেলের স্ত্রীর অভিযোগ, মানক মাঝে মাঝেই তার পিছু নিত এবং তার দিতে তাকিয়ে থাকত। এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে সোমবার সন্ধ্যায় দুই পরিবারের মধ্যে বচসা শুরু হয়। গ্রামবাসীদের তৎপরতায় তাদের বাকযুদ্ধ বন্ধ হয়। সেই সময় মনে করা হয়েছিল, বিষয়টি এখানেই থেমে যাবে। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে জগদীশ প্যাটেল তার পরিবারের অন্য ৫ জন পুরুষ ও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পৌঁছে যান মানকের বাড়িতে। নতুন করে দুই পরিবারের মাঝে বচসা শুরু হয়। এরই মাঝে ৩০ বছরের মানক, তার বাবা-মা ও ভাইকে গুলি করে জগদীশ।

আরও পড়ুন: বিহারে ভোটার তালিকা থেকে অনগ্রসর, দলিত এবং সংখ্যালঘুদের বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র: কংগ্রেস

পুলিশ সুপার ডি আর তেনিওয়ার জানিয়েছেন, জগদীশকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্ত অন্য ৫ সদস্যের খোঁজ চলছে। আহত মহেশ আহিরওয়ারের অভিযোগের ভিত্তিতে  অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হত্যা, খুনের চেষ্টা, তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য কঠোর আইনে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। কিন্তু দেশে এমন ঘটনা প্রতিদিনই ঘটছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এই সব ধারায় মামলা করা হলেও খুব কম ক্ষেত্রেই দৃষ্টান্তমূলক সাজা পাওয়ার নমুনা মিলেছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রায় প্রতিদিনই দলিত পুরুষদের পিটিয়ে মারা, মহিলাদের ধর্ষণ করে খুন করার ঘটনা সামনে আসছে।  কোথাও উচ্চবর্ণের মানুষদের জন্য রাখা জলের পাত্র ছুঁয়ে ফেলার ‘অপরাধে’ পিটিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে স্কুলের ছাত্রকে। কোথাও বা রথের চাকা ছোঁয়ার ‘অপরাধে’ একঘরে করে দেওয়া হচ্ছে দলিত পরিবারকে। কোথাও বা কুসুমের মত সদ্য প্রস্ফুটিত তরুণীদের ধর্ষণের পর খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে গাছের ডালে। বিশেষ করে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে মুড়ি-মুড়কির মত হত্যা করা হচ্ছে দলিতদের।

আরও পড়ুন: দলিত মহিলাকে ধর্ষণ করার পর তিন টুকরো করে কাটা হল দেহ

রবিবারও মধ্যপ্রদেশের গুনা জেলার একটি মাঠে একাদশ শ্রেণির এক দলিত ছাত্রীর পচা-গলা মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাকেও ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন সেখানকার বিএসপি নেতা দিলীপ বৌধ। কোনো আইনের ভয় দেখিয়েও দলিতদের বিরুদ্ধে ঘৃণায় রাশ টানা সম্ভব হচ্ছে না। এই দূরাচার বন্ধ করতে কবে নড়ে চড়ে বসবে প্রশাসন তাই এখন দেখার।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

মহিলার দিকে তাকানোর অভিযোগে গুলি করে মারা হল দলিত যুবক ও বাবা-মা কে, আহত ভাই

আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২২, বুধবার

পুবের কলম, ওয়েব ডেস্ক: উচ্চবর্ণের বাড়ির বৌ এর দিকে তাকানোর অভিযোগে গুলি করা হল এক যুবক, তার বাবা-মা ও ভাইকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে দামোহ জেলার দেভরান গ্রামের মানক আহিরওয়ার ও তার বাবা-মার। আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে মানকের ভাই মহেশ আহিরওয়ার। মহেশও যেভাবে গুলিবিদ্ধ হয়েছে, তাতে তার বাঁচার সম্ভাবনা খুবই কম বলা চলে।

মানক আহিরওয়ারের প্রতিবেশী, উচ্চবর্ণের জগদীশ প্যাটেলের স্ত্রীর অভিযোগ, মানক মাঝে মাঝেই তার পিছু নিত এবং তার দিতে তাকিয়ে থাকত। এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে সোমবার সন্ধ্যায় দুই পরিবারের মধ্যে বচসা শুরু হয়। গ্রামবাসীদের তৎপরতায় তাদের বাকযুদ্ধ বন্ধ হয়। সেই সময় মনে করা হয়েছিল, বিষয়টি এখানেই থেমে যাবে। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে জগদীশ প্যাটেল তার পরিবারের অন্য ৫ জন পুরুষ ও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পৌঁছে যান মানকের বাড়িতে। নতুন করে দুই পরিবারের মাঝে বচসা শুরু হয়। এরই মাঝে ৩০ বছরের মানক, তার বাবা-মা ও ভাইকে গুলি করে জগদীশ।

আরও পড়ুন: বিহারে ভোটার তালিকা থেকে অনগ্রসর, দলিত এবং সংখ্যালঘুদের বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র: কংগ্রেস

পুলিশ সুপার ডি আর তেনিওয়ার জানিয়েছেন, জগদীশকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্ত অন্য ৫ সদস্যের খোঁজ চলছে। আহত মহেশ আহিরওয়ারের অভিযোগের ভিত্তিতে  অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হত্যা, খুনের চেষ্টা, তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য কঠোর আইনে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। কিন্তু দেশে এমন ঘটনা প্রতিদিনই ঘটছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এই সব ধারায় মামলা করা হলেও খুব কম ক্ষেত্রেই দৃষ্টান্তমূলক সাজা পাওয়ার নমুনা মিলেছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রায় প্রতিদিনই দলিত পুরুষদের পিটিয়ে মারা, মহিলাদের ধর্ষণ করে খুন করার ঘটনা সামনে আসছে।  কোথাও উচ্চবর্ণের মানুষদের জন্য রাখা জলের পাত্র ছুঁয়ে ফেলার ‘অপরাধে’ পিটিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে স্কুলের ছাত্রকে। কোথাও বা রথের চাকা ছোঁয়ার ‘অপরাধে’ একঘরে করে দেওয়া হচ্ছে দলিত পরিবারকে। কোথাও বা কুসুমের মত সদ্য প্রস্ফুটিত তরুণীদের ধর্ষণের পর খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে গাছের ডালে। বিশেষ করে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে মুড়ি-মুড়কির মত হত্যা করা হচ্ছে দলিতদের।

আরও পড়ুন: দলিত মহিলাকে ধর্ষণ করার পর তিন টুকরো করে কাটা হল দেহ

রবিবারও মধ্যপ্রদেশের গুনা জেলার একটি মাঠে একাদশ শ্রেণির এক দলিত ছাত্রীর পচা-গলা মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাকেও ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন সেখানকার বিএসপি নেতা দিলীপ বৌধ। কোনো আইনের ভয় দেখিয়েও দলিতদের বিরুদ্ধে ঘৃণায় রাশ টানা সম্ভব হচ্ছে না। এই দূরাচার বন্ধ করতে কবে নড়ে চড়ে বসবে প্রশাসন তাই এখন দেখার।