‘গণতন্ত্র – কে হত্যা করা হয়েছে’, চণ্ডীগড়ের মেয়র নির্বাচন নিয়ে তীব্র ভর্ৎসনা করল Supreme Court

- আপডেট : ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, বুধবার
- / 68
পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: : চণ্ডীগড়ের মেয়র নির্বাচন (Chandigarh mayoral polls) নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়ল বিজেপি নেতৃত্বাধীন মোদি সরকার । শীর্ষ আদালতের (Supreme Court) কড়া মন্তব্য, নির্বাচনের ফলাফলের বিরুদ্ধে করা মামলায় গণতন্ত্রকে খুন হতে দিতে পারে না আদালত। রাজনৈতিক মহলের কথায়, আপ-কংগ্রেস জোটের আবেদনে সাড়া দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বিজেপি সরকারের কাছে বড় ধাক্কা।
সোমবার আদালতে ভোট সংক্রান্ত একটি ভিডিয়ো চালানোর পর ফের নির্বাচনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে শীর্ষ আদালত(Supreme Court)। ভিডিয়োতে দেখা গেছে, রিটার্নিং অফিসার অনিল মসিহা ব্যালট পেপার নষ্ট করছেন, আর ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছেন যে তাকে কেউ দেখছেন কিনা। সুপ্রিম কোর্টে ওই মামলা উঠেছিল প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় (Chief Justice of India D.Y. Chandrachud) বিচারপতি জে বি পাদ্রিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রর বেঞ্চে। তিন বিচারপতির বেঞ্চের নেতৃত্বে সলিসিটর-জেনারেল তুষার মেহতা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল চণ্ডীগড়ের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন এবং বিজয়ী প্রার্থীদের জন্য ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনিন্দর সিং।
সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) প্রশ্ন করেন, উনি (রিটার্নিং অফিসার) কি করছেন? এটা স্পষ্ট যে উনি ব্যালট পেপার নষ্ট করছেন। এই ব্যক্তির বিচার হওয়ার প্রয়োজন। চুপচাপ তিনি ব্যালট নষ্ট করে চলেছেন। কেন তিনি তাড়াহুড়ো করে পালিয়ে যাওয়ার সময় ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিলেন? এটা তো গণতন্ত্রের উপহাস, গণতন্ত্রের হত্যা। এইভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে হয়?
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় (Chief Justice of India D.Y. Chandrachud) তীব্র ভর্ৎসনা করে বলেন, আপনি আপনার রিটার্নিং অফিসারকে বলুন আদালত তার দিকে নজর রাখছে। গণহন্ত্রের হত্যা করতে দিতে পারি না। দেশের বড় স্থিতিশীল শক্তি হচ্ছে নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিশুদ্ধতা, এখানে কী হচ্ছে? ভিডিয়ো রেকর্ডের মধ্যে ব্যালট পেপার সহ নির্বাচনী প্রক্রিয়া পুরো বিষয়টি রেকর্ডিং আছে। সুপ্রিম কোর্ট ৫ ফেব্রুয়ারি নির্দেশ দেয়, অবিলম্বে এদিন বিকেল ৫টার মধ্যে পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার-জেনারেলের হেফাজতে মেয়র নির্বাচনের পুরো রেকর্ড জমা দিতে হবে। মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারি চণ্ডীগড় পুরসভা বাজেট পেশ হওয়ার কথা ছিল। সেই বাজেট পেশ স্থগিত করে দিয়েছে বেঞ্চ। বেঞ্চের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাজেট পেশ হবে না।
বর্ষীয়ান আইনজীবী এ এম সিংভি আম আদমি পার্টি (আপ) কাউন্সিলর কুলদীপ কুমারের পক্ষে উপস্থিত হয়ে বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশে নির্বাচনী প্রক্রিয়াটির ভিডিওগ্রাফ করা হয়েছিল। এখানে আপের ২০ জন কাউন্সিলর ও বিজেপির ১৬ জন ছিলেন। ভোটের পর প্রতিটি ব্যালট পেপারে রিটার্নিং অফিসারের স্বাক্ষর করার কথা ছিল। ৮টি ব্যালট পেপার বাতিল বলে ঘোষণা করেন। ভোট দেওয়ার পরে তিনি তাড়াতাড়ি করে ব্যালট পেপার তুলে নেন, ও ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যান। এটি সম্পূর্ণ গণতন্ত্রকে অস্বীকার। আইনজীবী সিংভি জানান, রিটানিং অফিসার স্বীকার করেছেন, তিনি বিজেপির একজন সক্রিয় সদস্য।
পঞ্জাবের অ্যাডভোকেট জেনারেল গুরমিন্দর সিং জানান ওই (রিটার্নিং অফিসার) ব্যক্তির বিচার হওয়া প্রয়োজন। আম আদমি পার্টি তার আবেদনে বলেছেন, চণ্ডীগড়ের মেয়র নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। ব্যালটে কারচুপি করা হয়েছে। জিতিয়ে দেওয়া হয়েছে বিজেপিকে। তাই ওই নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে, মেয়রকে দায়িত্ব নেওয়া থেকে বিরত করা হোক। ভোটে যে রিগিং হয়েছে তার তদন্ত হোক এবং একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির তত্ত্বাবধানে ফের ভোট হোক।