০১ অক্টোবর ২০২৫, বুধবার, ১৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘কূটনীতি দিয়ে যুদ্ধ শেষ হবে’- সুর নরম জেলেনস্কির

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২২ মে ২০২২, রবিবার
  • / 92

পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, কেবল কূটনীতির মাধ্যমেই ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ হতে পারে। কিয়েভ ও মস্কোর মধ্যে আলোচনার অচলাবস্থার মধ্যে সুর নরম করে এমন মন্তব্য করলেন জেলেনস্কি। ইউক্রেনের একটি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেন, ‘যুদ্ধে রক্তারক্তি হবে, লড়াই হবে। তবে এর শেষ হবে কেবল কূটনীতির মাধ্যমে। কিন্তু কাজটি খুব সহজ নয়। কারণ, কোনও পক্ষই ছাড় দিতে রাজি নয়’। তিনি বলেন, ‘ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে আলোচনার মাধ্যমেই এ লড়াইয়ের ভবিষ্যত স্থির হবে। মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে নাকি তাদের ছাড়া, গোষ্ঠীগতভাবে নাকি প্রেসিডেন্ট পর্যায়ে- কীভাবে সেই আলোচনা হবে তা আমি জানি না। তবে সমাধান আলোচনার মাধ্যমেই হবে’। বিস্তারিত উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘এমন কিছু জিনিস আছে যেগুলো কেবল আলোচনার টেবিলেই সমাধান হতে পারে। আমরা চাই, আগে যেমন ছিল, সব সেভাবে ফিরে আসুক। কিন্তু রাশিয়া তাতে সম্মত নয়’। জেলেনস্কির মতে, আলোচনায় নানা বিষয় থাকতে পারে, তবে ইউক্রেনের জন্য তা ন্যায্য হতে হবে। রাশিয়ার সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হবে, উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিরাপত্তা গ্যারান্টি হিসেবে এটি ইউক্রেনের বন্ধু এবং অংশীদারদের দ্বারাও স্বাক্ষরিত হবে। তিনি এ সময় কিয়েভের শর্তের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, মারিপলের আজভস্টল স্টিলওয়ার্কে যারা লড়াই করেছিল, সেসব ইউক্রেনীয় সেনাকে রাশিয়া হত্যা করতে পারবে না। এর আগে গত মঙ্গলবার কিয়েভের প্রধান আলোচক মিখাইলো পোদোলিয়াক বলেছিলেন, ‘আলোচনা স্থগিত রয়েছে। পরদিন বুধবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ আলোচনায় অচলাবস্থার জন্য ইউক্রেন সরকারকে দোষারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘আলোচনা আসলেই এগোচ্ছে না, কারণ ইউক্রেনীয় আলোচকদের ইচ্ছার সম্পূর্ণ অভাব লক্ষ্য করছি’। লড়াইয়ের সমাপ্তি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে শেষ বৈঠকটি হয়েছিল পুরো এক মাস আগে, গত ২২ এপ্রিল। এরপর দুই পক্ষ আর আলোচনার টেবিলে বসেনি। এতে আলোচনায় বড় ধরনের অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে, ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় দোনবাসের যুদ্ধ পরিস্থিতিকে ‘অত্যন্ত জটিল’ বলে বর্ণনা করেছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। কারণ, গত কয়েকদিন ধরে স্লোভিয়ানস্ক ও সেভেরোডোনেটস্কে ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে রুশ বাহিনী। কিয়েভসহ ইউক্রেনের অনেক জায়গায় থেকে পিছু হটে এখন সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে হামলা বাড়িয়েছে রাশিয়ার সেনারা। এর মধ্যে লুহানস্ক ও দোনেৎস্ক অন্যতম। কামান ও বিমান থেকে হামলা চালানো হচ্ছে। হামলায় অসামরিক স্থাপনা ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করছে জেলেনস্কির সরকার। এই পরিস্থিতিতে এলাকা ছেড়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষে। এদিকে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে দোনবাসের বিভিন্ন দিক থেকে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ছে ইউক্রেনীয় যোদ্ধারা। দোনবাসের পরিস্থিতি নিয়ে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ‘রাশিয়া হামলা চালিয়ে গেলেও প্রতিহত করছে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী। আমাদের প্রতিরোধ যোদ্ধারা রাশিয়াকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। আমরা বিজয়ের লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছি’।

 

আরও পড়ুন: আলাস্কা বৈঠকের পর জেলেনস্কি-ন্যাটো নেতাদের ফোন ট্রাম্পের

আরও পড়ুন: থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সংঘর্ষ: ভারতীয়দের জন্য সতর্কতা জারি কেন্দ্রের 

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

‘কূটনীতি দিয়ে যুদ্ধ শেষ হবে’- সুর নরম জেলেনস্কির

আপডেট : ২২ মে ২০২২, রবিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, কেবল কূটনীতির মাধ্যমেই ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ হতে পারে। কিয়েভ ও মস্কোর মধ্যে আলোচনার অচলাবস্থার মধ্যে সুর নরম করে এমন মন্তব্য করলেন জেলেনস্কি। ইউক্রেনের একটি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেন, ‘যুদ্ধে রক্তারক্তি হবে, লড়াই হবে। তবে এর শেষ হবে কেবল কূটনীতির মাধ্যমে। কিন্তু কাজটি খুব সহজ নয়। কারণ, কোনও পক্ষই ছাড় দিতে রাজি নয়’। তিনি বলেন, ‘ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে আলোচনার মাধ্যমেই এ লড়াইয়ের ভবিষ্যত স্থির হবে। মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে নাকি তাদের ছাড়া, গোষ্ঠীগতভাবে নাকি প্রেসিডেন্ট পর্যায়ে- কীভাবে সেই আলোচনা হবে তা আমি জানি না। তবে সমাধান আলোচনার মাধ্যমেই হবে’। বিস্তারিত উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘এমন কিছু জিনিস আছে যেগুলো কেবল আলোচনার টেবিলেই সমাধান হতে পারে। আমরা চাই, আগে যেমন ছিল, সব সেভাবে ফিরে আসুক। কিন্তু রাশিয়া তাতে সম্মত নয়’। জেলেনস্কির মতে, আলোচনায় নানা বিষয় থাকতে পারে, তবে ইউক্রেনের জন্য তা ন্যায্য হতে হবে। রাশিয়ার সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হবে, উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিরাপত্তা গ্যারান্টি হিসেবে এটি ইউক্রেনের বন্ধু এবং অংশীদারদের দ্বারাও স্বাক্ষরিত হবে। তিনি এ সময় কিয়েভের শর্তের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, মারিপলের আজভস্টল স্টিলওয়ার্কে যারা লড়াই করেছিল, সেসব ইউক্রেনীয় সেনাকে রাশিয়া হত্যা করতে পারবে না। এর আগে গত মঙ্গলবার কিয়েভের প্রধান আলোচক মিখাইলো পোদোলিয়াক বলেছিলেন, ‘আলোচনা স্থগিত রয়েছে। পরদিন বুধবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ আলোচনায় অচলাবস্থার জন্য ইউক্রেন সরকারকে দোষারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘আলোচনা আসলেই এগোচ্ছে না, কারণ ইউক্রেনীয় আলোচকদের ইচ্ছার সম্পূর্ণ অভাব লক্ষ্য করছি’। লড়াইয়ের সমাপ্তি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে শেষ বৈঠকটি হয়েছিল পুরো এক মাস আগে, গত ২২ এপ্রিল। এরপর দুই পক্ষ আর আলোচনার টেবিলে বসেনি। এতে আলোচনায় বড় ধরনের অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে, ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় দোনবাসের যুদ্ধ পরিস্থিতিকে ‘অত্যন্ত জটিল’ বলে বর্ণনা করেছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। কারণ, গত কয়েকদিন ধরে স্লোভিয়ানস্ক ও সেভেরোডোনেটস্কে ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে রুশ বাহিনী। কিয়েভসহ ইউক্রেনের অনেক জায়গায় থেকে পিছু হটে এখন সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে হামলা বাড়িয়েছে রাশিয়ার সেনারা। এর মধ্যে লুহানস্ক ও দোনেৎস্ক অন্যতম। কামান ও বিমান থেকে হামলা চালানো হচ্ছে। হামলায় অসামরিক স্থাপনা ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করছে জেলেনস্কির সরকার। এই পরিস্থিতিতে এলাকা ছেড়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষে। এদিকে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে দোনবাসের বিভিন্ন দিক থেকে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ছে ইউক্রেনীয় যোদ্ধারা। দোনবাসের পরিস্থিতি নিয়ে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ‘রাশিয়া হামলা চালিয়ে গেলেও প্রতিহত করছে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী। আমাদের প্রতিরোধ যোদ্ধারা রাশিয়াকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। আমরা বিজয়ের লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছি’।

 

আরও পড়ুন: আলাস্কা বৈঠকের পর জেলেনস্কি-ন্যাটো নেতাদের ফোন ট্রাম্পের

আরও পড়ুন: থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সংঘর্ষ: ভারতীয়দের জন্য সতর্কতা জারি কেন্দ্রের